• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    এখানে বসে আজ আমি লজ্জিতঃ স্মিথ

    এখানে বসে আজ আমি লজ্জিতঃ স্মিথ    

    ধীর পায়ে সংবাদ সম্মেলনে এলেন। চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা। কী বলবেন সেটা হয়তো ভেবেও পাচ্ছিলেন না, পরাজিত সেনাপতির কীই বা বলার থাকতে পারে! স্টিভেন স্মিথ তো এভাবে আসতে চাননি। উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বললেন, আজ তিনি লজ্জিত।

     

    শুধুই কী লজ্জা? নাহ। স্মিথের কণ্ঠে মিশে ছিল রাগ, হতাশা, বেদনা সবকিছুই। পরপর পাঁচ টেস্ট ও ওয়ানডেতে হার, ধবলধোলাই হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে আবারো, তাও ঘরের মাটিতে! অধিনায়ক হওয়ার পর এরকম লজ্জার মুখে কখনোই পড়তে হয়নি তাঁকে, “সত্যি বলতে আমি আজকে লজ্জিত। আমরা অনেক বেশিবার ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পরেছি। ৩০ রানে আজ ৮ উইকেট, প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে ১০ উইকেট। মাঠে আমরা শক্তভাবে দাঁড়াতেই পারছি না।”

     
     
     

    সমস্যাটা তাহলে কোথায়? দলের সদস্যদের নাকি কোচের? স্মিথ অবশ্য ড্যারেন লেম্যানকে দোষারোপ করছেন না, “তিনি অনেক সময় ধরেই দারুণ কাজ করছেন দলের জন্য। আমরা খারাপ খেলছি, এটা তাঁর দোষ নয়। তিনি অনুশীলনের সময় আমাদের জন্য সবকিছুই করেন।”

     

    দল নির্বাচন নিয়েও উঠেছে অনেক প্রশ্ন। স্মিথ কি নিজের পছন্দের দল পাচ্ছেন না? তবে ব্যাপারটি খুব সতর্কভাবেই এড়িয়ে গিয়েছেন স্মিথ, “এটা নিয়ে কথা হচ্ছে, আমিও এই ব্যাপারে নির্বাচকদের সাথে অল্প স্বল্প কথা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা তাদেরই সিদ্ধান্ত। তাঁরা যাদের যোগ্য মনে করবে তারাই খেলবে, আমার কাজ হচ্ছে তাদেরকে সাহায্য করা। মাঠে নেমে বাকিদের পাশে থাকা এবং ম্যাচ জেতার জন্য সবকিছুই করা। আমরা এই কাজটাই করছি না, কোনকিছুই কাজে লাগছে না।”

     

    অ্যাবট-রাবাদা বোলিং জুটির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি অজিরা। বিশেষ করে মিডল অর্ডার তো পুরোপুরি ব্যর্থই বলা যায়। নিজেদের ব্যাটিং কৌশলকেই দুষছেন স্মিথ, “এই মুহূর্তে আমাদের ব্যাটিং চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছে। সেট হয়ে যাওয়ার পর আপনি ইতিবাচক ভঙ্গিতে খেলতে পারবেন, কিন্তু ওই পর্যন্ত পৌঁছাতে হলে আপনাকে কঠিন রাস্তা পার করতেই হবে।”

     

    এই কঠিন রাস্তাটাই পার করতে পারছেন না দলের অভিজ্ঞ অনেকেই। স্মিথ তাই তরুণদের সুযোগ দেয়ার আভাস দিলেন, “হ্যাঁ, কিছুই কাজ করছে না। টানা ৫ ম্যাচ হারার পর দল নির্বাচন এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা উঠবে। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। এই মুহূর্তে আমরা যা করছি তা কাজে দিচ্ছে না। তাই আমার মনে হয় কিছু তরুণকে দলে নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বাড়াতে দেয়া উচিত। বলা তো যায় না, তাঁরা হয়ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো কিছু করে দেখাতে পারে!”

    তৃতীয় টেস্টের আগে ৮ দিন সময় পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দলে কী পরিবর্তন আসবে সেটাও হয়ত দ্রুতই জানা যাবে। তবে যেটাই হোক না কেন, স্মিথের অধিনায়কত্ব নিয়ে এরই মাঝে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। যদিও সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাপারে কিছু বলেননি, ভিতরে ব্যাপারটি নিয়ে নিশ্চিতভাবেই ভাবছেন। সিরিজের শেষটা কেমন হয় এটার ওপরে অনেকটাই নির্ভর করছে অস্ট্রেলিয়া দলের ভবিষ্যৎ। অস্ট্রেলিয়া কি পারবে অ্যাডিলেডে ঘুরে দাঁড়াতে? এতশত হতাশার মাঝে কি আশার আলো খুঁজে পাবেন স্মিথ?