• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া
  • " />

     

    বর্ণান্ধ ওয়েডের দিবারাত্রির কাব্য

    বর্ণান্ধ ওয়েডের দিবারাত্রির কাব্য    

    অন্যরকম রেকর্ড গড়েই ফিরছেন টেস্ট দলে! শেষবার সাদা পোশাক গায়ে চাপিয়েছিলেন প্রায় ৩ বছর ১০ মাস আগে, ভারতের বিপক্ষে দিল্লী টেস্টে। এরপরই জায়গা হারান ব্র্যাড হ্যাডিনের কাছে, হ্যাডিন অবসর নেবার পরও পিটার নেভিল নিয়মিত থাকায় আর একাদশে সুযোগ মেলেনি। এতদিন বাদে যখন আবার ডাক পড়লো ব্যাগি গ্রিন টুপি মাথায় পরার জন্য, বেশ অবাকই হয়েছেন ম্যাথু ওয়েড।

     এমন একটা সময়ে ফিরছেন টেস্ট দলে, যখন সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রথম দুই টেস্টে বাজেভাবে হেরে সিরিজ পরাজয় নিশ্চিত হওয়ায় দারুণ চাপে আছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, দল নির্বাচনের অনেক সিদ্ধান্তও পড়েছে তোপের মুখে। নির্বাচক কমিটি তাই খড়গ চালিয়েছেন ভালোই! ২৪ নভেম্বর থেকে অ্যাডিলেডে শুরু হতে যাওয়া শেষ টেস্টে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে দলে, ডাক পেয়েছেন ৪ নবাগত। ফর্মহীন উইকেটরক্ষক পিটার নেভিলের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছেন ২৮ বছরের অভিজ্ঞ ওয়েড। তবে এতদিন পর দলে ফিরেই করেছেন অনন্য এক রেকর্ড। তবে সেটা দলে ফেরার আগের বিরতি সংক্রান্ত নয়; প্রথম বর্ণান্ধ ক্রিকেটার হিসেবে দিবারাত্রির টেস্ট খেলার অংশ হতে যাচ্ছেন ওয়েড। 
    গোলাপি বল দেখতে সমস্যা হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে ওয়েড জানিয়েছেন, কিছুটা কষ্ট হলেও মানিয়ে নিতে পারবেন খুব দ্রুত, “বলের রঙ দেখতে পাচ্ছি আমি, ধরতেও সমস্যা হচ্ছে না। কেবল মাঝেমাঝে বলটা ঠিক কোনদিকে কী গতিতে আসছে – সেটা বুঝতে একটু সময় লেগে যায়। তবে এটা গুরুতর কিছু নয়। যত বেশি খেলব, ততই অভ্যস্ত হয়ে যাবো এই নতুন বলের গতির সাথে।”


     এই অ্যাডিলেডেই কিছুদিন আগে শেফিল্ড শিল্ডের এক ম্যাচে গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে ওয়েডের। সাথে দারুণ রোমাঞ্চ অনুভব করছেন নতুন চেহারার কোকাবুরা বল নিয়ে। গত বছর প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ থেকেই বলের সিমের রঙ সবুজ থেকে কালো করা হয়েছে। বল প্রতিবছরই উন্নত হচ্ছে, ফ্লাডলাইটে কেমন আচরণ করে, এটা দেখতে ভালোই লাগবে জানিয়েছেন। 


    তবে আশংকার বাণীও আছে পরিচিতদের কাছ থেকে। একসময়ের ভিক্টোরিয়া দলের সতীর্থ ক্রিস রজার্সও ছিলেন বর্ণান্ধ, সাদা পর্দার সামনে গোলাপি বলকে দেখতে পাওয়া কতটা মুশকিল, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন রজার্স। তপ্ত উনুনে পা দিয়েও দারুণ আশাবাদী এই উইকেটরক্ষক। ১২ ম্যাচের ক্ষুদ্র টেস্ট ক্যারিয়ারে ২ শতক সহ ৬২৩ রান এবং ৩৬টি উইকেটকিপিং ডিসমিসাল আছে ওয়েডের দখলে। 


    দলের পিঠ যখন ঠেকে যায়, তখন ব্যাটিংয়ে নেমে ত্রাণকর্তা হতে ভালোবাসেন ওয়েড, তবে আশা করছেন এই টেস্টে সেরকম কিছু ঘটবে না। ব্যাট ও গ্লাভস হাতে দারুণ পারদর্শী এই তাসমানিয়ান পথহারা অস্ট্রেলিয়াকে পথ দেখাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবেন এমনটাই আশা নির্বাচকদের। অমূলকও নয় তা, ভিক্টোরিয়া অধিনায়ক হিসেবে টানা ২ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ড জিতিয়েছেন দলকে। তরুণদের সাহায্য করতে এবং দলকে আবার জয়ের লাইনে ফেরাতে বদ্ধপরিকর তিনি। সাথে বর্ণান্ধ হিসেবে গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জটাও আছে সামনে।