• ভারতের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    সুযোগ হাতছাড়ার পর পান্ট-শ্রেয়াসের 'ওয়ানডে' ব্যাটিংয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

    সুযোগ হাতছাড়ার পর পান্ট-শ্রেয়াসের 'ওয়ানডে' ব্যাটিংয়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ    

    ২য় টেস্ট, মিরপুর
    বাংলাদেশ- ২২৭ ও ৭/০, ২য় ইনিংস (শান্ত ৫*, জাকির ২*)
    ভারত- ৩১৪, ১ম ইনিংস (পান্ট ৯৩, শ্রেয়াস ৮৭, কোহলি ২৪, তাইজুল ৪/৭৪, সাকিব ৪/৭৯, তাসকিন ১/৫৮)
    ২য় দিন, স্টাম্পস

     

    দিনের শুরুটা বাংলদেশের জন্য দারুণ হলেও সুযোগ পায়ে ঠেলেছে তারা নিজেরাই। ভারতীয় ব্যাটারদের যেন জীবন বিলানোর উদারতা পেয়ে বসেছিল সাকিব আল হাসানের দলকে। সেটার পূর্ণ সুযোগ নিয়ে ভারত এখন টেস্টের চালকের আসনে। ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ১৫৯ রানের জুটি গড়ে ভারতকে টেস্ট জয়ের পথে এগিয়ে নিয়েছেন শ্রেয়াস আইয়ার-ঋষাভ পান্ট জুটি।  

    এই জুটি উইকেটে আসার আগে অবশ্য ভারত শিবিরে দেখা দিয়েছিল বিপদের ঘনঘটা। ১৩তম ওভারে তাইজুলের বলে বেরিয়ে এসে রক্ষণাত্মক শট খেলতে গিয়ে পরাস্ত হয়ে স্টাম্প খুইয়ে ১০ রানে ফিরে যান ভারত অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলেই শবমান গিলকে ২০ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। দুই ওপেনারকে হারানোর পর জুটি গড়ে ভারতের ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন চেতেশ্বর পুজারা-ভিরাট কোহলি জুটি। সেই চেষ্টার পথেই টেস্টে ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন পুজারা। সেই আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাইজুল। শর্ট লেগে মুমিনুল হকের দারুণ ক্যাচে তাইজুলের শিকার হয়ে ২৪ রানেই থামেন পুজারা। লাঞ্চের ঠিক আগের বলেই ভুল বোঝাবুঝি সত্ত্বেও রান আউট হওয়া থেকে কোহলি বেঁচে যাওয়ায় ৮২ রানে ৩ উইকেট হারিয়েই লাঞ্চে যায় ভারত।

    লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই অবশ্য কোহলিকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করে ২৪ রানে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সেখান থেকেই উইকেটে আসা শ্রেয়াসকে নিয়ে প্রতি আক্রমণ শুরু করেন পান্ট। ১৯ রানে থাকার সময় শ্রেয়াসের দেওয়া ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি মিরাজ, সেই ক্যাচ নিতে গিয়েই বল নাকে লেগে অবশ্য ইনজুরির কবলে পড়েছিলেন মিরাজ। সেসবের তোয়াক্কা না করে অন্য প্রান্তে থাকা পান্ট নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে। ৫৯ রানে থাকার সময়ে পান্ট বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে দিলেও বুঝতে পারেননি মুশফিক, ভেতরে এগিয়ে আসায় পরে বল ভেতরেও ঠেলে দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সেবার মিরাজের বলে ছয় পেয়ে যান পান্ট। অন্যদিকে ক্যাচ মিস, সোহানের স্টাম্পিং মিসের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে ৬০ বলে শ্রেয়াসও তুলে নেন নিজের ফিফটি। দুজনে উইকেটে থেকেই ভারতকে ২২৬ রানে নিয়ে গিয়ে চা-বিরতিতে যান।

    বিরতির পরেও আক্রমণের ধারা বজায় রাখতে গিয়েই কাল ঘটে পান্টের। দারুণ খেলতে থাকা পান্ট মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামেন ১০৪ বলে ৯৩ রানের ইনিংসে। টেস্টে ৫ সেঞ্চুরির বিপরীতে এই নিয়ে ৬ষ্ঠ বার নব্বইয়ের ঘরে ফিরলেন পান্ট। পান্তের বিদায়ে আক্রমণের ঝান্ডা নিজে বুঝে নিতে গিয়ে একই পথে হাঁটেন শ্রেয়াস। উইকেটে এসেই ৪ রানে সাকিবের শিকার হয়ে অক্ষর পাটেল ফেরার পর তার কাছে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ১০৪ বলে ৮৭ রান করে থামেন শ্রেয়াস। এরপরে সাকিবের বলে রবিচন্দ্রন আশ্বিন একবার জীবন পেলেও তার আঘাতেই ফেরেন ১২ রানে। শেষের দিকে সজোরে ব্যাট চালাতে থাকা উমেশ যাদবকে ১৪ রানে তাইজুল ফেরানোর পর ৭ রানে সিরাজকে ফিরিয়ে ভারতের ইনিংস গুটিয়ে দেন সাকিব।

    দিনের শেষ ৬ ওভারে এরপর আর কোনও বিপদ ঘটতে দেয়নি নাজমুল হোসেন শান্ত-জাকির হাসান জুটি। তবে দিনশেষে নিজেদের সুযোগ নিতে পারার আক্ষেপটাই হয়তো পোড়াবে বাংলাদেশকে। সেই আক্ষেপ অবশ্য পুষে রাখার সুযোগ নেই, বাংলাদেশকে যে ম্যাচে ফিরতে কালকের দিনটা কাজে লাগানোর বিকল্প নেই।