নাটক আর রোমাঞ্চের পর কানপুরে 'জিতল' ক্রিকেট
ভারত ৩৪৫ ও ২৩৪-৭
নিউজিল্যান্ড ২৯৬ ও ১৬৫-৯
ফলঃ ম্যাচ ড্র
এরকম অদ্ভুত দৃশ্য ক্রিকেট সম্ভবত আগে দেখেনি। প্যাটেল (আয়াজ) ঠেকিয়ে দিচ্ছেন প্যাটেলকে (আক্সার)। রবীন্দ্র (রাচিন) ঠেকিয়ে দিচ্ছেন আরেক রবীন্দ্রকে (জাদেজাকে)। একটা উইকেট দরকার ছিল ভারতের, সেটাই তারা নিতে পারল না। শেষ পর্যন্ত কানপুরে ড্র হলো ভারত-নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। তবে টুইটারে সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা বলছেন, এই ম্যাচে আসলে জিতেছে ক্রিকেট, নির্দিষ্ট করে বললে টেস্ট ক্রিকেট।
রাচিন রবীন্দ্রের ডেব্যু হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সফরে। বাবা রবি কৃষ্ণমূর্তি সফটওয়্যার প্রকৌষলী, নব্বই দশকের দিকে আড়ি জমান নিউজিল্যান্ড। ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অন্যরকমের। ছেলের নাম রেখেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়ের নামের প্রথম অংশ থেকে রাচিন। এই দুই গ্রেটের নাম কানপুরে খুব ভালোমতোই রেখেছেন রাচিন। জন্মভূমি না হলেও পূর্বপুরুষের ভূমি হওয়ার সুবাদে ভারতে আসা হতো প্রায়ই। অন্ধ প্রদেশে নিয়মিত ক্লাব ক্রিকেটও খেলে গেছেন রাচিন। স্পিনের বিপক্ষে তার সেই অভ্যাসটাই কাজে এসে গেল কানপুরে। একটা সময় মনে হচ্ছিল, ভারতের জয় সময়ের ব্যাপার। শেষ উইকেট যখন নিউজিল্যান্ডের, তখনও খেলতে হবে ১১ ওভার। রাচিন চীনের দেয়াল হয়ে ঠেকিয়ে গেছেন বল। ৯১ বলে ১৮ রানের ইনিংসটা এমনিতে আহামরি কিছুই নয়। তবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট মনে রাখবে, এই ইনিংস দিয়েই ভারতকে তাদের মাটিতে টানা ১২ ম্যাচ জিততে দেয়নি। মনে রাখবে, নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দশ টেস্টে হারেনি এই ইনিংসের জন্যই।
আরও কয়েকজনের কথা না বললে ভুল হবে। আয়াজ প্যাটেলের পুর্বপুরুষও ভারতের। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার কাছ থেকে খুব বেশি কিছু চাওয়ার ছিল না দলের। সেটা মিটিয়েছেন ২৩ বল খেলে পার করে দিয়ে। এর আগের কৃতিত্বটা টম ল্যাথামের। যিনি ভারতের মাঠে আগেও দেখিয়েছেন, কেন স্পিনের বিপক্ষে তিনি উপমহাদেশের বাইরে এই মুহূর্তে সেরাদের একজন। আরেকজন নাইটওয়্যাচম্যান উইলিয়াম সমারভিলকে নিয়ে সকালের সেশনটা প্রায় পার করে ফেলেছিলেন দুজন। কেন উইলিয়ামসনও অনেকটা সময় পার করে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মনে হচ্ছিল অশ্বিন-জাদেজাদের স্পিনের কাছে সেটা যথেষ্ট হবে না।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দেখাল কেন তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। দেখাল, দাঁতে দাঁত চেপে কীভাবে লড়াই করা যায়, কীভাবে হারার আগে হার না মানা যায়।