বেইরস্টো-রয় ঝড়েই শেষ ইংলিশ গ্রীষ্ম
৫ম ওয়ানডে, সাউদাম্পটন
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৮৮/৬, ৫০ ওভার (হোপ ৭২, গেইল ৪০, আমব্রিস ৩৮, প্লাঙ্কেট ২/৫৪, মইন ১/৩৬)
ইংল্যান্ড ২৯৪/১, ৩৮ ওভার (বেইরস্টো ১৪১*, রয় ৯৬, রুট ৪৬*, কামিন্স ১/৭০)
ফল : ইংল্যান্ড ৯ উইকেট জয়ী, সিরিজে জয়ী ৪-০ ব্যবধানে
ব্রিস্টলে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ওয়ানডে দিয়ে শুরু। সাউদাম্পটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ওয়ানডে দিয়ে শেষ। ইংলিশ গ্রীষ্মে মনে রাখার মতো কম ঘটনা ঘটেনি, বেন স্টোকসরা যেখানে যোগ করেছেন বাড়তি ‘মাত্রা’। তবে শুরুর মতো শেষেও থাকলো জয়ের ‘স্বস্তি’। রোজ বোউলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। বলকে আকাশে উড়িয়ে, সীমানা ছাড়িয়ে শেষ স্কোরিং শটটা খেলে জয় এনেছেন জো রুট, ইংলিশ ভক্তরা আশা করতেই পারেন, এভাবেই যদি উড়ে যেতো সাম্প্রতিক সব বিতর্ক!
আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ওয়ানডেটা শূন্য দিয়ে শুরু করেছিলেন জ্যাসন রয়। মাঝে বাদ পড়েছেন, ওই অস্বস্তির বিতর্কের ফলেই এসেছেন দলে, গ্রীষ্মের শেষ সিরিজে, শেষ দুই ম্যাচের জন্য। ওভালে করেছিলেন ৮৪, আজ করলেন ৯৬। সেঞ্চুরির আক্ষেপটা থাকতেই পারে, তবে রয়ের ব্যাট হাসছে, এটুকু তথ্যই যথেষ্ট সে আক্ষেপ দূর করতে! রয়ের চেয়ে আরেক কাঠি সরেস জনি বেইরস্টো, সিরিজের ও ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছেন, যে ইনিংসের শেষ ৬২ রান করেছেন ৩৩ বলে! সঙ্গে ছিলেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক, এরপর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ অ্যাশেজ, তার নেতা জো রুট। এই তিনজন মিলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২৮৯ রানের লক্ষ্যকে বানিয়ে ফেলেছিলেন ছেলেখেলা, ইংল্যান্ড জিতেছে ৭২ বল বাকি থাকতেই!
গত ম্যাচে ঝড় তোলা এভিন লুইস এদিন অ্যাঙ্কেলের চোটে খেলতে পারবেন না, সেটা নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। তবে কাইল হোপকে নিয়ে শুরুতে ঠিকই ঝড় তুলেছিলেন ক্রিস গেইল। ২৯ বলে ৪০ রান করার পর অভিষিক্ত টম কারানের বলে গেইল যে শটটা খেললেন, সেটার একটা অর্থ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। বেঁচেও যেতেন, লিয়াম প্লাঙ্কেট যদি অতিরিক্ত ভাল ক্যাচটা না ধরতেন মিড-অফ থেকে পেছনে ছুটে গিয়ে।
হোপ সেই প্লাঙ্কেটের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানদের ইনিংসে যেন সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ওই ৪০-এর আগ পর্যন্ত, স্যামুয়েলস করেছেন ৩২, অভিষিক্ত সুনিল আমব্রিস ছিলেন ৩৮ রানে অপরাজিত, উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের ৪০ এর সীমা ভেঙ্গেছিলেন শুধু আরেক হোপ, শাই। তিনি করেছেন ৭২। ঝড় তুলেছিলেন অ্যাশলি নার্স, তার ১২ বলে ৩১ রানে ভর করেই মূলত ২৮৮-তে পৌঁছায় উইন্ডিজরা। আর এ ম্যাচে হঠাৎ ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক বনে যাওয়া জ্যাসন মোহাম্মদ করেছেন ২৫। নিয়মিত অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার দেশে ফিরে গেছেন চাচার শেষকৃত্যে অংশ নিতে।
পাঁচ ইংলিশ বোলারই নিয়েছেন উইকেট, তবে ঝড় গেছে জেক বলের ওপর দিয়ে। ১০ ওভারে গুণেছেন ৯৪, আর সিরিজসেরা মইন আলি ছিলেন সবচেয়ে কিপটে। ১০ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৩৬ রান। সব মিলিয়ে কাজটা করে রেখেছিলেন বোলাররা, ইংল্যান্ড গ্রীষ্মের শেষটা ‘ভাল’ করার দায়িত্ব ছিল ব্যাটসম্যানদের ওপর।
বেইরস্টো-রয় যে সে কাজটা 'এতো ভাল' করবেন, সেটা কে জানতো!