নাদালকে হারিয়েই ফেদেরারের দুরন্ত ১৮
পাঁচ বছর তৃষিত অপেক্ষা কেটেছে এই মুহূর্তের জন্য। ১৮তম গ্র্যান্ড স্লামটা আসি আসি করেও আসছিল না। বয়সটাও একটু একটু করে বেড়ে যাচ্ছে, চোট টেনে ধরছে গভীর অতলে। রজার ফেদেরারের সব অপেক্ষা শেষ হলো । তাঁর সবচেয়ে যোগ্যতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েই পেলেন ১৮তম গ্র্যান্ড স্লাম। ৬-৪, ৩-৬, ৬-১, ৩-৬, ৬-৩ গেমের এক মহাকাব্যিক লড়াইয়ে রাফায়েল নাদালকে হারিয়েই পেলেন স্বপ্নের গ্র্যান্ড স্লাম।
দুজনের দ্বৈরথে সবসময়ই নাদাল এগিয়ে ছিলেন। এই ম্যাচের আগে ২৩-১১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন নাদাল, গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালের এর আগে মুখোমুখি আট লড়াইয়ের ছয়টিই জিতেছিলেন নাদাল। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সর্বশেষ দেখায়ও মহাকাব্যিক এক লড়াইয়ে হারিয়েছিলেন ফেদেরারকে। এমনকি দুজনের ম্যাচ সর্বশেষ যে তিনবার পাঁচ সেটে গিয়েছিল, তাতেও নাদাল হেসেছিলেন শেষ হাসি। তবে ফেদেরার ইতিহাসকে আরেকবার বুড়ো আঙুল দেখিয়েই হাসলেন শেষ হাসি।
তবে সেই জয়টাও সহজে আসেনি। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিলেন ফেদেরারই। দোর্দন্ড প্রতাপে প্রথম সেট জেতার পর মনে হচ্ছিল, দিনটা তাঁরই। কিন্তু রাফায়েল নাদাল যে হাল ছেড়ে দিতে জানেন না। পরের সেটেই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা আনেন। তৃতীয় সেটে আবারও দুর্দান্ত ফেদেরার, এবার পাত্তাই দিলেন না নাদালকে। মনে হচ্ছিল, চতুর্থ সেটে জিতে ম্যাচে ফেরাটা শুধুই সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু নাদাল যে অন্য ধাতে গড়া। চতুর্থ সেটে দুবার ব্রেক করেই আবার এগিয়ে গেলেন। পঞ্চম সেটে শুরুতে নাদাল ব্রেক করেছিলেন, ম্যাচের পেন্ডুলাম আবার ঘুরে গেল তাঁর দিকে। কিন্তু ষষ্ঠ ও অষ্টম ব্রেক করে আবার সমতা ফেরালেন ফেদেরার। এরপর আর ফিরে তাকাননি, আরও একবার ব্রেক করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন। শেষ সেটে এসেও অবশ্য নাদাল হাল ছাড়েননি, একবার চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টও বাঁচিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেদেরারই জিতলেন। টেনিসের সর্বকালের সেরা কে, সেই তর্কটাও সম্ভবত থামিয়ে দিলেন।