পদকের জন্য বিএমডব্লিউ পুরস্কার!
ডোপ কেলেংকারিতে এবারের অলিম্পিকে ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন প্রায় শতাধিক রাশিয়ান প্রতিযোগী। পদকের লড়াইয়েও অনেকটা পিছিয়ে ছিল রাশিয়া। কিন্তু তাই বলে কি আর ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার দমে যেতে পারে! দেশটির হয়ে পদকজয়ীদের তাই ঘটা করেই দেয়া হল সংবর্ধনা, সঙ্গে দামী পুরস্কার। আর সে পুরস্কারের দামটা একটু বেশী বলেই কিনা, সমালোচনার ঝড় উঠতেও সময় লাগে নি।
শুক্রবার মস্কোর ক্রেমলিনে এক জমকালো অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ পদকজয়ীদের হাতে তুলে দেন বিএমডব্লু গাড়ির চাবি।
পুতিনের দেয়া সংবর্ধনায় মার্গারিটা মামুন
এর পরপরই অনলাইনে একটি বিএমডাব্লিউ গাড়ি বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেখা যায়। ‘এক্স-৬’ মডেলের গাড়িটির দাম চাওয়া হয় ৭২ হাজার ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার পদকজয়ীদের কেউই বিজ্ঞাপনটি দিয়েছিলেন। অবশ্য খুব দ্রুতই সেটি সরিয়ে নেয়া হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম ‘আর স্পোর্টস’ মজা করে লিখেছে, গাড়িটি বোধহয় ওই খেলোয়াড়ের কাছে একটু বেশীই বড় মনে হয়েছে!
২০১৪ সালের উইন্টার অলিম্পিকে ফিগার স্কেটিংয়ে সোনাজয়ী ম্যাক্সিম ট্রানকভ পুরস্কার হিসাবে সরকারের কাছ থেকে পেয়েছিলেন মার্সিডিজ বেঞ্জ। এমন উপহার অ্যাথলেটদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলেই মন্তব্য তাঁর, “উপহার দিয়েই তো সরকারের কাজ শেষ। এরপর এই দামী জিনিসগুলো যে আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায় সে খবর কে রাখে? বিএমডাব্লিউ পেলে আমিও সেটা বিক্রিই করে দিতাম। এসবের রক্ষণাবেক্ষণ খরচও তো কম নয়। আমাদের কি আর ফুটবল, হকি, টেনিস খেলোয়াড়দের মতো এত টাকা আছে!”
জিমন্যাস্ট সেডা টুটখালয়ানের সমস্যাটা আবার একটু ভিন্ন। মাত্র ১৭ বছর বয়সী এই অ্যাথলেটের এখনো ড্রাইভিং লাইসেন্সই নেই!
জাতীয় অর্থনীতিতে মন্দা সময় পার করা রাশিয়ায় খেলোয়াড়দের এ ধরণের উপহার দেয়াটাকে অর্থের অপচয় হিসেবেই দেখছেন সাধারণ জনগণের অনেকে। ঠিক কী পরিমাণ টাকা এ খাতে খরচ করা হয়েছে, নিশ্চিত জানা যাচ্ছে না সেটাও। তবে ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির বিত্তশালীরাই যোগান দিয়েছেন এসব অর্থের।
এদিকে রাশিয়ার ককেশাস অঞ্চলের উত্তর অসেটিয়া সরকার অলিম্পিকের আগে ঘোষণা দিয়েছিল পদকজয়ীদের একটি করে বাড়ি উপহার দেয়ার। এছাড়া ডাগেস্টিনের স্থানীয় সরকার রেসলার আব্দুল রশিদ সাদুলেভকে ৯৩ হাজার ডলার অর্থ পুরস্কার দিয়েছে। এই পদকজয়ীই আবার এর মধ্যে পুতিনের দেয়া বিএমডব্লিউটি রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন।