তীরে এসে তরী ডুবল ভারতের
ভারত সফরটা একদমই দুঃস্বপ্নের মতো কাটছিল। তিন টেস্টে ধবলধোলাই, পরে প্রথম ওয়ানডেতেও হার। অবশেষে সেই হারের বৃত্ত থেকে বেরুল নিউজিল্যান্ড। ২০০৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে তাদের কোনো ওয়ানডেতেও হারাল।
সেই জয়টাও কী রোমাঞ্চকর! একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বোধ হয় ভারতই জিতে যাবে। শেষ দুই ওভারে দরকার ১৬ রান। উইকেট আছে দুইটি, কিন্তু দুই ব্যাটসম্যান হার্দিক পান্ডিয়া ও উমেশ যাদব গড়ে ফেলেছেন ৪৪ রানের জুটি। কিন্তু ওই ওভারেই বোল্টকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারে দরকার ১০ রান, প্রথম দুই বলে এলো ৩ রান। তৃতীয় বলে টিম সাউদির দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড বুমরা, নিউজিল্যান্ড ম্যাচটা জিতে গেল ৬ রানে।
অথচ পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচটা তার আগে নিউজিল্যান্ডের দিকেই হেলে ছিল। ২৪২ রান তাড়া করতে নেমে ভারত হোঁচট খাচ্ছিল শুরু থেকেই। একটা সময় ৭৩ রানেই পড়ে গিয়েছিল ৪ উইকেট। সেখান থেকে ভারতকে আবার জয়ের স্বপ্ন দেখান কেদার যাদব ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। একটা ১৮৩ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের জয়টা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার।
ওখান থেকেই উমেশকে নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ান পান্ডিয়া। দুজন একটু একটু করে জয়ের দিকেও নিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ৪৯তম ওভারেই এলোমেলো হয়ে গেল সব।
তবে নিউজিল্যান্ডের ২৪২ রানের ইনিংসেও কম উত্থান পতন হয়নি। মার্টিন গাপটিল আউট হয়ে যাওয়ার পর টম ল্যাথামকে নিয়ে দলকে বড় স্কোরের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ল্যাথাম ৪৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও উইলিয়ামসন সেঞ্চুরি করেই থেমেছেন। কিন্তু ৩ উইকেটে ২০৪ রান তুলে ফেলার পর হঠাৎ করেই যেন মড়ক লাগে কিউইদের ইনিংসে। শেষ ৯ ওভারে মাত্র ৩৮ রান তুলতে পেরেছে, উইকেট হারিয়েছে পাঁচটি। শেষ সাত ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তখন মনে হচ্ছিল, দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটা ভারতই জিতবে। এর চেয়ে অনেক কঠিন লক্ষ্যও তো অনায়াসেই পার করেছেন ধোনি-কোহলিরা।
কিন্তু ক্রিকেটীয় অনিশ্চয়তায় শেষ পর্যন্ত জয়টা পেল নিউজিল্যান্ডই। সিরিজে নিয়ে এলো ১-১ ব্যবধানে সমতা।