• পাকিস্তান-শ্রীলংকা সিরিজ
  • " />

     

    রোমাঞ্চের অপেক্ষায় আবু ধাবি

    রোমাঞ্চের অপেক্ষায় আবু ধাবি    

    আবুধাবি টেস্ট, চতুর্থ দিনশেষে
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৪১৯ অল-আউট, ১৫৪.৫ ওভার (চান্ডিমাল ১৫৫*, করুনারত্নে ৯৩, ডিকভেলা ৮৩, আব্বাস ৩/৭৫, ইয়াসির ৩/১২০) ও ২য় ইনিংস ৬৯/৪, ৪০ ওভার (সিলভা ২৫, মেন্ডিস ১৬*, ইয়াসির ২/২৫)
    পাকিস্তান ১ম ইনিংস ৪২২ অল-আউট, ১৬২.৩ ওভার (আজহার ৮৫, হারিস ৭৮, মাসুদ ৫৯, আসলাম ৫১, হেরাথ ৫/৯৩, লাকমাল ২/৪২, প্রদীপ ২/৭৭)
    শ্রীলঙ্কা ৬৬ রানে এগিয়ে 


    আজহার আলি আগেরদিনের স্কোরের সঙ্গে যোগ করতে পারলেন আর ১১ রান। দীনেশ চান্ডিমাল ধরনের কোনও ইনিংস খেলা হলো না তার, পাকিস্তান পড়লো চাপে। কিন্তু চতুর্থ দিনশেষে তবু একটু চাপে আছে শ্রীলঙ্কাই, ৬ উইকেট নিয়ে তাদের লিড ৬৬ রানের। ইয়াসির সঙ্গে আরও দুই খন্ডকালিন স্পিনারের উইকেট নেওয়া আভাস দিচ্ছে 'ঘূর্ণিময়' পঞ্চম দিনের।  

    আজহার বোকা বনেছিলেন হেরাথের কমিয়ে আনা পেসে, শর্ট মিড-উইকেটে দিয়েছেন ক্যাচ। হারিস সোহেল ও সরফরাজ আহমেদের জুটি স্থায়ী হলো ১৬ রান, পাকিস্তান অধিনায়ককে বোল্ড করলেন সুরাঙ্গা লাকমাল।  কার্যত পাকিস্তান তখন নেমে গেছে ব্যাটিং অর্ডারের লেজে। সেই লেজই বড় ঝটকা মারলো শ্রীলঙ্কাকে, সঙ্গে থাকলেন সোহেল। 

    মোহাম্মদ আমির বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি সোহেলকে, তিনিও শিকার লাকমালের। ইয়াসির শাহও খেললেন আমিরের মতোই ১৯ বল, তিনি হলেন হেরাথের চতুর্থ শিকার। পাকিস্তান তখনও শ্রীলঙ্কার চেয়ে ৭৯ রানে পিছিয়ে, মাত্র ২ উইকেট নিয়ে। এরপরই হাসান আলির ক্যামিও, ২ চার ও ৩ ছয়ে ২৫ বলে ২৯, পাকিস্তান চলে গেল শ্রীলঙ্কার আরও কাছে। হেরাথের বলে স্টাম্পড হলেন হাসান, হেরাথ ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন আরেকবার, ৩২তম বার। এরপর যথাযথ টেইল-এন্ডারের মতো খেললেন মোহাম্মদ আব্বাস, ৩৪ বল খেলে অপরাজিত থাকলেন ১ রানে। ১৬১ বলে ৭৬ রান করে সোহেল নুয়ান প্রদীপের বলে ক্যাচ দিলেন, পাকিস্তান তখন শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে গেছে ৩ রানে।

    ৩ রানের লিড মানসিকভাবে শ্রীলঙ্কাকে একটু পিছিয়ে দিল, কিন্তু দিমুথ করুনারত্নের কী হলো, তা এক রহস্য বটে। এমনিতে স্কোরকার্ড বলছে শ্রীলঙ্কান ওপেনার ইয়াসির শাহর বলে ক্যাচ দিয়েছেন শান মাসুদকে। শর্ট লেগে মাসুদ ক্যাচটা দারুণ নিয়েছেন, করুনারত্নে রিভিউ না নিয়ে হাঁটা দিয়েছেন। কিন্তু রিপ্লে দেখালো, ব্যাট ও বলের মাঝে ব্যবধান ছিল ইঞ্চি ছয়েক, করুনারত্নের উইকেট শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়েও যেন ইঞ্চি ছয়েকের একটা গর্তই করলো! 

    ধীরলয়ে চলছিলেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা, সরফরাজ আনলেন খন্ডকালিন আসাদ শফিককে। ১৯তম ওভারে লাহিরু থিরিমান্নে সেই শফিকের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন, শ্রীলঙ্কার টিকে থাকার লড়াই ধাক্কা খেলো আরেকটা। এক খন্ডকালিনের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে শ্রীলঙ্কা খেলো আরেক ধাক্কা, এবার হন্তারক সোহেল। কৌশল সিলভা সুইপ করতে গিয়ে হলেন এলবিডাব্লিউ। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ক্ষতের এটাই শেষ নয়, আগের ইনিংসের নায়ক চান্ডিমালকে দারুণ এক ডেলিভারিতে আউট করলেন ইয়াসির। নাইটওয়াচম্যান সুরাঙ্গা লাকমালকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজিত আছেন ৬৩ বলে ১৬ করা কুশল মেন্ডিস। 

    কার্যত তৃতীয় ইনিংস শেষে শ্রীলঙ্কার রান এখন ৬৬, উইকেট আছে ৬টি। আর আছে আবুধাবির শেষদিনের উইকেট, ইয়াসির শাহ বা অন্যান্য স্পিনারদের হুমকি, কিংবা প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার লেজ ছেঁটে দেওয়া মোহাম্মদ আব্বাস।  এসব কাটিয়ে উঠতে শ্রীলঙ্কাকে করতে হবে দারুণ কিছুই। 

    তবে স্পিনবিষে শ্রীলঙ্কা নীল হলে ততোটা অখুশী হবেন না হেরাথ বা দিলরুয়ান পেরেরাও। যেটাই ঘটুক, পঞ্চম দিনে রোমাঞ্চের ডাকই দিচ্ছে আবুধাবি।