• আইপিএল
  • " />

     

    বোলারদের উৎসবের দিনে ডু প্লেসির মুখে জয়ের হাসি

    বোলারদের উৎসবের দিনে ডু প্লেসির মুখে জয়ের হাসি    

    বেঙ্গালুরু-কলকাতা, মুম্বাই (টস-বেঙ্গালুরু/ফিল্ডিং)
    কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১২৮, ১৮.৫ ওভার (রাসেল ২৫, উমেশ ১৮, বিলিংস ১৪, হাসারাঙ্গা ৪/২০, দ্বীপ ৩/৪৫, হার্শাল ২/১১)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর- ১৩২/৭, ১৯.২ ওভার (রাদারফোর্ড ২৮, শাহবাজ ২৭, উইলি ১৮, সাউদি ৩/২০, উমেশ ২/১৬, নারাইন ১/১২)
    ফলাফল: বেঙ্গালুরু ৩ উইকেটে জয়ী

     

    নতুন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি প্রথম ম্যাচে রানের পাহাড় গড়ে জয় পাননি। মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে এদিনও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা-হার্শাল পাটেলদের বোলিং দাপটে কলকাতাকে অল্প রানেই আটকে ফেললেও আরও একবার তীরে এসে তরী ডুবতে বসেছিল তাদের। টিম সাউদি-উমেশ যাদবদের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে দীনেশ কার্তিক-হার্শাল জুটি ঠান্ডা মাথায় প্রতিহত করেছেন সেসব সম্ভাবনা; এনে দিয়েছেন মৌসুমে বেঙ্গালুরুর প্রথম জয়।  

     

    ওয়ান্ডার ওয়ানি

    আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলার নিজেকে প্রমাণ করতে বেশি সময় নিলেন। দাপুটে জয় দিয়ে শুরু করা কলকাতাকে একেবারে মাটিতে নামিয়ে আনলেন দারুণ বোলিংয়ে। ৩ উইকেট হারিয়ে কলকাতা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখনই বল হাতে নিয়ে কলকাতা অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে টোপ দিয়ে ফেরালেন। পরের ওভারে তো হানলেন জোড়া আঘাত। হাত খুলতে শুরু করা সুনীল নারাইনকে ফেরানোর পরের বলেই দুর্দান্ত এক গুগলিতে উপড়ে ফেলেন রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় থাকা শেল্ডন জ্যাকসনের স্টাম্প। শেষ ওভারে এসে টিম সাউদিকে ফিরিয়েই করলেন রেকর্ড: আইপিএলের ইতিহাসে বেঙ্গালুরুর হয়ে কোনও বিদেশি বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার, ৪-০-২০-৪।

    তবে হাসারাঙ্গাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তরুণ আকাশ দ্বীপ ও হার্শাল। শুরুটা করেছিলেন দ্বীপ; ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও নিতিশ রানাকে ফিরিয়ে। মাঝে তিনি কিছুটা খরুচে হলেও অন্য প্রান্তে হার্শাল ছিলেন মারাত্মক কিপটে। স্যাম বিলিংসের পর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা আন্দ্রে রাসেলকে ফিরিয়ে যখন স্পেল শেষ করলেন তখন তাঁর বোলিং ফিগার বলছে: ৪-২-১১-২! শুরুর পর উমেশ যাদবকে ফিরিয়ে শেষটাও তাই দারুণভাবে করতে পেরেছেন দ্বীপ।

    উমেশ-সাউদি-নারাইনদের হাল না ছাড়া বোলিং

    লক্ষ্য যখন মনে হচ্ছিল খুবই সোজা তখনই সেটা ভুল প্রমাণ করে বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেন শ্রেয়াসের যোগ্য নেতৃত্বে নিজেদের মেলে ধরা বোলাররা। প্রথম ওভারেই উমেষের আঘাতে অনুজ রাওয়াত ফেরার পরের ওভারে সাউদির আঘাতে ফিরে যান ডু প্লেসি। এক বল পরেই উইকেটের পিছে ভিরাট কোহলিকে তালুবন্দি করিয়ে তো উমেশ কলকাতা শিবিরে জয়ের পূর্ণ আত্মবিশ্বাস জোগান। পরে ডেভিড উইলি, শারফেন রাদারফোর্ড, শাহবাজ আহমেদরা ইনিংস মেরামত করলেও তাদের ইনিংস এগিয়েছে একেবারেই মন্থর গতিতে। আর সেটার কারিগর তো নারাইনই। ১৮ রানে থাকা উইলিকে ফেরানোর পাশাপাশি মাঝের ওভারগুলোতে স্পেল সম্পন্ন করে রান গুনেছিলেন মোটে ১২!  সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়েই ফিরে এসে এক ওভারেই সাউদি ফিরিয়েছিলেন ২৮ রানে থাকা রাদারফোর্ড ও হাসারাঙ্গাকে।

    অলরাউন্ডার হার্শাল, ফিনিশার কার্তিক

    ১৮তম ওভারে সাউদি যখন জোড়া আঘাত হানলেন তখন মনে হচ্ছিল বেঙ্গালুরুর বোধহয় আবারও বলতে হবে, “এতো কাছে তবু এতো দূর!” তবে বল হাতে কারিশমা দেখানো হার্শালের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন; সাথে তো ছিলেনই বহু বছর ধরে কিছুটা নিভৃতেই ফিনিশারের  দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করে যাওয়া কার্তিক। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। তবে ম্যাচের পাল্লা কলকাতার দিকে ঘুরে যাওয়ায় বোলারদের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। তবে এই দুই ওভারের কন একটিতে যে কোনও বিশেষজ্ঞ বোলার বল করতে পারছেন না সেই হিসাব দুজনেই কষে ফেলেছিলেন। ১৯তম ওভারে তাই ভেঙ্কটেশ আইয়ার বল হাতে নিলে ঠিকই দুটো চার মেরে দেন হার্শাল। পরের ওভারের প্রথম দুই বলেই ছয়-চারে এরপর আনুষ্ঠানিকতা সারেন কার্তিক।