ইফতিখার-সাকিব স্টিমরোলারে পিষ্ট রংপুর, এলোমেলো রেকর্ড বই
গ্রুপ পর্ব, চট্টগ্রাম (টস-রংপুর/বোলিং)
ফরচুন বরিশাল- ২৩৮/৪, ২০ ওভার (ইফতিখার ১০০*, সাকিব ৮৯*, মিরাজ ২৪, হাসান ২/৩১, হারিস ২/৪২)
রংপুর রাইডার্স- ১৭১/৯, ২০ ওভার (শামিম ৪৪*, নাওয়াজ ৩৩, নাঈম ৩১, মিরাজ ৩/২৬, ওয়াসিম জুনিয়র ২/৩১, কামরুল ২/২৫)
ফলাফল: বরিশাল ৬৭ রানে জয়ী
সাগরিকায় রেকর্ড বই এলোমেলো করে জয় পেয়েছে বরিশাল। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ৫ম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে সাকিব আল হাসান ও ইফতিখার আহমেদ বরিশালকে এনে দিয়েছিলেন এই আসরের সর্বোচ্চ জুটি। নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ইফতিখার, সেই সাথে সাকিব খেলেছেন নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। দুজনের বদৌলতে রংপুরকে রানের চাপে পিষ্ট করার পর মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, কামরুল ইসলামদের নিয়মিত উইকেটে ম্যাচের কোনও পর্যায়েই জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি রংপুর। তারই ফলশ্রুতিতে বড় জয় দিয়ে বরিশাল ধরে রেখেছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান।
সেই বড় জয় নিয়ে বলতে গেলে শঙ্কা যা একটু জাগতে পারত তা উবে গিয়েছিল রংপুরের ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেই। পাওয়ারপ্লের মাঝেই মিরাজের জোড়া আঘাতের সাথে রান আউটের শিকার হয়ে পাভিলিয়নের পথ দেখলেন সাইম, রনি ও ইমন। ১১তম ওভারের মধ্যেই অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ফেরার পাশাপাশি ১৮ বলে ৩১ রানের আশা জাগানিয়া ইনিংস খেলা নাঈম তো ফিরলেনই, দলের স্কোর বোর্ডও হয়ে দাঁড়াল ৭৮/৬! ম্যাচ যেন সেখানেই কার্যত শেষ। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজের ২৪ বলে ৩৪ রান ও শামিম হোসেনের ২৪ বলে ৪৪* রান কেবল বড় লজ্জার হাত থেকেই রক্ষা করেছে রংপুর।
যেই লজ্জাটা কিন্তু পেতে পারত বরিশাল। ম্যাচের প্রথম পাওয়ারপ্লের পর কেইবা ভেবেছিল এরকম হেসেখেলে জিতবে বরিশাল! পাওয়ারপ্লের মধ্যেই যে হাসান মাহমুদ ও হারিস রউফের আগুনে স্পেলে ঘরে ফিরেছেন আনামুল, জাদরান, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ; বরিশালের স্কোর তখন ৫.৪ ওভারে ৪৬/৪! সেখান থেকেই শুরু সাকিব-ইফতিখার উপাখ্যানের।
১০ ওভার শেষেও দুজনে মিলে দলকে নিয়ে গিয়েছেন ৭৩ রানে। একবার উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়ার পর দুজনেই বুঝে গেলেন পেছন ফিরে তাকানোর কোনও সুযোগ নেই এই উইকেটে। ১২তম ওভারের শেষ বলে তো শামিম ইফতিখারের একেবারে লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন। ইফতিখার কী আর ছাড় দেন! শামিমের করা ওই ওভারে ২৫ রান নিয়েই দুজনে দিয়েছিলেন গিয়ার পালটানোর ইঙ্গিত।
পরের ওভারে ২৯ বলে ফিফটি করে আক্রমণের পথটা দেখালেন ইফতিখারই। সেই পথে হেঁটে ৩৩ বলে সাকিবও ১৭তম ওভারে তুলে নেন ফিফটি। আর শেষ তিন ওভারে হাসান, রবিউল ও মাহেদীকে দুজনে মিলে রীতিমত তুলোধোনা করে নিলেন ৭৩ রান! নিজের খেলা শেষ বলে সেঞ্চুরি পূরণও করেছিলেন ইফতিখার। ৪৫ বলে বিপিএলের ৩য় দ্রুততম সেঞ্চুরি করে ১০০* রানে ইফতিখার অপরাজিত থাকলেন, আর সাকিব থাকলেন ৪৩ বলে ৮৯* রানের ইনিংস খেলে। দুজনের ঝড়ে বরিশাল পেয়েছিল বিপিএল ইতিহাসের যৌথ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আর তাতে চড়েই বরিশাল পেল টানা চতুর্থ জয়।