'অলরাউন্ডার' নারাইনে ফাইনালের টিকেট কাটল উড়তে থাকা কুমিল্লা
প্রথম কোয়ালিফায়ার, ঢাকা (টস-কুমিল্লা/বোলিং)
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১২৫, ১৭.১ ওভার (শান্ত ৩৮, মুশফিক ২৯, মাশরাফি ২৬, রাসেল ২/২২, মোস্তাফিজ ২/২৫, তানভির ২/৩০)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ১৩০/৬, ১৬.৪ ওভার (নারাইন ৩৯, মোসাদ্দেক ২৭*, মঈন ২১, রুবেল ৩/৩৩, ঘাফারি ১/২১, সাকিব ১/২৮)
ফলাফল: কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী
টানা দশম জয় তুলে নিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে জায়গা করে নিল কুমিল্লা। আঁটসাঁট বোলিংয়ে সিলেটকে পর্যুদস্ত করে স্বল্প লক্ষ্যের দিকে তেড়েফুঁড়েই আগানো শুরু করেছিল কুমিল্লা। সুনীল নারাইনের ঝড় থামার পর অনায়াসে বাকি পথটুকু পাড়ি দিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল-মোসাদ্দেক হোসেন জুটি।
১২৬ রানের লক্ষ্যে প্রথম ওভারেই চার-ছয়ের পসরা সাজিয়ে ১৩ রান তুলে নিয়েছিলেন নারাইন। রুবেলের করা চতুর্থ ওভারে ২৩ রানে থাকার সময় নারাইনের ব্যাটের কানায় বল লেগে আকাশে ভাসলেও ফিল্ডারদের মাঝে পড়ায় সেই যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। তবে এক বল পরেই রুবেলের শিকার হয়ে ৭ রানে লিটন ফিরলে ঠিক পরের ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের বলে স্টাম্প খুইয়ে থামে নারাইনের ঝড়। ৩ চার ও ৪ ছয়ে ১৮ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে অবশ্য ততক্ষণে কুমিল্লাকে দারুণ শুরু এনে দিয়ে তবেই ফিরেছিলেন নারাইন। পাওয়ারপ্লের ঠিক শেষ বলে জনসন চার্লসও রান আউট হয়ে ফিরলে কিছুটা গুটিয়ে যায় কুমিল্লা।
পাওয়ারপ্লেতে ৫৮ রান তোলার পরের চার ওভারে তারা নিতে পেরেছিল ১৫ রান। সেই চাপে ১১তম ওভারের প্রথম বলে শফিকুল্লাহ ঘাফারির শিকার হয়ে ১৫ বলে ১৩ রান শেষে ফেরেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ঘাফারি-লিন্ডে জুটি তখন সুযোগ বুঝে চেপে বসার চেষ্টা করলে লিন্ডের ১৪তম ওভারে টানা চার-ছয় মেরে সিলেটের পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেন মঈন। তবে পরের ওভারে ফিরে প্রথম বলেই ১৩ বলে ২১ রানে থাকা মঈনের প্রতি আক্রমণ থামিয়ে ওই ওভারেই জাকের আলিকেও ফেরান রুবেল। পরের ওভারে মাত্র ২ রান দেওয়া লিন্ডে রাসেলকে ফেরানোর সুযোগ তৈরি করলেও মুশফিকুর রহিম ক্যাচ ফেলায় বেঁচে যান ১ রানে থাকা রাসেল। অন্য প্রান্তে সময়োপযোগী ইনিংস খেলা মোসাদ্দেককে নিয়ে পরের ওভারেই খেলা শেষ করে দেন রাসেল। সমানসংখ্যক বলে মোসাদ্দেকের ২৭* রান ও রাসেলের ১০ বলে ১৫* রানে ফাইনালে পা রাখে কুমিল্লা।
এর আগে দ্বিতীয় ওভারেই ঘাফারিকে ফিরিয়ে কুমিল্লার মনমত শুরু এনে দিয়েছিলেন রাসেলই। ওই ওভারেই তৌহিদ হৃদয় রান আউট হয়ে ফিরলে বিপদে পড়ে সিলেট। মঈন পরের ওভারেই জাকির হাসানকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখালে পাঁচে নেমে যান মাশরাফি। নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে জুটি গড়ে দারুণ প্রতি আক্রমণে বিপদ সামলে সিলেটকে পাওয়ারপ্লেতে তিনি নিয়ে যান ৪৩ রানে। ৮ত্ম ওভারে মুকিদুল ইসলামকে চার-ছয় মেরে ১৫ রান তুলে দুজনেই আক্রমণ বজায় রাখার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তারই পরিক্রমায় দশম ওভারে আবারও হন্তারকের ভূমিকায় ফিরে আসেন রাসেল, তানভিরের দারুণ ক্যাচে থামান মাশরাফির ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস। পরের ওভারে ২৯ বলে ৩৮ রানে থাকা শান্তকে ফেরানোর পর প্রথম বলেই রায়ান বার্লকে ফিরিয়ে আবারও সিলেটের বিপদ ডেকে আনেন তানভির।
লিন্ডেকে সঙ্গী করে মুশফিক সেই বিপদ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও ১৬তম ওভারে এসে তার ২২ বলে ২৯ রানের ইনিংসের ইতি টানেন মুকিদুল। পরের ওভারে জোড়া আঘাত হেনে সিলেটের ইনিংস কার্যত সেখানেই শেষ করে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারের প্রথম বলেই উইকেট তুলে নিয়ে নারাইন শেষ পেরেক ঠুকে দেন সিলেটের ইনিংসে। সিলেটের মামুলি পুঁজি পেরিয়ে যাওয়ার পথটাও পরে ব্যাট হাতে দেখিয়েছেন মাত্র ৮ রান দেওয়া নারাইন।