• আইপিএল
  • " />

     

    হেজলউডের তোপে জয় দিয়ে সেঞ্চুরি মিসের দুঃখ মোচন ডু প্লেসির

    হেজলউডের তোপে জয় দিয়ে সেঞ্চুরি মিসের দুঃখ মোচন ডু প্লেসির    

    লক্ষ্ণৌ-বেঙ্গালুরু, মুম্বাই (টস-লক্ষ্ণৌ/ফিল্ডিং)
    রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু- ১৮১/৬, ২০ ওভার (ডু প্লেসি ৯৬, শাহবাজ ২৬, ম্যাক্সওয়েল ২৩, হোল্ডার ২/২৫, চামিরা ২/৩১, ক্রুনাল ১/২৯)
    লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস- ১৬৩/৮, ২০ ওভার (ক্রুনাল ৪২, রাহুল ৩০, স্টইনিস ২৪, হেজলউড ৪/২৫, হার্শাল ২/৪৭, ম্যাক্সওয়েল ২/১১)
    ফলাফল: বেঙ্গালুরু ১৮ রানে জয়ী

     

    স্কোর দেখে আপনার মনে হতেই পারে ম্যাচে বোধহয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। ১৮২ রানের লক্ষ্যে লক্ষ্ণৌকে ম্যাচের কোনও সময়েই অবশ্য সেই অর্থে মনে হয়নি জয়ের পথে আছে। লোকেশ রাহুল-ক্রুনাল পান্ডিয়া জুটি যখন উইকেটে ঘাটি গেড়ে বসেছিল তখন হয়ত বেঙ্গালুরুকে কিছুটা চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল এই জুটি। তবে লক্ষ্ণৌ’র ইনিংসে শুরুতেই ফাটল ধরানোর পর শেষে এসেও জশ হেজলউড একইভাবে নিজেকে মেলে ধরলেন; ওই জুটির বিদায়ের পরে বেঙ্গালুরুও তাই ম্যাচ জিতে নিয়েছে সহজেই। তবে এই লড়াইয়ের সেই পুঁজির জন্য বেঙ্গালুরু আজ ধন্যবাদ দিতেই পারে তাদের অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে। ত্রিশও যেখানে ছুঁতে পারেনি দলের আর কেউ সেখানে ডু প্লেসি চার রানের জন্য ছুঁতে পারেননি সেঞ্চুরি। অধিনায়ক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলে যে দল আরও অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে তার প্রমাণ তো আজ হাড়েহাড়ে টের পেল লক্ষ্ণৌ।

     

    হোল্ডারের দারুণ স্পেল ছাপিয়ে ফ্যাবুলাস ফাফ

    প্রথম ওভারেই দুশমন্থ চামিরা টানা দুই বলে যখন অনুজ রাওয়াত ও ভিরাট কোহলিকে ফেরালেন তখন ঘোর বিপদের আশঙ্কা বেঙ্গালুরু শিবিরে। শেষ যেবার গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়েছিলেন কোহলি সেবার ৪৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরু; সেই আশঙ্কাও যে বেঙ্গালুরু ম্যানেজমেন্টের মনের কারও ঈশান কোণে উঁকি দেয়নি সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। তবে বিপদে মাঠা ঠাণ্ডা রাখার ক্ষমতা যে বেঙ্গালুরুর নতুন অধিনায়কের আছে সেটাও লক্ষ্ণৌ ভালই জানত। ডু প্লেসি তাই এক প্রান্তে নিশ্চুপ থাকলেও স্বস্তিতে ছিল না লক্ষ্ণৌ। তার একটা বড় কারণ হ্যাটট্রিকের সন্ধানে পরের ওভার করতে আসা চামিরার ওপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল চড়াও হয়ে ১৯ রান বের করা। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে অবশ্য জেসন হোল্ডারের দুর্দান্ত ক্যাচে ক্রুনালের শিকার হয়ে ১১ বলে ২৩ রানেই থামেন ম্যাক্সওয়েল। ডু প্লেসি তখনও এগিয়ে যাচ্ছেন গুটি গুটি পায়ে। বল হাতে নিয়ে হোল্ডার প্রথম ওভারেই সুয়াশ প্রভুদেসাইকে ফেরানোর পর ক্রুনালের সাথে জুটি গড়ে কোণঠাসা করে রাখেন ডু প্লেসি-শাহবাজ আহমেদ জুটিকে। ফিফটি ছুঁতে ডু প্লেসিকে তাই খেলতে হয় ৪০ বল। ফিফটির পর ডু প্লেসি হাত খুললেও একেবারেই স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না শাহবাজ। শেষদিকে দীনেশ কার্তিক এসে অবশ্য বাউন্ডারি বের করেছিলেন ডু প্লেসির সাথে হাত মিলিয়ে। হোল্ডার শেষ ওভার করতে আসার আগে ডু প্লেসি ৯৪ রান, আশা দেখছেন প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরির। ওই ওভারে মার্কাস স্টইনিস ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে কার্তিকের ক্যাচ ফেলে দেওয়ার দুই বল পরে ওখানেই ক্যাচ দেন ডু প্লেসি! তাও আবার সেই ৯৬ রানে, যেটা এতদিন ছিল তার আইপিলে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
     
    শুরুতে হেজলউড, শেষেও হেজলউড

    টেস্টে হেজলউডের জুড়ি মেলা বর্তমান ক্রিকেটে ভার। তবে তিনি যে তিন ফরম্যাটেই সমর্থ সেটার প্রমাণ তো তিন ফরম্যাটেই আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে দশের মাঝে তার অবস্থান। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে অবশ্য হেজলউড বেঁছে  নিলেন লাল বলের লাইন লেংথ। তাতেই পর্যুদস্ত কুইন্টন ডি কক ও মানিশ পান্ডে।  ক্রুনালকে নিয়ে এরপর রাহুল অবশ্য ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেও হার্শালের স্লোয়ারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে যখন ৩০ রানে ফিরলেন তখনই যেন জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করে বেঙ্গালুরু। অবশ্য এরপর ক্রুনাল যেভাবে প্রতি আক্রমণ শুরু করেন তাতে স্পিনারদের ব্যবহার করা নিয়ে দুবার ভাবতে হয়েছে ডু প্লেসিকে। ক্রুনালের ২৮ বলে ৪২ রানের ইনিংস অবশ্য থামিয়েছেন দুই ওভারের জন্য হাত ঘোরাতে আসা ম্যাক্সওয়েল। শেষদিকে যেই দুজন ম্যাচ বের করে ফেলতে পারতেন সেই আয়ুশ বাদোনি ও মার্কাস স্টইনিস দুজনেই নতি স্বীকার করেন নিজের শেষ স্পেল করতে আসা হেজলউডের চতুর বোলিংয়ের কাছে। শেষ দিকে যেয়ে হেজলউড মেলে বসেছিলেন নাকল বল সহ আরও স্লোয়ারের পসরা। তাতেই জয় তুলে নিয়ে বেঙ্গালুরুও উঠে গিয়েছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে।