ইয়াসিরের ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়েই আটকে গেল খেলাঘর
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ ২৩৯, ৪৯.৫ ওভার (ইয়াসির ৫৯, তানভির ৩-৫৪)
খেলাঘর ২১১, ৪৮.১ ওভার (নাজিমউদ্দীন ৫৯, নাঈম ২-১৬)
ফলঃ রুপগঞ্জ ২৮ রানে জয়ী
উইকেটে থিতু হয়েছেন। টাইমিং হচ্ছে ভাল, আগের ওভারে একটা চার, তারও আগের ওভারে মেরেছেন দুইটা চার। তবে মোশাররফ রুবেলকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মারতে চেয়েই নাজিমউদ্দীন ঘটালেন বিপত্তিটা। হলেন স্ট্যাম্পড। খেলাঘরের আশা ছিল বেশ ভাল, জয় থেকে ৫৬ রান দূরে থাকতে সপ্তম উইকেটেরর পতনটা সে আশায় ধাক্কা দিল। সে ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি খেলাঘর, পরপর দুই ম্যাচ জেতার পর হারতে হয়েছে তৃতীয়টা। এ ম্যাচ জিতলে রুপগঞ্জের সমান পয়েন্ট হতো খেলাঘরের, উল্টো পিছিয়ে পড়তে হয়েছে চার পয়েন্ট।
২৪১ রানের লক্ষ্যটা খুব বড় নয়। তবে ফতুল্লার এ উইকেটে বল ব্যাটে আসছিল ধীরে, উইকেটে ধরছিল বল। তার ওপর ধাক্কাটা শুরুতেই খেয়েছে খেলাঘর। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রবিউল ইসলাম মোহাম্মদ শরীফের বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ইনিংসের প্রথম বলেই পয়েন্টে দিয়েছেন ক্যাচ! তবে ধাক্কাটা বেশ ভালভাবেই সামাল দিয়েছিলেন সালাহউদ্দীন পাপ্পু ও নাজমুস সাদাত। ব্লক, ব্লক, ব্লক, হিটঃ পাপ্পুর ব্যাটিংয়ের ধরনটা বেশ ভুগিয়েছেই রুপগঞ্জকে। ইনিংসের শুরুটা পাপ্পু করেছেন তিনটা ডটের পর ছয় মেরে! রাজা আলিকে সোজা বাউন্ডারি পার করেছেন, পরে ছয় মেরেছেন আরও একটি, চার ছয়টি। এর মধ্যে শরীফের এক ওভারেই তিনটি, হিসাবটাও ছিল সোজা- চার, ডট, চার, ডট, চার, ডট! রাজা আলি দারকে দুইটা চারের পর ছয় মেরেছেন, আউটও হয়েছেন সে ওভারেই।
১০ ওভারে ৬২ রান, নাজমুস সাদাত তখনও আছেন। পথেই ছিল খেলাঘরও। তবে খুব দ্রুতই ফিরে গেলেন অমিত মজুমদার, নাজিমউদ্দীনের সঙ্গে সাদাতের আশাজাগানিয়া জুটিটারও শুরু এরপরই। সাদাত, নাফিস ফিরে গেলেও রেজাউলকে নিয়ে ছিলেন নাজিমউদ্দীন। তাঁর মতো করে স্ট্যাম্পড হয়েছেন সাদাতও, আর সরাসরি থ্রোতে নাফিস ইকবালকে রান-আউট করেছেন ইয়াসির আলি চৌধুরি। রুপগঞ্জের চার বোলার নিয়েছেন দুইটি করে উইকেট, এর মধ্যে রাজার আবার ব্যাটিংয়েও আছে ৪৬ রান। তবে সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচসেরা ওই ইয়াসিরই। রাজার সঙ্গে তাঁর জুটিটাই যে গড়ে দিয়েছে রুপগঞ্জের জয়ের ভিত্তি!
টসে জিতে ব্যাটিং নেয়ার রুপগঞ্জের শুরুটা খারাপ ছিল না, তবে ১২ রানের ব্যবধানেই ৩ উইকেট হারিয়ে তাঁদের স্কোর বনে গিয়েছিল ৫ উইকেটে ১০৫। সেই খাদে পড়ার হাত থেকেই দলকে রক্ষা করেছে ইয়াসির-রাজার ৯৪ রানের জুটি। আগের চার ম্যাচে ৪২ রান করা ইয়াসির এদিন করেছেন ৫৯। থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন তিনিও। পরে বলেছেন, উইকেটটাই ছিল এমন, ‘উইকেটে থিতু হতে আসলে সময় লাগছিল। আমার লক্ষ্যও ছিল সেটাই, থিতু হওয়া। এ উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না মোটেও। উইকেটে বল ধরছিল।’
তিনটি উইকেট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের উইকেটশিকারির তালিকায় চারে চলে এসেছেন খেলাঘরের তানভির ইসলাম (১৬টি)। দুইটা উইকেট নিয়েছেন ডলার মাহমুদ, দুইটা রান-আউট করেছেন মাসুম খান। তবে সবাই ম্লান হয়ে গেছেন আসলে ওই ইয়াসিরের কাছেই!
ম্যাচশেষে তাই স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত ছিলেন লিস্ট এ ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পাওয়া ইয়াসির, ‘প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচসেরা হওয়া অনেক বড় অর্জন। দলের জন্য কিছু করতে পেরেছি, এটাও প্রাপ্তি। এ পারফরম্যান্সকে সামনে ধরে রাখার চেষ্টাই করবো।’