শ্রীলঙ্কাকে ঝুলিয়ে রাখলেন শফিক-সরফরাজ
দুবাই টেস্ট, তৃতীয় দিনশেষে
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৪৮২ অল-আউট, ১৫৯.২ ওভার (করুনারত্নে ১৯৬, চান্ডিমাল ৬২, পেরেরা ৫৮, ডিকভেলা ৫২, ইয়াসির ৬/১৮৪, আব্বাস ২/১০০) ও ৯৬ অল-আউট, ২৬ ওভার(মেন্ডিস ২৯, ডিকভেলা ২১, রিয়াজ ৪/৪১, হারিস ৩/১)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস ২৬২ অল-আউট, ৯০.৩ ওভার (আজহার ৫৯, হারিস ৫৬, পেরেরা ৩/৭২, হেরাথ ৩/৮৪) ও ২য় ইনিংস ১৯৮/৫, ৭৩ ওভার (শফিক ৮৮*, সরফরাজ ৫৭*, পেরেরা ৩/৭৬)
পাকিস্তানের ৫ উইকেটে ১১৯ রান প্রয়োজন
শারজাহ ২০১৪। পাল্লেকেলে ২০১৫। পাকিস্তান দুবাইয়ে ফিরিয়ে আনতে চাইবে এসব স্মৃতি, আর শ্রীলঙ্কার চাওয়া, ফলটা ভিন্ন হোক এবার। সে চাওয়া পূর্ণ করতে তাদের দরকার ৫ উইকেট, আর আরেকটা প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখতে পাকিস্তানের দরকার ১১৯ রান। তাদের আশা হয়ে আছেন ৮৮ রানে অপরাজিত থাকা আসাদ শফিক, সঙ্গী অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের রান ৫৭। তবে এরপরই পাকিস্তানের লোয়ার অর্ডার, শেষদিনে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হতে পারে সেটাই। আবুধাবির মতো দুবাই টেস্টও এখন পঞ্চম দিনে ফল নির্ধারণের অপেক্ষায়।
আগেরদিনই বোলিংয়ে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিল পাকিস্তান। চতুর্থ দিনে কুশাল মেন্ডিস বা নিরোশান ডিকভেলাও পারেননি দেয়াল তুলে দাঁড়াতে। শ্রীলঙ্কান উইকেটকিপার ডিকভেলা ফিরেছেন সরফরাজের অসাধারণ এক ক্যাচে, আগেরদিন পাকিস্তানের বোলিং নায়ক ওয়াহাব রিয়াজের বলে। শ্রীলঙ্কার লোয়ার অর্ডারে যা ছিল, তা ধ্বসে গেছে হারিস সোহেলের রেকর্ড গড়া এক ওভারেই! ২৬তম ওভারে তাকে এনেছিলেন সরফরাজ, ১ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ৩ উইকেট, ওই এক ওভারেই! রঙ্গনা হেরাথ ক্যাচ দিয়েছেন, দিলরুয়ান পেরেরা ও নুয়ান প্রদীপ পড়েছেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। এক ইনিংসে শুধু এক ওভার বল করেই তিন উইকেট, হারিসের আগে এ কীর্তি ছিল না আর কারোরই!
বোলিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কাও পেয়ে বসলো পাকিস্তানকে। রান করা রীতিমতো দুঃসাধ্য বানিয়ে ফেললেন পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরা, নো বলে বেঁচে যাওয়া সামি আসলাম একই ফিল্ডারকে স্লিপে ক্যাচ দিলেন, পাকিস্তানের ইনিংস ধ্বসের শুরু সেটাই। আজহার আলিও ছিলেন অতি রক্ষনাত্মক, মূল্য দিলেন সেটারই। শর্ট স্কয়ার লেগে ফিল্ডার রেখে চান্ডিমাল তাকে ক্যাচ দেওয়ালেন প্রদীপের বলে। হারিস সোহেলকে ওপরে পাঠানো হলো, তিনি দিলরুয়ান পেরেরার বলে আউটসাইডেজ হলেন। ওদিকে শান মাসুদও অতি রক্ষণতার মাশুল গুণলেন, এবারও ঘাতক পেরেরা, তার সহযোগী ডিকভেলা। এরপর আরেকটি হতাশা কাব্য লিখে তাকে অনুসরণ করলেন বাবর আজম, শূণ্যতেই।
৫২ রানে ৫ উইকেট নেই পাকিস্তানের, শ্রীলঙ্কা এগিয়ে গেল ইতিহাসের আরেকটু কাছে। তখনও উইকেটের কলাম পূর্ণ করতে বাকি হেরাথের, প্রথম টেস্টের নায়কের। মরুর বুকে নতুন দিগন্ত উঁকি দিচ্ছিল তখন। বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন ওই শফিক ও সরফরাজই। হেরাথকেও রাখলেন অপেক্ষাতে, সঙ্গে শ্রীলঙ্কাকেও।
টেস্টে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ৩০০-এর অধিক রান করে জেতা একমাত্র দল পাকিস্তানই, ওই শারজা আর পাল্লেকেলেতে। সে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করবে পাকিস্তান? নাকি আরব আমিরাতে পাকিস্তানকে প্রথমবার সিরিজ হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়বে শ্রীলঙ্কা?