• দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড
  • " />

     

    প্রথম দিনশেষে সাম্যেরই গান?

    প্রথম দিনশেষে সাম্যেরই গান?    

    ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট, প্রথম দিনশেষে 

    ইংল্যান্ড ২৬০/৬ (স্টোকস ৫৮, রুট ৫২, কুক ৪৬,  রাবাদা ২/৫২, অলিভিয়ার ২/৭২)


    হাশিম আমলা প্রথম স্লিপে ক্যাচটা পেলেও পেতে পারতেন। কুইন্টন ডি কক সে সুযোগটাই দিলেন না, ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে টম ওয়েস্টলির ক্যাচটা নিলেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে আরেকবার নিজের অংশটা বড় করে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। 
    আমলা প্রথম স্লিপে ক্যাচটা পেলেও পেতে পারতেন। ডি কক চেষ্টা করবেন ভেবেছিলেন, আগের মতোই। দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটকিপার করলেন না, আমলাও দাঁড়িয়েই রইলেন, দুজনের মাঝ দিয়ে বেরিয়ে গেল জো রুটের ‘এজ’। ডি ককের মুখচ্ছবিতে তখন হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই! দক্ষিণ আফ্রিকা পিছিয়ে গেল আরেকবার। 

     

    রুট বেশিক্ষণ টেকেননি, এরপর করতে পেরেছেন আর ৮ রান। এর মাঝেই টানা দশ টেস্টে ফিফটি করেছেন দ্বিতীয় ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে, জন এডরিচের পর। ৫০০০ রান ছুঁয়েছেন। ইনিংসটাই শুধু বড় করতে পারেননি, ফিফটির পরপরই ডি কককে হতাশামুক্ত করেছেন ডুয়ান অলিভিয়ার, ইংলিশ অধিনায়ককে ফেলেছেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি রুটের। 
     

    শুরুটা ভাল করেছিলেন টপ অর্ডারের বেশ কজন ইংলিশ ব্যাটসম্যানই। কিটন জেনিংসের আশাজাগানিয়া শুরু আরেকবার প্রত্যাশামাফিক শেষটা করতে পারেনি, ওই অলিভিয়ারের বলে ওই ডি ককের কাছে ক্যাচ দিয়েই আউট হয়েছেন সবার আগে। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের ‘কঠিন’ সিদ্ধান্ত নেয়া জো রুটের কপালে প্রথম ভাঁজটা পড়েছিল তখনোই। চিন্তার ভাঁজ হয়তো ছিল ফ্যাফ ডু প্লেসির কপালেও। প্রথমসারির দুই পেসার ভারনন ফিল্যান্ডার ও ক্রিস মরিস চোট পেয়ে বসে, মরনি মরকেল ও কাগিসো রাবাদার সঙ্গে ভরসা ওই অলিভিয়ারই। অলিভিয়ার প্রতিদান দিয়েছেন, দিয়েছেন পেসারদের ভীড়ে আলাদা করে নিজেকে চেনানো কেশব মহারাজও। জেনিংসের সঙ্গী কুককে ড্রাইভের প্রলোভন দেখিয়ে বাধ্য করেছেন পেছনে ক্যাচ দিতে। 
     

    মালান-রুটের ৫২ রানের চতুর্থ জুটি ভেঙ্গেছে দ্বিতীয় স্লিপে ডু প্লেসির নেয়া ক্যাচে, দিনে ‘দুর্ভাগা’ মরকেলের একমাত্র উইকেট। মালান টেস্ট ব্যাটিংয়ের উপযুক্ত টেকনিকের ঝলক দেখালেও তা কাজে লাগাতে পারেননি ঠিক, আরেকবার। আউট হওয়ার আগে স্টোকসের সঙ্গে রুটের জুটি ৫২ রানের। 
     

    এবার বেয়ারস্টো-স্টোকস। দেড় বছর আগে কেপটাউনে ৩৯৯ রানের মহাকাব্যিক জুটি গড়েছিলেন যারা। দিনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পিছিয়ে দেয়ার জোর চেষ্টা চালালেন দুজন। ফিফটি করে স্টোকস স্ট্রোকপ্লের পসরা সাজিয়েছিলেন, সঙ্গ দিচ্ছিলেন বেয়ারস্টো। রাবাদার এক ইয়র্কার বদলে দিল সব। স্টোকসের স্টাম্প একাকার, শেষ বিকেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আরেকবার এগিয়ে দিলেন আফ্রিকার বিস্ময়-বালক। নাইটওয়াচম্যান টবি রোলান্ড জোনসকে নিয়ে দিনটা পার করে দিয়েছেন ‘আউট, নট-আউট’-এর খপ্পরে পড়া বেয়ারস্টো। মহারাজের বলে ইনসাইড-এজ হয়েছিল, আফ্রিকানদের এলবিডাব্লিউর আবেদন নাকচ করে দিয়েছিলেন কুমার ধর্মসেনা। পরে স্লিপে ক্যাচের আবেদন করলেন ডিন এলগার, ধর্মসেনা দিলেন আউট। তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে গেলেন এরপর, পল উইলসন দেখলেন, মিলিমিটার ব্যবধান ছিল এলগারের হাত ও বলের মাঝে। 
     

    ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের প্রথম দিনে এমনই রঙ বদলেছে ক্ষণে ক্ষণে। একবার দক্ষিণ আফ্রিকা তো আরেকবার ইংল্যান্ড, এগিয়ে গেছে দুই দলই। দিনটা শেষ হয়েছে বোধহয় তাই সাম্যের গান গেয়েই!