• পাকিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর
  • " />

     

    বাবরের ১২২, রিজওয়ানের ৭৩*, দুজনের রেকর্ড জুটিতে ২০৩ পেরিয়ে গেল পাকিস্তান

    বাবরের ১২২, রিজওয়ানের ৭৩*, দুজনের রেকর্ড জুটিতে ২০৩ পেরিয়ে গেল পাকিস্তান    

    তৃতীয় টি-টোয়েন্টি, সেঞ্চুরিয়ন (টস- পাকিস্তান/ ফিল্ডিং)
    দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৩/৫, ২০ ওভার (মার্করাম ৬৩, মালান ৫৫, ভ্যান ডার ডুসেন ৩৪*, নওয়াজ ২/৩৮, ফাহিম ১/৩৭) 
    পাকিস্তান- ২০৫/১, ১৮ ওভার (বাবর ১২২, রিজওয়ান ৭৩*, লিজাদ ১/৩৪, লিন্ডে ০/৩৮) 
    পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী 


    বাবর আজমের ৫৯ বলে ১২২, মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৪৭ বলে অপরাজিত ৭৩, দুজনের ১৯৭ রানের রেকর্ড ওপেনিং জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্যকে রীতিমত ছেলেখেলা করেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাত্র দ্বিতীয়বারের মত পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো দল করেছিল ২০০-পেরুনো স্কোর, তবে অধিনায়ক বাবর আজমের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিতে ভর করে অনায়াসে নিজেদের সর্বোচ্চ রানতাড়ার রেকর্ড গড়ে ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান, সিরিজে এগিয়ে গেছে ২-১ ব্যবধানে। বাবর-রিজওয়ানের জুটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রানতাড়ায় সর্বোচ্চ, যে কোনো উইকেটে পাকিস্তানের হয়েও সর্বোচ্চ।
     
    জিততে হলে ভাঙতে হত এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেই গড়া নিজেদের রানতাড়ার রেকর্ড, তবে আগের ম্যাচেই মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে যাওয়া পাকিস্তানের পক্ষে হয়ত বাজি ধরেননি খুব বেশি মানুষ। ওই ম্যাচে বাবর ফিফটি করেছিলেন ৪৯ বলে, এবার সেঞ্চুরিই করলেন সমানসংখ্যক বলে! সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজে সিরিজসেরা হওয়া ফাখার জামান থাকতেও এই সিরিজে ওপেন করার সিদ্ধান্ত নেওয়াতে বাবরকে এক হাত নিতেও দেরি করেনি সমালোচকরা। সমালোচনার জবাব দিতে যে বাবরের মত খেলোয়াড়রা সময় নেন না, সেটি দেখালেন আরেকবার। এদিনই ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছেন, সাথে আছেন এই বছর টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ স্কোরার। দুইয়ে মিলে যে আত্মবিশ্বাস, শুরু থেকেই সেটিরই প্রতিফলন ছিল তাদের ব্যাটে। 

    মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গী করে পাওয়ারপ্লেতে বিউরান হেন্ডরিকস- জর্জ লিন্ডেদের উপর চড়াও হয়ে দুজন তোলেন ৬৪ রান। আগের ম্যাচে ধীরগতির ব্যাটিং ভুলে বাবর এবার ফিফটি করেছেন ২৭ বলে। প্রথম ১০ ওভারেই ১০১ রান তুলে ফেলেছিল পাকিস্তান। 
     
    রিজওয়ান অপর প্রান্তে যোগ্য সঙ্গী হয়েই ছিলেন, সাধারণত আক্রমণের দায়িত্বে থাকলেও এদিন তিনি বাবরের অসাধারণ স্ট্রোকপ্লের দর্শক হয়েই বোধহয় থাকতে পছন্দ করছিলেন। বাজে বল পেলে যোগ্য জবাব তো দিয়েছেনই, প্রান্ত বদল করে বাবরকেও স্ট্রাইক দিয়ে গেছেন নিপুণভাবে, ফিফটি পূরণ করেছেন ৩০ বলে। তবে এই দিনটিতে রিজওয়ানের অমন ইনিংসও চলে গেছে দ্বিতীয় কাতারে, বোলিংয়ে যেই আসুক না কেন, কাউকেই যে রেহাই দেননি বাবর। ম্যাচ জিততে হলে যে নিজের রেকর্ডটাও ভাঙতে হবে সেটা হয়ত তার মাথায় ছিল, নিজের আগের সর্বোচ্চ ৯৭* ছাড়িয়ে বাবর মাত্র ৪৯ বলেই পূর্ণ করেছেন সেঞ্চুরি। 

    জয়ের বন্দরে এসে লিজাদ উইলিয়ামসের বাউন্সারে উইকেটের পিছনে হেইনরিখ ক্লাসেনের হাতে তালুবন্দি হয়ে ফিরেছেন, তার আগে ১৫ চার আর ৪ ছয়ে ৫৯ বলে খেলেছেন ১২২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। রিজওয়ান দুর্দান্ত ফর্ম বজায় রেখে ম্যাচ শেষ করে তবেই ফিরেছেন, ৫ চার আর দুই ছয়ে ৪৭ বলে তিনি করেছেন ৭৩ রান। 
     
    এর আগে সেঞ্চুরিয়নে শুরুটা অবশ্য মোটেও ভাল হয়নি পাকিস্তানের, তাদের পেসারদের ওপর চড়াও হয়ে জানেমান মালান আর এইডেন মার্করাম মিলে ওপেনিং জুটিতে তুলেছিলেন ১০৮ রান। দুজনই হয়েছেন একমাত্র স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজের শিকার- ফেরার আগে দারুণ এক সিরিজ কাটানো মার্করাম করেছিলেন ৩১ বলে ৬৫ আর মালান করেছেন ৪০ বলে ৫৫ রান।  

    এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও দক্ষিণ আফ্রিকার ঝড়োগতি থামেনি। জর্জ লিন্ডের ১১ বলে ২২ রানের ক্যামিওর পর রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের ২০ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে ২০০ পার করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। 

    তখন কে জানত, এদিন সেটিও যথেষ্ট হবে না তাদের জন্য।