লুইস-জোসেফকে হতাশ করলো ইংল্যান্ড ও বৃষ্টি
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৫৬/৫, ৫০ ওভার (লুইস ১৭৬, হোল্ডার ৭৭, ওকস ৩/৭১)
ইংল্যান্ড ২৫৮/৫, ৩৫.১ ওভার (রয় ৮৪, মইন ৪৮*, বাটলার ৪৩*, জোসেফ ৫/৫৬)
ফল : ইংল্যান্ড ৬ রানে জয়ী (ডিএল পদ্ধতিতে)
১৮১ রানে নেই ৫ উইকেট। ৩৫৭ রানের লক্ষ্য, ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে ছিটকে না গেলেও পা তো হড়কেছেই তখন। মইন আলি এলেন, জস বাটলারের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন বলে। বাটলারের রান তখন ১৪। মইনের সঙ্গে জুটিতে তিনি করলেন ২৩ বলে ২৯। আর ধ্বংসাত্মক ফর্মে থাকা মইন সে জুটিতে করলেন ২৫ বলে ৪৮, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখ থেকে জয়টাই তো কেড়ে নিয়ে গেলেন! দুজনের ৪৮ বলে ৭৭ রানের জুটির পরই নামা বৃষ্টিতে খেলা হয়নি আর, ডিএল পদ্ধতিতে ইংল্যান্ড ওভালে জিতেছে ৬ রানে।
বড় লক্ষ্যের মতোই ইংল্যান্ডের শুরুটাও হয়েছিল বড়সড়ই। স্টোকস কান্ডতে এ ওয়ানডেতে খেলতে না পারা অ্যালেক্স হেলসের জায়গায় দলে এসেছিলেন ফর্ম খুঁজে ফেরা জ্যাসন রয়। ৬৬ বলে ৮৪ রানের ইনিংসে তিনি যেন জানান দিলেন, ইংল্যান্ড চাইলে এখনও ভরসা করতে পারে তার ওপর। জনি বেইরস্টোর সঙ্গে ১২৬ রানের ওপেনিং জুটি, ইংল্যান্ড পথেই ছিল। বেইরস্টো ৩৯ রান করে ফিরলেন তাড়াতাড়ি, ছোটখাট ইনিংস খেলে ফিরলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক জো রুট, ওয়ানডে অধিনায়ক এউইন মরগান। পরেরজন ফর্ম ফিরে পেলেন না আজও, হঠাৎ জায়গা পাওয়া বিলিংসও ধরতে পারলেন না সুর।
রয় থেকে লুইস, পাঁচজন ব্যাটসম্যানেরই ঘাতক একজন বোলার। অ্যালজেরাই জোসেফ। সুরই তুলেছিলেন বটে তিনি, যে সুরের ছলনায় পড়েই আউট হলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।
তবে এভিন লুইস শুধু সুর না, তুলেছিলেন ঝঙ্কার। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেই, টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস তখন বেসুরো। একদিক আগলে ধ্বংলীলা চালালেন এই ওপেনার। জ্যাসন মোহাম্মাদের সঙ্গে ১১৭ রানের জুটিতে মোটামুটি ‘নিশ্চুপ’ই ছিলেন লুইস, করেছেন ৬২ বলে ৬২। তাকে ৮৬ রানে রেখে মোহাম্মাদ আউট হলেন ৪৬ রান করে। হোল্ডারকে ওপাশে রেখে সেঞ্চুরিটা করলেন লুইস, ৯৪ বলে। তখনও মারেননি একটি ছয়ও। পরের ৩৬ বলে করলেন ৭৬ রান, লুইসের ১৭ চারের পাশে তখন ৭টি ছয়!
লুইসের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চলতে পারতো আরও কিছুক্ষণ, ডাবল সেঞ্চুরিটাও উঁকি দিচ্ছিল। ৪৭তম ওভারে জেক বলের এক ইয়র্কারেই ঘটলো বিপত্তি। ইনসাইডেজ গিয়ে লাগলো লুইসের অ্যাংকেলে, এরপর দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও পারলেন না, মাঠ ছাড়তে হলো স্ট্রেচারে করে। সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে খেলতে পারবেন না, আপাতত খবর এটাই। তার উঠে যাওয়ার পরও জ্যাসন হোল্ডার ও রোভম্যান পাওয়েল মিলে তুললেন ২২ বলে ৩৮ রান। হোল্ডার করলেন ৬২ বলে ৭৭, পাওয়েল ১৫ বলে ২৮।
ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটি ছিল সর্বোচ্চ স্কোর, দেশের বাইরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কিন্তু সেসবেও কিছু হলো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারলোই। হারলো সিরিজও।
এর চেয়েও বোধহয় আরেকটু আফসোস করতে পারেন ক্যারিবীয় সমর্থকরা। ‘বৃথা’ গেল যে লুইসের সেই ইনিংসটা! আর জোসেফের পাঁচ উইকেট!