• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    তাসকিনে রঙ হারাল রংপুর

    তাসকিনে রঙ হারাল রংপুর    

    চিটাগাং ভাইকিংস ২০ ওভারে ১৬৬/৪ (রঙ্কি ৭৮; মিসবাহ ৩১*; বোপারা ২/১৪)

    রংপুর রাইডার্স ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (বোপারা ৩৮, নাফীস ২৬; তাসকিন ৩/৩১)

    ফলঃ চিটাগাং ১১ রানে জয়ী


    ৪৫ বলে দরকার ৬২ রান, হাতে আছে ৭ উইকেট। শাহরিয়ার নাফীস ও রবি বোপারার জন্য কাজটা খুব একটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তাসকিন আহমেদের এক ওভারেই ম্যাচ নিল ১৮০ ডিগ্রি বাঁক। ওই ওভারের চতুর্থ বলে দআরুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করলেন নাফীসকে। পরের বলেই সামিউল্লাহ শেনোয়ারি ক্যাচ দিলেন। হ্যাটট্রিক বলটা থিসারা পেরেরা মেরেছিলেন ভালোমতোই, পা দিয়ে ঠেকাতে গেলেন তাসকিন। কিন্তু স্টাম্পে যখন লাগল, বোপারার ব্যাট ক্রিজের বাইর। পর পর তিন বলে সেই যে তিন উইকেট হারাল রঙপুর, সেটা থেকে আর ঘুরেই দাঁড়ানো পারল না। শেষ পর্যন্ত ১১ রানে হেরে পেল প্রথম পরাজয়ের স্বাদ, আর চট্টগ্রাম পেল টুর্নামেন্টের প্রথম জয়।

    অথচ বোপারারা একটা সময় ম্যাচটাকে একদম সহজই মনে করাচ্ছিলেন। ১৬৫ রানের লক্ষ্যটা খুব ছোট নয়, রংপুর প্রথম ওভারেই হারিয়ে ফেলল জনসন চার্লসকে। তবে ওপেনিংয়ে উঠে আসা জিয়াউর রহমান পরের ওভারেই ছয় চারে পালটা আক্রমণ করলেন। মারতে গিয়ে শুভাশীষের ওই অভারেই অবশ্য আউট হলেন জিয়া।

    এরপর মিঠুন ও বোপারা মিলে টেনে তুলছিলেন রংপুরের। প্রথম ম্যাচের পর মিঠুন আজও ছিলেন স্বচ্ছন্দ, ১৫ বলে করে ফেলেছিলেন ২৩ রান। কিন্তু দুজনের জুটিটা ভেঙে গেল ষষ্ঠ ওভারে, রংপুরের রান তখন ৬ ওভারে ৫৬।

    বোপারা তখনও একটু একটু করে নিয়ে যাচ্ছিলেন লক্ষ্যের দিকে। কিন্তু তাসকিনের ওই ওভারে তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি রংপুর। শেষ দিকে পেরেরা চার-ছয়ে একটু আশা দেখাচ্ছিলেন, কিন্তু তাসকিন তাঁকে ফিরিয়ে জয়ের পথে শেষ কাঁটাও সরিয়ে দিলেন।

    অথচ দুঃস্বপ্নের একটা শুরুর পর ভালোভাবেই ফিরে এসেছিল রংপুর। আগের দিন চট্টগ্রাম প্রথম ১০ ওভারেই হয়েছিল ৯৩, সেখান থেকে ৯ উইকেট হাতে রেখে পরের ১০ ওভারে হলো ৫৩। আর আজ প্রথম ১০ ওভারে চিটাগং ভাইকিংস তুলল ১১২ রান। সেখান থেকে পরের ১০ ওভারে হলো ৫৫ রান। ২০০ রান যখন স্টেডিয়াম থেকে চা বাগান পর্যন্ত ঢিল ছোঁড়ার দূরত্বে ছিল, সেটিই হয়ে গেল কিন ব্রিজের সুরমা নদী পর্যন্ত দূর। দারুণ শুরুর পরও চট্টগ্রাম শেষ পর্যন্ত করল ১৬৬ রান।

    আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ লুক রঙ্কি শুরু করেছেন সেখান থেকেই। মাশরাফির প্রথম ওভারে এলো ১২ রান, সোহাগ গাইজীর পরের ওভারে ১৫। তবে সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে গেল নাজমুল অপুর তৃতীয় ওভারে, তিন ছক্কায় ওই ওভার থেকে এলো ২৩ রান। আহমেদ শেহজাদের বিপিএলে ১৬ বলে ফিফটির রেকর্ডও তখন হুমকির মুখে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি, ১৯ বলে ফিফটি করেছেন লুক রঙ্কি।

    সৌম্য অবশ্য এর মধ্যেই আউট হয়ে গেছেন, রঙ্কিও এরপর একটু শান্ত হয়েছেন। তারপরও স্ট্রাইক রেট ২০০ রেখে সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৭৮ রান করে আউট হলেন বোপারার বলে।

    এরপরেই মাশরাফি-মালিঙ্গারা চেপে ধরলেন চট্টগ্রামকে। সেই চাপে হাঁসফাঁস করতে করতেই ১৭ বলে ২০ রান করে আউট হলেন মুনাবীরা। লুইস রিস ১৬ বলে ১০ রানের কুৎসিত একটা ইনিংস খেলে ফিরে গেলেন।

    তারপরও উইকেট ছিল তখন ছয়টি, রান অন্তত ১৮০ হতেই পারত। কিন্তু মিসবাহ উল হক ও এনামুল হক যেন ফিরে গেলেন সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক সচল রাখার ওয়ানডে জগতে। শেষ ১০ ওভারে ছয় দূরে থাক, চারই হয়েছে একটি। মিসবাহ ৩২ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত রইলেন, ১৪ বলে ১৭ রান করে বিজয়ের অবস্থা ছিল তুলনামূলক ভালো। চট্টগ্রামকে সেটির জন্য মূল্য দিতে হয়নি, সেটাই সৌভাগ্য।