লর্ডসে এগিয়ে ইংল্যান্ড
তৃতীয় দিনশেষে
ইংল্যান্ড ৪৫৮ ও ১১৯/১
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৬১
ইংল্যান্ড ৯ উইকেট নিয়ে ২১৬ রানে এগিয়ে
পরের ম্যাচ খেলতে পারবেন না কাগিসো রাবাদা, আফ্রিকার জন্য সিরিজে সেটা একটা ধাক্কা বটে। ব্যাটিংয়ে পাওয়া আঘাতের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে এখনও বল করেননি ভারনন ফিল্যান্ডার, সেটা আরেকটা ধাক্কা। অথচ রাবাদা-ফিল্যান্ডার ব্যাটিংয়ে আফ্রিকার ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো ফিফটির পরও ৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে প্রোটিয়ারা। ইংল্যান্ড তৃতীয় দিনশেষে লিডকে এগিয়ে নিয়েছে বেশ, হাতে এখনও ৯ উইকেট।
রাবাদাকে বেয়ারস্টোর ক্যাচ বানিয়ে শুরুটা করেছিলেন লিয়াম ডওসন। রাবাদার প্রতিরোধ ভেঙে যাওয়ার পরই তার পথ অনুসরণ করেছেন টেনডা বাভুমাও। মইনের অফস্পিনে লেংথ না বুঝে খেলতে গিয়ে স্লিপে স্টোকসকে ক্যাচ দিয়েছেন, যেটা আবার ছুঁয়ে গেছে বেয়ারস্টোর প্যাড। নাইটওয়াচম্যানের কারণে একটু নিচে নামা কুইন্টন ডি কক ঝড় শুরু করেছেন এরপরই। ব্রডকে এক ওভারেই মেরেছেন তিনটি চার, ৩৬ বলে ১০ চারে করেছেন ফিফটি। অ্যান্ডারসনের বলে শর্ট এক্সট্রা কাভারে স্টোকসের অসাধারণ ক্যাচে শেষ হয়েছে ডি কক ঝড়, ফিফটি করার পরের বলেই।
নয় নম্বরে নেমে ফিফটি করেছিলেন ব্রড, নয় নম্বরে নেমে ফিফটি করেছেন ফিল্যান্ডারও। ডি কককে সঙ্গ দিয়ে গেছেন, বল দেখেশুনে খেলার সঙ্গে খেলেছেন শটও। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মইনকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে মারতে গিয়ে স্টাম্পে টেনেছেন বল। তার আগেই অ্যান্ডারসনের বলে আঘাত পেয়েছেন হাতে, হয়তো প্রভাব ছিল সেটারই। তার আগে করেছেন ৭ চারে ৮৬ বলে ৫২। তারও আগে কেশব মহারাজের যে উইকেটটা নিয়েছেন ডওসন, সেটা মূলত ডিআরএসের ফল। ক্রিজ থেকে অনেকখানি বেরিয়ে এসে ঠেকিয়েছিলেন মহারাজ, আম্পায়ার পল রাইফেলও নাকচ করেছিলেন আবেদন। রিভিউ নিয়ে সেটাই বনে গেছে উইকেট!
লর্ডসে দুই স্পিনার নিয়ে নামা ইংল্যান্ড যে সফল, সেটা বলছে রেকর্ডও। ১৯৯৯ সালের পর এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার ইংল্যান্ডের স্পিনাররা দেশের মাটিতে এক ইনিংসে নিলেন ৬ বা এর বেশি উইকেট। মইনের ‘ফোর-ফর’ এর সঙ্গে আছে ডওসনের দুইটি, বাকি চারটি সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছেন ব্রড-অ্যান্ডারসন জুটি।
চা বিরতি পর্যন্ত নিরাপদেই ছিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার। ১৭ ওভারে ৪৭ রান, ইংল্যান্ড নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছিল ধীরে ধীরে। শেষদিকে এসে ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গেছে কিটন জেনিংসের, মরকেলের শরীরঘেঁষা বল খেলতে গিয়ে ডি কককে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ রান করে। শেষ সেশনে কুক বা ব্যালান্সের ধৈর্য্যচ্যূতি ঘটেনি আর। কুক ক্যারিয়ারের ৫৪তম ফিফটি পেয়েছেন, ১৬৪ বল খেলে মেরেছেন ৯টি চার। শেষ নয় ইনিংসে ৯৭ রান করা ব্যালান্স অপরাজিত ২২ রানে, কুকের সঙ্গে বড় স্কোর কি গড়বেন তিনিও?
সে প্রশ্নের উত্তর জমা থাকবে আপাতত। তবে আফ্রিকার 'লর্ডস-রেকর্ড' পড়ে গেছে প্রশ্নের মুখে। ১৯৬০ সালের পর হোম অব ক্রিকেটে কখনও হারেনি প্রোটিয়ারা। তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ শুধু আশঙ্কার মুখেই ঠেলছে সে রেকর্ডকে।