• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    পিএসজি ৪-০ বার্সেলোনা!

    পিএসজি ৪-০ বার্সেলোনা!    

    খেলা না দেখে থাকলে স্কোরলাইন দেখে ভড়কে যেতেই পারেন আপনি! চ্যাম্পিয়নস লিগে রাতের ম্যাচটা উপহার দিয়েছে অবিশ্বাস্য সব ঘটনা। আর পিএসজির জন্য ছিল ইতিহাসেরই অন্যতম স্মরণীয় রাত! প্রাক ডি প্রিন্সেসে বার্সেলোনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পিএসজি। প্রথম লেগ শেষের সাথে তাই অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে বার্সেলোনার বিদায়ও। মাত্র দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ার লজ্জা এড়াতে ন্যু ক্যাম্পে একরকম অসাধ্য সাধন করতে হবে কাতালানদের।


    বার্সেলোনা বধের নায়ক অবশ্য সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার ডি মারিয়া! দুই গোল করে নিজের ২৯ তম জন্মদিনটা স্মরণীয় করে রাখলেন এই আর্জেন্টাইন। বার্সেলোনার সাথে শেষ দেখায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়েও গোলের দেখা পেয়েছিলেন ডি মারিয়া। আজও যেন সেখান থেকেই শুরু করেছিলেন!

    ভালোবাসা দিবসে জন্মদিন ছিল এডিনসন কাভানিরও! বার্সেলোনার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়ে সেই উদযাপন করেছেন এই উরুগুইয়ান। পিএসজির হয়ে আরেকটি গোল এসেছে ড্রাক্সলারের পা থেকে।

    ম্যাচের শুরুতেই বার্সেলোনার ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে পিএসজি। প্রথম দশ মিনিটেই দুই গোলে এগিয়েও যেতে পারত তারা। অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষাও করতে হয়নি তাদের। ১৮ মিনিটেই ফ্রি কিক থেকে গোল করে প্যারিসে প্রথম আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন ডি মারিয়া। ওই গোলের পর আরও ব্যাকফুটে চলে যায় বার্সেলোনা। গুছিয়ে ওঠার আগেই ৪০ মিনিটে ড্রাক্সলারের গোলে ২-০ তে পিছিয়ে পড়ে এনরিকের দল! জানুয়ারিতে পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর জার্মান উইঙ্গার লিগ ওয়ান, লিগ কাপের মতো অভিষেকেই গোল পেলেন চ্যাম্পিয়নস লিগেও।



    প্রথমার্ধে পিএসজি এতোটাই দাপুটে ছিল যে বার্সেলোনা বলার মতো তেমন কোনো আক্রমণই সাজাতে পারেনি। প্রথম ৪৫ মিনিটে বার্সার গোলে দুইবার চেষ্টার বিপরীতে পিএসজির ছিল ১১ টি! মেসি, নেইমার, সুয়ারেজরা নিজেদের ছায়া হয়েই ছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধেও অবশ্য এর কোনো পরিবর্তন হয়নি। পুরো ম্যাচেই খুঁজে পাওয়া যায়নি এমএসএন জুটির কাউকেই! রাবিওট আর মাতুইদির কল্যাণে মাঝমাঠের দখলটাও ছিল পিএসজির হাতেই। বিশেষ করে মেসির জন্য হতাশার এক রাত হয়েই কেটেছে আজ। পুরো ম্যাচে গোলমুখে একবারও কিকই নিতে পারেননি এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১০ গোল করে ফেলা মেসি। এমন ঘটনা এই মৌসুমে এবারই প্রথম ঘটল।

    এর পুরো কৃতিত্বটাই আসলে উনাই এমরির। বার্সেলোনার সাথে ২৩ দেখায় মাত্র ১ জয় নিয়ে এই ম্যাচে আসা পিএসজি কোচের কৌশলের কাছে আজ ধোপে টেকেনি এনরিকের দল। ম্যাচ শেষে অকোপটেই এ কথা স্বীকার করে নিলেন বুস্কেটসও। 'আজ ওরা আমাদের চেয়ে ভালো দল ছিল। ওদের কৌশল ভালো ছিল, খেলেছেও আমাদের চেয়ে ভালো। শারীরিকভাবেও ওরা আমাদের কোনো সুযোগই দেয়নি'- বার্সা মিডফিল্ডারের সহজ স্বীকারোক্তি। 

    দ্বিতীয়ার্ধেও দেখা মেলে ভয়ঙ্কর পিএসজির। পরের গোলটিও আসে সেই সুবাদে। ৫৫ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে দেখার মতো এক গোল করেন ডি মারিয়া। আরেক 'বার্থডে বয়' কাভানির করা গোলটি আসে ৭২ মিনিটে। মুনিয়েরের ক্রস থেকে নিখুঁত ফিনিশে গোল করেন কাভানি।  ৪-০ গোলের লিড নিয়েও হাইপ্রেসিং গেম চালিয়ে যায় পিএসজি। বার্সা গোলকিপার টার স্টেগান বাধা না হয়ে দাঁড়ালে বার্সার লজ্জাটা আরও বড় হতে পারত।

    পুরো ম্যাচে বার্সেলোনার বলার মতো সেরা সুযোগ এসেছিল ৮৩ মিনিটে। উমতিতির হেড বারপোস্টে লেগে ফেরত আসায় সান্ত্বনার অ্যাওয়ে গোলটাও আর পাওয়া হয়নি বার্সেলোনার। চার গোলে পিছিয়ে থেকেই তাই পরের লেগে ন্যু ক্যাম্পে পিএসজির বিপক্ষে খেলতে হবে বার্সেলোনাকে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম লেগে ৪ গোলে পিছিয়ে পড়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার রেকর্ড নেই একটিও। 



    রাতে অন্য খেলায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড হেরে গেছে বেনফিকার কাছে। এস্তাদিও দা লুজে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশুন্য ভাবেই। ৪৮ মিনিটে গ্রিক স্ট্রাইকার মিত্রোগ্লুর করা একমাত্র গোল নির্ধারন করে দেয় ম্যাচের ফল। এই ফল অবশ্য বদলে দেবার একটা সুযোগ পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। ৫৮ মিনিটে অবেমেয়াং পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ না হলে মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল নিয়েই পরের লেগে মাঠে নামত পারত জার্মান জায়ান্টরা।