• এএফসি কাপ
  • " />

     

    'পেনাল্টি হ্যাটট্রিক হিরো' আফিফে চড়ে কাতারের 'ব্যাক টু ব্যাক'

    'পেনাল্টি হ্যাটট্রিক হিরো' আফিফে চড়ে কাতারের 'ব্যাক টু ব্যাক'    

     ফুলটাইম স্কোর: জর্ডান ১-৩ কাতার


     


    আল-লুসাইলে টানা দ্বিতীয়বারের মত এএফসি এশিয়ান কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরল কাতার। গতবারের ফাইনালের স্কোরলাইন ফিরিয়ে এনে সেই সাথে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপাটাও পেয়ে গেল স্বাগতিকরা। আর সেই জয়ের নেপথ্য নায়ক আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা আকরাম আফিফ। ফাইনালে হ্যাটট্রিকের অনন্য কীর্তি গড়লেন, গোল তিনটিই এল তাও পেনাল্টি থেকে! ‘পেনাল্টি হিরো’ আফিফে চড়েই তাই ঘরের মাঠে স্বপ্ন পূরণ করেছে কাতার।

    শুরু থেকেই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছিল কাতার। ম্যাচের ৭ মিনিটেই কাতারের আক্রমণের প্রাণভোমরা আকরাম আফিফ গোলমুখে ত্রাস সঞ্চার করেছিলেন। বাঁ প্রান্ত থেকে পাওয়া বল নিয়েই রক্ষণভাগের ফাঁক গেলে কঠিন একটা কোণ থেকে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। সেখান থেকেই যেন নড়েচড়ে বসে জর্ডান। বক্স টু বক্স খেলায় আফিফের আরেক আক্রমণ প্রতিহত করে অবশ্য সেই যাত্রায় নিজেদের গাও বাঁচাতে হয়ে দ্রুতই। হাল না ছেড়ে জর্ডান আক্রমণের ধারা বজায় রাখলে বেশ কয়েকবার কাতারের রক্ষণভাগের সামনে প্রশ্ন তুলেছিলেন ইয়াজান আল-নাইমাত। ফলাফল বের করার জন্য উদগ্রীব জর্ডান হুট করেই কাতারকে সুযোগ করে দেয় তখনই। ডি-বক্সে ক্ষিপ্র গতিতে আফিফ ঢুকে পড়লে তাকে আটকে দেন নাসিব। ভিএআর চেকের পর পেনাল্টি পেলে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি আফিফ।

    পেনাল্টিটা নিয়ে জর্ডানের প্রশ্ন ছিল; সেটার ক্ষোভ যেন তারা উগড়ে দিলেন খেলার মাঠেও। গোলের পরপরই খেলায় ইনজুরির হারও যেন বেড়ে গেল। তবে আকাশে ভাসানো বলগুলোয় নিজেদের সর্বোচ্চ দিতে গিয়েও অনেক ক্ষেত্রে খেই হারিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথমার্ধের একেবারে শেষদিকে প্রতিপক্ষের গোলকিপারের সাথে সংঘর্ষে মারাত্মক আহত হন আফিফ। স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তখন তাকে।

    তবে সেই আফিফ যে ফিরবেন, ফিরে জর্ডানের স্বপ্নভঙ্গের কাণ্ডারি হবেন সেটা তখনও আঁচ করা যায়নি হয়ত। দ্বিতীয়ার্ধেও উজ্জীবিত জর্ডান ম্যাচের মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল ক্ষণেক্ষণেই। দুটো পরিবর্তন করে কাতার সেটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে করতেই গোলের দেখা পেয়ে যায় জর্ডানের। মুহুর্মুহু আক্রমণের পর ৬৭ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত থেকে পাওয়া ক্রস আলতো ছোঁয়ায় মাটিতে নামিয়েই দক্ষতার সাথে জাল খুঁজে নেন আল-নাইমাত। ফর্মে থাকা এই ফরওয়ার্ড ফাইনালসুলভ এক গোলে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরান ঠিকই; তবে জর্ডানের আশার পারদ চুপসে দিতে সময় নেননি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় নাম আফিফ।

    জর্ডানের হতাশার নামটা হয়ত আফিফ, তবে আক্ষেপের সকল উপলক্ষ শুধু ‘পেনাল্টি’। সমতা ফেরার চার মিনিটের মাথায় আল-মারদি আর ইসমাইলের মধ্যে সংঘর্ষে আবার পেনাল্টি পেয়ে যায় কাতার। আফিফ কী আর সুযোগ হাতছাড়া করেন! দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানো জর্ডান ওই সামান্য ভুলেই ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে। আক্রমণে অবশ্য হাল ছাড়া পাত্র না আল-নাইমাত। ডান প্রান্ত থেকে আসা ক্রসে আবারও ৭৮ মিনিটেত মাথায় সুযোগ পেলেও বল নিশানায় রাখতে পারেননি সেবার। স্রোতের বিপরীতে ৮৪ মিনিটের মাথায় আফিফের দারুণ ফ্রি-কিকে জর্ডানের পিলে চমকে ওঠার দশা হলেও সেবার তাকে প্রতিহত করেন গোলকিপার। তবে ১৩ মিনিট অতিরিক্ত দেওয়া হলে আর তাকে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করা হয়নি জর্ডানের। গোলকিপার ইয়াজিদ আবুলাইলা আফিফকে বক্সে ফেলে দিলে যোগ করা সময়ে আরও একটি হ্যাটট্রিকে ম্যাচের ভাগ্য লিখে ফেলেন আফিফ। চেষ্টা করেও জর্ডান আর কিছু করতে না পারায় আবারও শিরোপা উঁচিয়ে ধরে কাতার।