'সাকিব স্টর্ম' দমিয়ে হৃদয়-জাকিরের সাহসী ব্যাটিংয়ে সিলেটের টানা দ্বিতীয় জয়
গ্রুপ পর্ব, মিরপুর (টস-বরিশাল/ব্যাটিং)
ফরচুন বরিশাল- ১৯৪/৭, ২০ ওভার (সাকিব ৬৭, চতুরঙ্গ ৩৬, আনামুল ২৯, মাশরাফি ৩/৪৮, ওয়াসিম ১/২৭, রাজা ১/৩২)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১৯৬/৪, ১৯ ওভার (হৃদয় ৫৫, শান্ত ৪৮, জাকির ৪৩, চতুরঙ্গ ১/১৪, জানাত ১/১৫)
ফলাফল: সিলেট ৬ উইকেটে জয়ী
মিরপুরে রানের মেলায় হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সিলেট। সাকিব আল হাসানের ঝড়ো ইনিংসে বড় সংগ্রহ পাওয়ার পরেও সেই লক্ষ্য সিলেট উৎরিয়ে গিয়েছে সম্মিলিত ব্যাটিং পারফর্ম্যান্সের বদৌলতে। রানের পাহাড় টপকাতে সিলেটের দুই তরুণ তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসানের আলাদা করে একটা ধন্যবাদ অবশ্য প্রাপ্য।
১৯৫ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় বলেই কলিন অ্যাকারম্যান রান আউটের শিকার হয়ে ফিরলে একেবারেই বিচলিত না হয়ে দুজনে নিজেদের ভূমিকা বুঝে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। শান্ত এক প্রান্ত আগলে রাখলে ৯ রানে জীবন পাওয়া হৃদয় বুঝে নেন আক্রমণের দায়িত্ব। ১২তম ওভারে যখন এই জুটি ভাঙল ততক্ষণে দুজনে মিলে গড়ে ফেলেছেন ৬৮ বলে ১০১ রানের জুটি। ৪৫ রানে জীবন পেয়েও ফিফটির কাছাকাছি এসে ৪০ বলে ৪৮ রানের ইনিংস শেষে রান আউটের শিকার হয়ে শান্ত ফিরলেও সুযোগ হাতছাড়া করেননি হৃদয়। ৩০ বলে ঠিকই ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি।
এক ওভার পরেই ৩৪ বলে ৫৫ রানে করিম জানাতের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে হৃদয় ফিরলে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায় বরিশাল। তবে বরিশালকে স্বপ্ন দেখার সুযোগও দেননি জাকির। ১৩ রানে থাক্তেই মেহেদী হাসান মিরাজ ফেলে দিয়েছিলেন তার ক্যাচ। সুযোগে পেয়েই ১৬তম ওভারে মুশফিকুর রহিমের সাথে জুটি গড়ে ৩ চার ও ১ ছয়ে এবাদত হোসেনের ওভার থেকে দুজনে মিলে নেন ১৯ রান। ১৮তম ওভারে চতুরঙ্গর শিকার হয়ে ফিরলে ম্যাচ জয়ের রাস্তাটা জাকির দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন ৪টি চার ও ৩টি ছয়ে সাজানো ১৮ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে। ১১ বলে ২৩* রানের ইনিংস খেলে মুশফিক ও ৯ বলে ২০* রানের ইনিংসে থিসারা পেরেরা সেই পথে হেটেই ছিনিয়ে এনেছেন সিলেটের টানা দ্বিতীয় জয়।
এর আগে ব্যাটিং নিয়ে বরিশালের শুরুটা হয়েছিল মনমত। ৮ম ওভারে গিয়ে ২১ বলে ২৯ রানে মাশরাফির শিকার হয়ে আনামুল ফিরলে ভাঙে ৬৭ রানের ওপেনিং জুটি। পরের ওভারেই ২৫ বলে ৩৬ রানে চতুরঙ্গ ফেরার পরেই ইফতিখার আহমেদ ফিরলে ভাল শুরু ভেস্তে যাওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সেই সুযোগ সিলেটকে দেননি সাকিব। মাঠে নেমেই নিজের মনোভাব বুঝিয়ে দেন। মাঝে ওয়াইড না দেওয়ায় একবার আম্পায়ারের সাথে বিবাদে জড়িয়েছেন। তবে সেসব পেছনে ফেলে সাকিব কথা বলেছেন ব্যাট দিয়েই।
২৬ বলে চার মেরে যেই ওভারে ফিফটি পূর্ণ করলেন, থিসারার ওই ওভারেই ২টি করে চার ও ছয়ে সাকিব নিয়েছিলেন ২০ রান। ৬৬ রানে মোহাম্মদ আমিরের বলে সুযোগ পাওয়ার পর শেষ ওভারে মাশরাফির শিকার হয়ে শেষ ওভারে সাকিব থেমেছিলেন ৩২ বলে ৬৭ রানের বিদ্ধংসী এক ইনিংসে। তার ইনিংসে চড়েই বরিশাল বড় সংগ্রহ পেলেও দিনশেষে সেই সংগ্রহ আর যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি সিলেটের ব্যাটারদের দারুণ লক্ষ্য তাড়ায়।