জাভেদকে আরও একবার মনে করালেন থারাঙ্গা
নিঃসঙ্গ শেরপা কথাটাই বোধহয় সবচেয়ে লাগসই হবে। এক প্রান্ত থেকে দেখতে হয়েছে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিল, তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন অবিচল। নিজে সেঞ্চুরি পেয়েছেন, তারপরও সঙ্গীর অভাবে দেখতে হয়েছে দলের পরাজয়। এর মধ্যেই হয়ে গেছে একটা ছোট্ট ইতিহাস, প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবে ওয়ানডেতে ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করার কীর্তি হয়ে গেছে থারাঙ্গার। ওয়ানডেতে যে তালিকায় নাম লেখা আছে বাংলাদেশের জাভেদ ওমরেরও।
থারাঙ্গার কীর্তিটা শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম তো বটেই, আরেকটা দিক দিয়েও অভিনব। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ক্যারি দ্য ব্যাটের কীর্তি এটাই প্রথম। এর আগে ওয়ানডেতে দশজন করেছেন তা, শুরুটা ছিল জিম্বাবুয়ের গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের হাত ধরে। ১৯৯৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮৪ রানে।
এরপর পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার ও আজহার আলী, ইংল্যান্ডের নিক নাইট ও অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিডলি জ্যাকবস, অস্ট্রেলিয়ার ডেমিয়েন মার্টিন, দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস ও নিউজিল্যান্ডের টম ল্যাথামও তা করে দেখিয়েছেন।
বাংলাদেশের হয়ে জাভেদ ওমরের কীর্তিটা অবশ্য সেই ২০০১ সালে। হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। আর জাভেদ এক প্রান্ত আগলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে। কাকতালীয়ভাবে ওই সিরিজেই কয়েক দিন পরেই টেস্টেও ক্যারি দ্য ব্যাট করেছিলেন জাভেদ, তাও আবার অভিষেকেই। বাংলাদেশ তখন টেস্ট ক্রিকেটে হাঁটি হাঁটি পা পা করছে, অলআউট হয়ে গিয়েছিল ১৬৮ রানেই। একপাশ থেকে বেলিম ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে। এই শতাব্দীতে এটাই ছিল টেস্টে ক্যারি দ্য ব্যাটে প্রথম কীর্তি। আরও একটা মজার ব্যাপার, টেস্টে সব দলের বিপক্ষে হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে কেউ এখনও করে দেখাতে পারেননি এটা।ওয়ানডেতেও এখনও বাংলাদেশের বিপক্ষে হয়নি এটা।
টেস্ট-ওয়ানডে দুই সংস্করণেই ক্যারি দ্য ব্যাটের কীর্তি জাভেদ ওমর আছে আর আনোয়ার, স্টুয়ার্ট, ফ্লাওয়ারের। আর টেস্ট-টি টোয়েন্টিতে সেটা করতে পেরেছেন শুধু গেইল। তবে ওমরের মতো একই বছর তা করতে পেরেছেন শুধু গেইলই। থারাঙ্গার সাথে ওয়ানডের এই কীর্তিতে মিল আছে স্টুয়ার্ট, মার্টিন, নিক নাইট ও আনোয়ারের; এই পাঁচ জনই পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি। তবে একটা দিক দিয়ে গ্রান্ট ফ্লাওয়ার বাকি সবার চেয়ে আলাদা। ১১ জনের মধ্যে একমাত্র তিনিই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছিলেন, আর আনোয়ার করতে পেরেছিলেন টাই। বাকি সবার ব্যক্তিগত অর্জন মূল্যহীন হয়ে গেছে দলের ব্যর্থতায়।