হৃদয়-জাকিরের ছন্দময় জুটি, পেসারদের দাপটে অপ্রতিরোধ্য সিলেট
গ্রুপ পর্ব, সিলেট (টস-খুলনা/বোলিং)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১৯২/৪, ২০ ওভার (হৃদয় ৭৪, জাকির ৫৩, বার্ল ২১*, ডেয়াল ২/৪০, নাহিদুল ১/২৫, রানা ১/৩৪)
খুলনা টাইগার্স- ১৬১/৯, ২০ ওভার (আজম ৩৩, হোপ ৩৩, জয় ২০, রুবেল ৪/৩৭, আমির ২/২৮, রাজা ২/২৯)
ফলাফল: সিলেট ৩১ রানে জয়ী
সিলেট ছুটেই চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে, খুলনাকে সহজেই হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে নিজেদের অবস্থানটাও সেই সাথে পোক্ত করল মাশরাফি মুর্তজার দল। তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসানের দারুণ জুটিতে পাওয়া শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রায়ান বার্ল-থিসারা পেরেরার ঝড়ে খুলনাকে বড় লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল সিলেট, রুবেল হোসেন, রেজাউর রহমান রাজাদের কাছে লক্ষ্য তাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে খুলনাকে।
১৯৩ রানের লক্ষ্যে শুরুটা মোটেও মনমত হয়নি খুলনার। আর সেই খুলনার সেই হতাশাজনক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল রুবেলের হাতেই। তৃতীয় ওভারে প্রথম বল হাতে তুলে নিয়ে এক ওভারেই ফেরালেন তামিম ইকবাল ও অ্যান্ড্রু বালবির্নিকে। সেই বিপর্যয় সামলে মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গী করে শেই হোপ পাওয়ারপ্লেতে দলকে নিয়ে যান ৪০ রানে।
তবে বড় লক্ষ্য তাড়ায় গিয়ার তাদের পাল্টাতেই হত; সেই তাগিদ থেকেই ইমাদ ওয়াসিমের আগের ওভারে ১৫ রান নিয়ে পরের ওভারে রাজার ওপর চড়াও হতে গেলেই শেষ হয় হোপের ইনিংসের। ওই ওভারেই একবার স্টাম্পে বল ডেকে ফিরতে গিয়েও ফেরেননি। তবে দুই বল পরেই মামুলি এক বলে বার্লকে ক্যাচ তুলে দিয়ে রাজার শিকার হয়ে ২২ বলে ৩৩ রানে ফেরেন হোপ। অন্য প্রান্তে থাকা জয় একেবারেই সুবিধা করতে না পারলে উইকেটে এসেই আক্রমণের দায়িত্ব বুঝে নেন আজম খান। সেটা আঁচ করে সিলেট পরিকল্পনা সাজায় সেভাবেই। ১৩তম ওভারে আমিরের শিকার হয়ে ২১ বলে ২০ রানের মন্থর ইনিংস শেষে জয় ফিরলে সেই চাপেই পরের ওভারে ওয়াসিমের বলে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন ১৭ বলে ৩৩ রান করে দারুণ খেলতে থাকা আজম। সেখানে কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল খুলনার আশা। এক ওভার পরেই অধিনায়ক ইয়াসির আলী ফিরতি ক্যাচ দিয়ে রাজার শিকার হয়ে ফিরলে শেষদিকে রুবেল পেয়ে যান আরও দুটি উইকেট। সেই সাথে সিলেটও সহজেই পেয়ে যায় জয়।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাজমুল হোসেন শান্ত ফেরেন মাত্র ৬ রানেই, মার্ক ডেয়ালের শিকার হয়ে। তবে জাকির হাসানকে সঙ্গী করে এরপর শান্তর বিদায়ের প্রভাব পড়তেই দেননি হৃদয়। নাসুমের করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে দুজনে মিলে ১৬ রান তুলেই ইঙ্গিত দেন - দিনটা আজ তাদের। জাকির এক প্রান্ত আগলে খেললে হৃদয় ৩৪ বলে তুলে নেন তার মৌসুমের ৪র্থ ফিফটি; সেই সাথে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১০০০ রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন তিনি। অবশ্য এর এক ওভার পরেই নাহিদ রানার বলে মামুলি এক ক্যাচ তুলে দিয়েও সাইফউদ্দিনের বদৌলতে জীবন পান ২৫ বলে ২৯ রানে থাকা জাকির।
সেই রানাই পরে ৪৯ বলে ৭৪ রানে থাকা হৃদয়ের দুর্দান্ত ইনিংসের অবসান ঘটিয়ে যেন তৃপ্তি পেয়েছিলেন কিছুটা হলেও। তবে সাইফউদ্দিনের আক্ষেপ বাড়িয়ে অন্য প্রান্তে এরপর ৩৫ বলে ফিফটি তুলে নেন জাকির। ফিফটির ঠিক পরের ওভারেই ৩৭ বলে ৫৩ রান শেষে নাহিদুলের বলে স্টাম্প খুইয়ে জাকির ফিরলে ইনিংস সমাধার দায়িত্বটা বুঝে নেয় থিসারা ও বার্ল । ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই মুশফিকুর রহিম ফেরার পর দুজনে মিলে ১০ বলে নিয়েছিলেন ৩০* রান! তাদের ঝড়েই বড় সংগ্রহ পেয়ে সেটা শেষমেশ খুলনার নাগালের বাইরে নিয়ে গিয়ে প্রথম দল হিসেবে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিয়েছে সিলেট।