• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    চার্লসের দানবীয় সেঞ্চুরি, রিজওয়ান ঝড়ে কুমিল্লার রেকর্ড জয়

    চার্লসের দানবীয় সেঞ্চুরি, রিজওয়ান ঝড়ে কুমিল্লার রেকর্ড জয়    

    গ্রুপ পর্ব, সিলেট (টস-কুমিল্লা/বোলিং)
    খুলনা টাইগার্স- ২১০/২, ২০ ওভার (তামিম ৯৫, হোপ ৯১*, নাসিম ১/৩৪, মোসাদ্দেক ১/৪৮)
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ২১৩/৩, ২০ ওভার (চার্লস ১০৭*, রিজওয়ান ৭৩, খুশদিল ১২, নাসুম ১/১৯, শফিকুল ১/৩৬, বাট ১/৫২)
    ফলাফল: কুমিল্লা ৭ উইকেটে জয়ী

     

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেন ‘হেক্সা’ শব্দটার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়ে প্রথম দল হিসেবে এবারের আসরে সেটাই করে দেখাল কুমিলা, সেটাও রেকর্ড গড়ে। তামিম ইকবাল-শেই হোপের এই আসরের দ্বিতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিতে ভর করে দুইশো পেরুনো লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার পরেও পরাজয়ের মুখ দেখতে হল খুলনাকে। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ঝড়ো ফিফটির পর জনসন চার্লসের দানবীয় সেঞ্চুরিতে কুমিল্লা তাই গড়ল বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।

    ২১১ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই আহত হয়ে লিটন দাসকে অবসর নিতে হলে সেটার প্রভাব ম্যাচে পড়তেই দেননি রিজওয়ান; তৃতীয় ওভারেই ইমরুল কায়েস ফেরার পর চার্লসকে সঙ্গী করে পাওয়ারপ্লেতে দলকে তিনি নিয়ে যান ৫৩ রানে। চার্লস রয়েসয়ে খেললে এদিন আক্রমণের ঝান্ডা বহন করে রিজওয়ান ফিফটি তুলে নেন ২৪ বলে।

    রিজওয়ানের মারমুখী ইনিংসের সুবাদে হাত খুলে খেলার সুযোগ পান চার্লস। এক সময়ে ১২ বলে ৪ রানে থাকা চার্লস রিজওয়ানের সাথে জুটি বেঁধে আমাদ বাটের করা ১৩তম ওভারে তোলেন ২৪ রান, সেই সাথে চার্লস ফিফটি পান ৩৪ বলে। রানের চাকা সচল রাখতে বদ্ধপরিকর রিজওয়ানকে থামতে হয় নাসুমের করা পরের ওভারেই, ৩৯ বলে ৭৩ রানের ইনিংস শেষে। নাসুম তার চার ওভারের কোটা পূর্ণ করে মহা গুরুত্বপূর্ণ সেই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মাত্র ১৯ রানের বিনিময়ে। তবে নাসুমের সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে দিয়ে এরপর চার্লস দেখানো শুরু করেন তার পেশীর শক্তি। নাহিদুলের করা ঠিক পরের ওভারেই চার ছয়ে ২৫ রান নেওয়ার পর আমাদের করা ১৮তম ওভারে দারুণ এক ছয়ে ৫৩ বলে পূর্ণ করেন তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ওই ওভারেই খুশদিল শাহ তার ১০ বলে ১২ রানের  ইনিংস শেষে ফিরলেও পরের ওভারে ছয় মেরেই রেকর্ড গড়া রান তাড়া সম্পন্ন করেন চার্লস নিজেই।

    এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরতেই মাহমুদুল হাসান জয়কে হারানোর পর তামিম ইকবালকে সঙ্গী করে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে দারুণ শুরু করেছিলেন আরেক ক্যারিবিয়ান হোপ। শুরুটা সাবধানী হওয়ায় দুজনে মিলে পাওয়ারপ্লেতে দলকে ৩৭ রানে নিয়ে যাওয়ার পরে নবম ও দশম ওভার মিলিয়ে ২৯ রান নিয়ে গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন দুজনেই। ২৭ বলে এর পরের ওভারেই ফিফটি পেয়ে যান এদিন প্রথম খুলনার অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া হোপ। তখনও ছন্দে আসতে না পারা তামিম জীবন পেয়েছিলেন ৪৫ রানে থাকার সময়।

    সেটার সুযোগ নিয়ে পরের ওভারেই ৪৪ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি পেয়ে যান ৫০তম টি-টোয়েন্টি অর্ধশতকের দেখা; সেই ওভারে ৩ চার ও ১ ছয়ে তিনি নেন ২৭ রান! দুজন মিলে ১৩-১৯ ওভারে নিয়েছিলেন ৯০ রান! ২০তম ওভারের প্রথম বলে মোসাদ্দেক হোসেনকে তুলে মারতে গিয়ে ৬১ বলে তামিম ৯৫ রানে থামলে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি হোপেরও। ৫৫ বলে ৯১* রানে থেকে হোপ শেষ করেছিলেন। তামিমের সাথে ১০৪ বলে তার ১৮৪ রানের জুটিতে (এই মৌসুমের ২য় সর্বোচ্চ)  যেই সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন দলকে, ঘুণাক্ষরেও হয়তো তখন ভাবেননি যে ম্যাচ শেষে তাকে থাকতে হবে পরাজিতের দলে।