ট্রেন্টব্রিজে 'টাই' রোমাঞ্চ!
নুয়ান প্রদীপের শেষ বল। দরকার ৭ রান। ব্যাটিংয়ে ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান লিয়াম প্লাঙ্কেট। ট্রেন্টব্রিজ কি অপেক্ষা করে ছিল এমন কিছুর জন্য? সামনের পা সরিয়ে নিলেন প্লাঙ্কেট, আগের চার বলে তিনটি ইয়র্কার ও একটি ‘পারফেক্ট ব্লক হোল’-এ বল করা প্রদীপ আবার করতে চাইলেন ইয়র্কার। একটুর জন্য হেরফের হলো, এতটুকুই যথেষ্ট ছিল প্লাঙ্কেটের জন্য! প্লাঙ্কেট মারলেন টেনে। লং-অফ দিয়ে। ছয়! ম্যাচ টাই! অথচ আগের বলে যদি দুই রানের জায়গায় তিন রান না হতো, লঙ্কানরা উৎসব শুরু করে দিতেন তখনোই! তবে ক্রিকেট যে! শেষ উল্লাসে তাই মাতলো ইংলিশরা, সঙ্গে বোধহয় ক্রিকেটও!
শুরুতে টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন এউইন মরগান, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস নাকি নিতেন ব্যাটিং! ৫৬ রানে তিন উইকেট পড়ার পর একটু চাপেই ছিল লঙ্কানরা, তারপরই সেকুগু প্রসন্নর ২৮ বলে ৫৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। সঙ্গ দিয়েছেন ম্যাথুস নিজে, ১০৯ বলে ৭৩ রান করে ওই সময় আউট না হলে শ্রীলঙ্কার ইনিংসটা হতে পারতো আরেকটু বড়! শেষ পর্যন্ত হলো ২৮৬, তখন কে জানতো ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডেরও স্কোর হবে তাই!
এটাও তো ভাবা একটু কঠিন ছিল, ৮২ রানে ৬ উইকেট পড়ার পরও ইংল্যান্ড আসবে এতদূর! কৃতিত্বটা একটা জুটির, জস বাটলার ও ক্রিস ওকসের। ৭ম উইকেটে ১৩৮ রান। বাটলার সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে আউট হয়েছেন লং-অনে শানাকার অসাধারণ এক ক্যাচে! ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার মতোন এক ক্যাচে!
তবে ছিলেন ওকস। ছিলেন প্লাঙ্কেট। মাঝে উইলি এসেছিলেন। আউট হলেন, আম্পায়ার পল রাইফেল দাঁড়াতে বললেন, নো বলটা দেখবেন বলে। মাহরুফের পা ছিল লাইনের একটু ভেতরে, অন্তত টেলিভিশন আম্পায়ার ব্রুস অক্সেনফোর্ড ভেবেছিলেন তাই। উইলির উইকেটটাই কি তবে নির্ধারণ করে দিল ম্যাচের ভাগ্য! নাহ্, সব রোমাঞ্চ গিয়ে যে ঠেকবে ওই শেষ বলে!
যে বলে প্লাঙ্কেট মারবেন ছয়। ৯৫ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেও পাদপ্রদীপের পার্শ্বে থাকবেন ওকস। সব আলো কেড়ে নিবেন প্লাঙ্কেট। কেউ জিতবে না যে ম্যাচে, কেউ হারবে না যে ম্যাচে।
এবং যে ম্যাচের বর্ণনায় ব্যবহার করতে হবে সেই চিরন্তন বাক্যটাই, ‘যে ম্যাচে ভর দিয়ে জিতবে ক্রিকেট!’