• বাংলাদেশ-আফগানিস্তান
  • " />

     

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তাসকিনের ফেরা আর জাদরানদের উইকেট!

    ২২ গজের সেলুলয়েড : তাসকিনের ফেরা আর জাদরানদের উইকেট!    

    ছন্দপতন?

    গত বছরের নভেম্বরে শেষ ওয়ানডে খেলেছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তান খেলেছে জুলাই মাসে। অথচ আফগান দুই পেসারকে দেখে মনে হলো, বিরতিটা তাঁদেরই দীর্ঘ! প্রথমে এলেন দাওলাত জাদরান, প্রথম বল করার আগেই রান-আপে হয়ে গেল গড়বড়। ‘ডেড বল’। অন্য প্রান্ত থেকে নিজের প্রথম নাভিন-উল-হক। তরুণ এই পেসারের অবশ্য অভিষেক, পূর্বসূরীর মতো তাঁরও গড়বড় হলো, দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলটাও তাই ‘ডেড’!

     

    হঠাৎ মাহমুদউল্লাহ!

    খোলসবন্দী হন, ডটের পর ডট খেলেন। মাহমুদ উল্লাহর এরপর কী যেন হয়, মারেন বাউন্ডারি! প্রথম ১৫ বলে ছিল ৫ রান। ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে মিরওয়াইস আশরাফকে লং অফে মারলেন দিনের প্রথম ছয়। এরপরের ১০ বলে নিলেন মাত্র দুই রান। এরপর চার, এরপরের ২০ বলে ১২ রান। ৬১ বলে ছিল ৪২ রান, এরপর দাওলাতের এক ওভারেই নিলেন ১৬ রান। শেষ পর্যন্ত ৭৩ বলে ৬২ রান করে ক্যাচ আউট মাহমুদ উল্লাহ! যে শটটা খেললেন, সেটাও যেন হঠাৎ করেই!

     

    দ্য জাদরান ডিসমিসাল’

    না, দুজনের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। তবে নামের শেষাংশ একই, জাদরান। দাওলাত ও নাজিবুল্লাহ। সাকিব আল হাসান তাঁদেরকে আনলেন একই সারিতে! দাওলাতের শর্ট বলটা পুল করতে গেলেন সাকিব, নিয়ন্ত্রণ পেলেন না! মিড-উইকেটে ক্যাচ হলো, ধরলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। সাকিব ক জাদরান ব জাদরান!

     

    ঘটনাবহুল ফেরা!

    নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রথম ওভার। প্রথম বলটা লেগসাইডে ওয়াইড। তাসকিন কি ‘নার্ভাস’ ছিলেন! হতেই পারে। তাসকিন ওয়াইড দিলেন আরও দুইটা। প্রথম ওয়াইডটার পরই পেতে পারতেন একটা উইকেট, মোহাম্মদ শাহজাদের ক্যাচটা প্রথম স্লিপে ছেড়ে দিলেন ইমরুল কায়েস। তাসকিন প্রথম ওভারে ওয়াইড দিলেন, সুইং পেলেন, উইকেটের সম্ভাবনাও জাগালেন! শুধু উইকেটটাই পেলেন না!

     

    মাহমুদউল্লাহর ফ্লাডলাইট বিড়ম্বনা!

    ক্যাচ উঠলো। মাহমুদ উল্লাহ কাছাকাছি গিয়েও শেষ চেষ্টাটা করলেন না। ফ্লাডলাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল নাকি তাঁর, ইশারায় দেখাচ্ছিলেন সেটাই। এরপর তাইজুলের বলে হাসমতুল্লাহ শাহিদির ক্যাচটায় অবশ্য ফ্লাডলাইটের ‘দোষ’ দিতে পারবেন না মাহমুদ উল্লাহ, সহজ বাংলায় সেটা ছিল যে ‘লোপ্পা ক্যাচ’! পরে হাসমতুল্লাহ আউট হয়েছেন তাইজুলের বলেই, সংগে মাহমুদ উল্লাহকেও নিশ্চয়ই দিলেন একরাশ স্বস্তি!

    একবার, দুইবার!

    আট বলে দরকার ১৭ রান। রুবেল হোসেনকে প্রায় শুয়ে পড়ে স্কুপ করলেন রাশীদ খান। রুবেল ঠিক বুঝলেন না রাশীদের মনোভাব, করলেন লেংথ বল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চার। পরের বলে আবার প্রায় শুয়ে পড়লেন রাশীদ, রুবেল করলেন ফুললেংথে। ভূপাতিত রাশীদ, হয়েছেন বোল্ড। শুয়ে পড়লেই কি আর চার হয়!  

     

    হ্যাঁ স্ট্যানিকজাই, না স্ট্যানিকজাই

    এশিয়া কাপে ২০১৪ সালে ফতুল্লাহয় নায়ক ছিলেন আসগর স্ট্যানিকজাই। করেছিলেন ৯০ রান। আফগানিস্তানের দিকে হেলে পড়া ম্যাচটা যখন নাজিবুল্লাহকে আউট করে এদিকে ফিরিয়ে আনলেন মাশরাফি, নামলেন সেই স্ট্যানিকজাই। প্রথম বলেই মাশরাফিকে টেনে মিড-উইকেট দিয়ে মারলেন চার, স্ট্যানিকজাই আবার হবেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নায়ক? ফতুল্লাহর সেই রুপে ফেরা হলো না স্ট্যানিকজাইয়ের, তার আগেই তাঁকে ফেরালেন এ ম্যাচেই ফেরা তাসকিন!


    শেষের সমাপতন 

    বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ বলে আউট হয়ে গেলেন তাইজুল ইসলাম। ঠিক ৫০ ওভারে ২৬৫ রানে অলআউট বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ইনিংসেও শেষ বলে মারতে গিয়েই আউট জাদরান, ওটাই ছিল আফগানদের শেষ উইকেট। ওয়ানডে ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো দুই দলই ৫০ ওভার খেলেই অলআউট হলো।