• ভারত-নিউজিল্যান্ড
  • " />

     

    সৌরভ ছড়িয়েই যাচ্ছেন ঋদ্ধিমান

    সৌরভ ছড়িয়েই যাচ্ছেন ঋদ্ধিমান    

    বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন ভারতের শিলিগুড়ি শহরের এক নিভৃতচারী তরুণ একমনে বুনে যাচ্ছিল আশৈশবের স্বপ্ন। স্বপ্নটা ভারতীয় দলে খেলার। নিবিড় অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েও সাহস হচ্ছিল না সেটা মুখ ফুটে বলার। মহেন্দ্র সিং ধোনির জায়গায় ভারতের উইকেটকিপার হওয়ার স্বপ্নটাও যে তামাশার মতো শোনায়! সেই তরুণ ঋদ্ধিমান সাহার স্বপ্ন অবশ্য ব্যর্থ হয়নি। ইডেন গার্ডেনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ইনিংসে ফিফটির পাশাপাশি অসাধারণ কিপিং করে বাঙালি হিসেবে গড়েছেন দারুণ এক কীর্তি। যা পারেননি খোদ সৌরভ গাঙ্গুলীও। প্রথম বাঙালি হিসেবে ইডেন গার্ডেনে হয়েছেন টেস্টে ম্যাচসেরা।

    ঋদ্ধিমান সাহা ও স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। দুজনের ভেতর কোন মিল খুঁজে পাচ্ছেন? ঠিক ধরেছেন। দুজনই জন্মেছেন ‘অন্যদের সময়ে’।’ ম্যাকগিলের ক্ষেত্রে যেমন দলে ঢোকার বাধা ছিলেন শেন ওয়ার্ন তেমনি ঋদ্ধিমানের জন্যও মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্যাটিং নিয়ে দুজনের তুলনা চলে না। তবে তাঁদের আসল যে কাজ, কিপিং, সেখানে যথেষ্টই উজ্জ্বল ঋদ্ধিমান। মূলত ধোনি চোট-টোট পেলেই দলে ডাক পড়তো ঋদ্ধিমানের। লাল বলের ক্রিকেট থেকে ধোনির অবসরের পর জায়গাটা ভালোই পোক্ত করেছেন পশ্চিমবাংলার এই তরুণ। সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। তবে সামর্থ্যের দারুণ নিদর্শন দেখিয়েছেন ইডেনে। হিমালয়ের কোলে বেড়ে ওঠা অখ্যাত তরুণটিকে চট করে আলাদা করা গেছে অন্যদের ভীড়ে।

    ৮২ বছর ধরে টেস্ট খেলা হচ্ছে ইডেন গার্ডেনে। এ পর্যন্ত সেখানে অনুষ্ঠিত ৪০টি খেলায় ম্যাচসেরা হয়ে দর্শকের অভিবাদন কুড়িয়েছেন অনেক কীর্তিমান ক্রিকেটার। কিন্তু এ পর্যন্ত সে কীর্তি ছোঁয়া হয়নি কোনো বাঙালির। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সৌরভ গাঙ্গুলী সেঞ্চুরি করেছিলেন ইডেনে। কিন্তু ওয়াসিম জাফরের ডাবল সেঞ্চুরিতে ম্লান হয়ে গিয়েছিল তাঁর ১০২ রানের ইনিংস। ম্যাচসেরাও হন জাফর। তবে এবার আর তেমন কিছু হয়নি। দুই ইনিংসে অপরাজিত ফিফটি করে ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন ঋদ্ধিমান। পশ্চিম বাংলাজুড়েও ছড়িয়ে দিয়েছেন উচ্ছ্বাস।

    কাছের মানুষরা তাকে চেনেন পাপালি বলে। নিভৃতচারী এই তরুণ পছন্দ করেন প্রচারণার আলোর বাইরে থাকতে। সেটাই ভালো। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করেন করাটাই তো আসল।