• আইপিএল
  • " />

     

    কুলদিপের বিষাক্ত স্পিন, মোস্তাফিজের শেষ ওভারের জাদুর পর ওয়ার্নার-পাওয়েলে দিল্লির স্বস্তির জয়

    কুলদিপের বিষাক্ত স্পিন, মোস্তাফিজের শেষ ওভারের জাদুর পর ওয়ার্নার-পাওয়েলে দিল্লির স্বস্তির জয়    

    দিল্লি-কলকাতা, ওয়াঙ্খেড়ে (টস-দিল্লি/বোলিং)
    কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৪৬/৯, ২০ ওভার (রানা ৫৭, শ্রেয়াস ৪২, রিঙ্কু ২৩, কুলদিপ ৪/১৪, মোস্তাফিজুর ৩/১৮, সাকারিয়া ১/১৭)
    দিল্লি ক্যাপিটালস- ১৫০/৬, ১৯ ওভার (ওয়ার্নার ৪২, পাওয়েল ৩৩৮, অক্ষর ২৪, উমেশ ৩/২৪, নারাইন ১/১৯, রানা ১/২৪)
    ফলাফল: দিল্লি ৪ উইকেটে জয়ী

     

    বেশ কয়েক ম্যাচেই ভাল বল করে রানের চাকা দমিয়ে রাখায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও মোস্তাফিজুর রহমানের  উইকেটের দেখা মিলছিল না সেই অর্থে। দিল্লির বিতর্ক পেছনে ফেলে পুরো দলই এদিন জ্বলে উঠলো, জ্বলে উঠলেন মোস্তাফিজও। কুলদিপ যাদবের দুর্দান্ত স্পেলের পরও নিতিশ রানা, রিঙ্কু সিং উইকেটে থিতু হয়ে শেষ ওভারে যখন ঝড় তোলার চিন্তা করছিলেন তখন শেষ ওভারে ওই দুজনকে ফেরান মোস্তাফিজ; পুরো ওভারে দুই রান দিয়ে পান আরও একটি উইকেট। মোস্তাফিজ-কুলদিপরা কলকাতাকে মনমত সংগ্রহ না পেতে দেওয়ার পর ডেভিড ওয়ার্নার শুরুটা করেছিলেন দারুণ। মাঝে পা হড়কালেও এদিন আর কোনও বিতর্কিত মুহূর্তের সম্মুখীন হতে হয়নি দিল্লিকে। মাচও শেষ করে এসে রভম্যান পাওয়েলও যেন আগের সেই ম্যাচের খায়েশ কিছুটা হলেও মিটিয়েছেন।

     

    কুলদিপের স্পিন জাল, ফিজের ফন্দিতে বন্দী কলকাতা

    বল হাতে দারুণ এক দিনের সুচনা হয়েছিল দিল্লির হয়ে অভিষিক্ত চেতন সাকারিয়ার হাত ধরে। মোস্তাফিজের সাথে রাজস্থানে জুটি গড়া সাকারিয়া এবার দিল্লির হয়ে নতুন বল হাতে জুটি গড়েন; মোস্তাফিজের প্রথম ওভারে মোটে ২ রান এলে সেটার সুযোগ নিয়ে নিজের প্রথম ওভারেই এরপর অ্যারন ফিঞ্চকে ফেরান তিনি। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজ ৫ রান গুনলে এর আগে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে ফেরানো কলকাতা তুলতে পারে ২৯ রান। দৃশ্যপটে এরপরই আবর্তন কুলদিপের। ৮ম ওভারে প্রথম বল হাতে নিয়েই টানা দুই বলে ফেরান বাবা ইন্দ্রজিত ও সুনীল নারাইনকে। নিতিশ রানাকে নিয়ে এরপর যখন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ইনিংস মেরামতের কাজ করছিলেন তখন উইকেট না মিললেও দিল্লি চেপে বসেছিল কলকাতার ওপর। কাঙ্খিত সেই উইকেটের দেখা মিল ১৪তম ওভারে; হন্তারক আবারও কুলদিপ। ৩৭ বলে ৪২ রানে থাকা শ্রেয়াসকে ফেরানোর দুই বল পরেই  আন্দ্রে রাসেলকে কুলদিপ ফেরান রানের খাতা খোলার আগেই। ওই ওভার শেষে ৮৫ রানে ৬ উইকেটে থাকা কলকাতাকে এরপর উদ্ধার করেন নিতিশ রানা ও রিঙ্কু সিং। ৩০ বলে ফিফটি পূর্ণ করে শেষ ওভারে দলীয় সংগ্রহ আরও বড় করবেন বলেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রানা। তাতে বাঁধ সেধে সকল পরিকল্পনা ভেস্তে দিলেন মোস্তাফিজ। ১৬ বলে ২৩ রানে থাকা রিঙ্কু সিংকে ফেরানোর এক বল পরেই  সাকারিয়ার দুর্দান্ত ক্যাচে তিনি থামান ৩৪ বলে ৫৭ রানে থাকা রানাকে। ঠিক পরের বলেই নিখুঁত এক ইয়র্কারে টিম সাউদির স্টাম্প উড়িয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন মোস্তাফিজ। সেটা না পাওয়া হলেও ওভারে মোটে ২ রান দিয়ে ওই ৩ উইকেট তুলে নিয়ে কলকাতার আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরিয়েছিলেন মোস্তাফিজ সফলভাবেই।

    ওয়ার্নারের পর অক্ষরের সময়োপযোগী ইনিংস, পাওয়েলের মারকুটে ফিনিশিং

    প্রথম বলেই ফিরতি ক্যাচে পৃথ্বী শকে উমেশ যাদব ফেরানোর পরের ওভারে হার্শিত রানা ফেরান মিচেল মার্শ। সেসবের তোয়াক্কা না করে আক্রমণাত্মকভাবে খেলেই ওয়ার্নার পাওয়ারপ্লেতে দলকে নিয়ে যান ৪২ রানে। নিতিশ রানা ৯ম ওভারে বোলিংয়ে এলে তাকে টানা তিন চারে স্বাগত জানান ওয়ার্নার-ললিত জুটি। ২৬ বলে ৪২ রানে থাকা ওয়ার্নারকে পরের ওভারেই এসে ফেরান উমেশ। পরের ওভারে ২২ রানে নারাইনের শিকার হয়ে ললিত ফিরলে পরের বলেই ঋশাভ পান্টকে ফেরান উমেশ; দুর্দান্ত এক স্পেলে দিল্লিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেন তিনি। তবে প্রতি আক্রমণ করে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর পাটেল। শ্রেয়াসের দারুণ থ্রোতে অবশ্য ২৪ রানেই রান আউট হয়ে থামতে হয় অক্ষরকে। তবে আগেরবারের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতেই যেন মুখিয়ে ছিলেন অন্য প্রান্তে থাকা পাওয়েল। ১৬ বলে ৩৩* রানে অপরাজিত থেকে এক ওভার আগেই খেলা শেষ করে সেটাই করে দেখান পাওয়েল।