• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ঢাকাকে মাটিতে নামিয়ে কুমিল্লা উড়ছেই

    ঢাকাকে মাটিতে নামিয়ে কুমিল্লা উড়ছেই    

    ঢাকা ডায়নামাইটস ১৮.৩ ওভারে ১২৮ (নারাইন ৭৬, সাঙ্গাকারা ২৮; হাসান আলী ৫/২০)

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৯.৪ ওভারে ১২৯/৬ (মালিক ৫৪, ইমরুল ২০; নারাইন২/১৭, আমির ২/১৮)

    ফলঃ কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী


    শেষ ওভারে দরকার ৯ রান, ক্রিজে শোয়েব মালিক। শেষ ওভার কাকে দেবেন, বেশ কিছুক্ষণ তা নিয়ে আলাপ করলেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত নুর আলম সাদ্দামের হাতেই উঠল বল। প্রথম বলেই ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট নিয়ে চার মারলেন মালিক। সমীকরণ দাঁড়াল পাঁচ বলে পাঁচ। পরের বলটা চাইলে সিঙ্গেল নিতে পারতেন, কিন্তু স্ট্রাইক রাখলেন তাঁর কাছে। তৃতীয় বলটা লো ফুলটস, মালিক মারতে গিয়ে ঠিকঠাক হলো না। কিন্তু ইনসাইড এজে চার হয়ে গেল, নিশ্চিত হয়ে গেল কুমিল্লার জয়। মালিকও পেয়ে গেলেন ফিফটি, ঢাকার চার ম্যাচের জয়রথ থামাল কুমিল্লা। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে কুমিল্লা এখন পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে।

    এই ম্যাচটা অবশ্য এতোটা স্নায়ুক্ষয়ী হওয়ারই কথা ছিল না। লক্ষ্য মাত্র ১২৯ রান, ২০ ওভারে সেটা হেসেখেলেই নেওয়ার কথা। কুমিল্লা সেই পথেও ছিল ভালোমতোই। আমিরের প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে শুরুটা দারুণ করেছিলেন তামিম। লিটনকে অবশ্য পরের ওভারেই ফেরালেন আমির। এক ওভার পর নারাইনকে ছয় মারলেন তামিম, পরের বলটা আবার মারতে গিয়ে স্টাম্পড।

    ম্যাচের সেই উত্তেজনা এর পর অনেকটাই থিতিয়ে গেল। মালিক-ইমরুলের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ঝুঁকি না নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছিল কুমিল্লা। শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে ২০ রান করে ফিরলেন ইমরুল। এরপর দলের ৭৫ রানে ফিরে গেলেন ব্রাভোও।

    কিন্তু রানটা এতোই কম, রান রেট সব সময় নাগালের মধ্যেই ছিল। ঢাকার উইকেট তুলে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। জয়ের সত্যিকারের আশাটা জাগল আমিরের বলে বাটলার বোল্ড হয়ে যাওয়ার পর। তখন ২২ বলে কুমিল্লার দরকার ৩০। ম্যাচটা যখন একটু কঠিন হচ্ছে, তখনই সাদ্দামের বলে ছয় মেরে কাজটা সহজ করলেন মালিক। শেষ পর্যন্ত সেই সাদ্দামের ওভারেই তুলিতে দিলেন শেষ টান।

    অথচ একটা সময় মনে হচ্ছিল, ঢাকা অন্তত ১৭০-১৮০ করবেই আজ। ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই ১০০ পেরিয়ে গেল ঢাকা। ক্রিজে তখন সাঙ্গাকারা-নারাইন, ঢাকা হারিয়েছে মাত্র দুই উইকেট। ১৮০ তখন মনে হচ্ছিল খুবই সম্ভব। কিন্তু সেখান থেকে ঢাকাই অলআউট হয়ে গেল ১২৮ রানে, শেষ ৮ উইকেট হারাল মাত্র ২৪ রানে।

     নারাইনকে ওপেনিং খেলানোর ফাটকাটা আজ প্রথমবারের মতো কাজে লেগে গিয়েছিল। একাদশে শুরুতেই ছিল চমক, আফ্রিদিকেই দলে রাখেনি ঢাকা। অভিষেক হচ্ছে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমিরের। লুইস আর মেহেদী মারুফ হাসান আলীর প্রথম ওভারেই আউট হয়ে গেলেন। ১২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ঢাকা তখন কাঁপছে।

    কিন্তু হঠাৎ করেই ওপেনার বনে যাওয়া নারাইন ঠিক করলেন, আজকের দিনটা তাঁর হবে। যে রশিদ খানের সবচেয়ে বড় হুমকি হওয়ার কথা ছিল, তাঁর ওভারেই ছয় মেরে বার্তা দিলেন। পাওয়ারপ্লেতে ৪৯ রান তুলল ঢাকা, তবে এরপর আরও বেশি বেড়ে গেল রানের গতি।

     

     

    এর মধ্যে ৩০ বলেই নারাইন পেয়ে গেলেন ফিফটি, সাঙ্গা একটু স্লথ হলেও রানের চাকাটা সচল ছিল ভালোমতোই। ১৩তম ওভারে এসে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন সাঙ্গাকারা, পরের ওভারে সাইফ উদ্দিনকে চার-ছয় মারার পর আউট হয়ে গেলেন নারাইনও। ৪৫ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ঢাকাকে দিয়েছেন দারুণ একটা ভিত্তি।

    এর মধ্যে রশিদ খান চেপে ধরেছেন ঢাকাকে, তবে এরপর সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিলেন ফিল্ডিং করে। রান নিতে গিয়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন পোলার্ড, রশিদের দুর্দান্ত থ্রোটা ঢোকার আগেই ভেঙে দিল স্টাম্প। ১৬তম ওভারে মোসাদ্দেককে আউট করে তৃতীয় উইকেট পেলেন হাসান আলী, ১১৭ রানে ঢাকা হারাল ছয় উইকেট।

    এরপর জহুরুল এলবিডাব্লিউ হয়ে গেলেন রশিদ খানের বলে, সাকিব বাজে এক শটের খেসারত দিলেন সাইফের বলে বোল্ড হয়ে। আর শেষ দুই উইকেট নিয়ে ঢাকার লেজটা ছেঁটে দিলেন হাসান আলী, হয়ে গেল তাঁর পাঁচ উইকেট। অবিশ্বাস্য এক ধসে ১২৮ রানেই অলআউট হয়ে গেল ঢাকা। দিন শেষে জয়ের জন্য যা আর যথেষ্ট হয়নি।