ধারাবাহিক শান্ত, বিধ্বংসী বার্ল, মারকুটে মুশফিকে সিলেটের সহজ জয়
গ্রুপ পর্ব, সিলেট (টস-চট্টগ্রাম/বোলিং)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স- ১৭৪/৬, ২০ ওভার (শুভাগত ৫৪*, মারুফ ৫২, আফিফ ৩৪, ওয়াসিম ২/২৩, আমির ১/১৭, মাশরাফি ১/৩৬)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১৭৭/৩, ১৮ ওভার (শান্ত ৬০, বার্ল ৪১, মুশফিক ৪১*, ভিয়াসকান্থ ২/২৭, নিহাদুজ্জামান ১/৩৮)
ফলাফল: সিলেট ৭ উইকেটে জয়ী
পয়েন্ট তালিকার শুরুর দিকেই কেন এবার সিলেটের আনাগোনা ছিল পুরো মৌসুম জুড়েই সেটাই আরেকবার দেখাল তারা। চট্টগ্রামের সংগ্রহকে পাত্তাই না দিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটির পর রায়ান বার্লের ঝড়, মুশফিকের ম্যাচ শেষ করে আসা ইনিংসে আবারও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ফিরল সিলেট। শুভাগত হোমের দারুণ ফিফটি, মেহেদী মারুফের আসরের প্রথম ফিফটি- কাজে এল না কিছুই।
১৭৫ রানের লক্ষ্যে এদিন তৌহিদ হৃদয়কে সঙ্গী করে ওপেন করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন শান্ত। হৃদয় এক প্রান্ত সামলালে আক্রমণের দায়িত্ব বুঝে নেন শান্ত। দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে কোনও উইকেট না হারিয়ে দলকে নিয়ে যান ৫৫ রানে। পাওয়ারপ্লের এক ওভার পরে ভিয়াসকান্থকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ১৮ বলে ১৫ রানের ইনিংস শেষে হৃদয় ফিরলেও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন শান্ত। উইকেটে মুশফিক এসে তাকে তার মত করে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলে শান্ত ফিফটি পেয়ে যান ৩৬ বলে। শুরুটা যেভাবে করেছিলেন ব্যাটিংয়ের গতিবিধি সেদিকটায় ধরে রাখতে না পারার সুযোগ নিয়ে তাকে ফেরান নিহাদুজ্জামান। গিয়ার পাল্টাতে গিয়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে শান্ত ফেরেন ৪৪ বলে ৬০ রানের ইনিংসে।
শান্ত যেটা চেষ্টা করেছিলেন সেটাই উইকেটে এসেই করে দেখালেন বার্ল। ৫ বলে ৫ রানে থাকার সময় সিদ্ধান্ত নিলেন নিহাদুজ্জামানকে আক্রমণ করার, যেই ভাবা সেই কাজ। তবে বাউন্ডারিতে থাকা ফিল্ডারকে সেই বলে সুযোগ দিলেও পেয়ে যান ছয়। সেখান থেকে ওই ওভারে ৩ ছয় ও ১ চারে নিলেন ২৯! এক ওভার পরে ভিয়াসকান্থের শিকার হয়ে যখন ফিরলেন ততক্ষণে ১৬ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে জয়ের পথ বাতলে দিয়েছেন বার্ল। দলকে জয় হতে মাত্র ১৫ রান দূরে তিনি ফিরলে তার অসমাপ্ত কাজটা শেষ করেন অন্য প্রান্ত সামলে রাখা মুশফিক। ২৬ বলে ৪১* রানের ঠান্ডা মাথার ইনিংসে ২ ওভার হাতে রেখেই সিলেটকে তিনি পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে প্রথম বলেই উসমান খানকে হারিয়েছিল চট্টগ্রাম। নিজের ১০০তম বিপিএল ম্যাচ খেলতে নামা মাশরাফি বিন মুর্তজা ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে চট্টগ্রাম শিবিরকে চিন্তায় ফেলে দিলেও আফিফ হোসেনকে নিয়ে দারুণভাবে তা সামাল দেন মারুফ। আফিফ ২৭ বলে ৩৪ রানের ইনিংস শেষে মোহাম্মদ আমিরের শিকার হয়ে ফিরলেও মৌসুমে নিজের প্রথম ফিফটি পেয়েছিলেন মারুফ। ফিফটির পরপরই ইমাদ ওয়াসিমের শিকার হয়ে ৪০ বলে ৫২ রানে মারুফ থামলে দুই ওভারের মাঝেই হুট করে ৮৭/১ থেকে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ড হয়ে দাঁড়ায় ৯৭/৫।
সেখান থেকে চট্টগ্রামের দিশারী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন অধিনায়ক শুভাগত নিজেই। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে সঙ্গী করে শেষদিকে তুলেছিলেন ঝড়। মৃত্যুঞ্জয়ের ১৫* রানের সাথে ৩টি করে চার ও ছয়ে সাজানো ২৯ বলে ৫৪৮ রানের ইনিংসে শুভাগত ঠিকই চট্টগ্রামকে এনে দিয়েছিলেন লড়াইয়ের রসদ। তবে খারাপ ফিল্ডিঙয়ের মাশুল তাদের গুনতে হয়েছে শেষমেশ। সেই সাথে সিলেটের নির্দয় ব্যাটিংয়ে ম্যাচটা তাদের হারতে হয়েছে অপ্রত্যাশিত ভঙ্গিতে।