• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    রাজশাহীকে হারিয়ে দিলেন অবিশ্বাস্য আরিফুল

    রাজশাহীকে হারিয়ে দিলেন অবিশ্বাস্য আরিফুল    

    রাজশাহী কিংস ২০ ওভারে ১৬৬/৮ (স্মিথ  ৬২, মুশফিক ৫৫; জুনাইদ ৪/২৭)

    খুলনা টাইটানস ১৯.২ ওভারে ১৬৮/৮ (মাহমুদউল্লাহ ৫৬, আরিফুল ৪৩*; সামি ৩/২৯)

    ফলঃ খুলনা ২ উইকেটে জয়ী


     

    শেষ ৩ ওভারে দরকার ৩৬ রান, খুলনার জয়ের আশা তখন অনেকটাই নিভু নিভু। কিন্তু আরিফুল হক সেখান থেকেই দায়িত্বটা তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। ১৯ বলে ৪৩ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে খুলনাকে এনে দিলেন ২ উইকেটের জয়। সাত ম্যাচে এটি রাজশাহীর পঞ্চম পরাজয়, আর খুলনার চতুর্থ জয়।

    পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ একবার একদিকে হেলেছে তো আরেক বার ওদিকে। ৭ ওভারে খুলনার দরকার ৬০ রান। চার উইকেট চলে গেছে বটে, তবে ক্রিজে তখনো মাহমুদউল্লাহ ও কার্লোস ব্রাথওয়েট। খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এর মধ্যেই পেয়ে গেছেন ফিফটি, আগের ম্যাচের মতোই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়বেন বলেই মনে হচ্ছিল। বোলিংয়ে এলেন হোসেন আলী, প্রথম দুই বলে কোনো রান হলো না। তৃতীয় বলেই বোল্ড মাহমুদউল্লাহ।

     

     

    অবশ্য মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পরেও বেঁচে ছিল খুলনার আশা। তখনো ক্রজে ছিলেন ব্রাথওয়েট। শান্ত আউট হয়ে গেলেও এবারের ঝলক দেখানো আরিফুল তখনো ছিলেন। শেষ ৫ ওভারেও দরকার ছিল ৪৯ রান, খুব কঠিন সমীকরণ নয়। ব্রাথওয়েট তো তখনো ছিলেনই। কিন্তু ফ্রাঙ্কলিনের ১৭তম ওভারেই নিচু হয়ে যাওয়া বলে বোল্ড হয়ে গেলেন ব্রাথওয়েট। খুলনার আশার প্রদীপটা তখনই প্রায় নিভু নিভু হয়ে গেল। কিন্তু আরিফুল ভেবেছিলেন অন্য কিছু। শেষ উইকেটে জুনায়েদ খানকে সঙ্গী করে সেখান থেকেই এনে দিলেন অবিশ্বাস্য এক জয়। হোসেন আলীর ১৮তম ওভার থেকে নিলেন ১৮ রান, সামির পরের ওভারে এলো ৯। শেষ ওভারে স্মিথের বলে ছয় মেরে ম্যাচ প্রায় নিয়ে এলেন হাতের মুঠোয়। পরের বলে চার মেরেই নিশ্চিত করলেন জয়।

    তার আগে রাজশাহীর শুরুটাও ভালো হয়নি। তিন ওভার শেষে রান ২১, কিন্তু স্কোরকার্ডে তখনই নেই তিন উইকেট। ফর্মে থাকা মুমিনুল হক, জাকির হাসান দুজনই আউট হয়ে গেছেন। ফিরে গেছেন কেন্ট থেকে আসা ইংলিশ ওপেনার ড্যানিয়েল বেল ড্রামন্ড। সেখান থেকেই পালটা আক্রমণ শুরু করলেন ডোয়ান স্মিথ ও মুশফিকুর রহিম। একটা সময় মনে হচ্ছিল, ১৮০ পর্যন্ত অনায়াসেই হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রান ১৭০ এর বেশি হলো না।

    কালই মাত্র উড়ে এসে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্মিথ। অনুশীলন ছাড়াই আজ ছিলেন একাদশে, বিস্ফোরক এক ইনিংসে রাজশাহীকে দেখালেন পথ। তৃতীয় ওভারেই রাহীকে তিন চারে মেরে স্মিথ আভাস দিয়েছিলেন, দিনটা তাঁড় হতে পারে। ওই ওভারেই জায়েদের বলে প্রসন্নর দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরে গেলেন জাকির।

    মুশফিকের জন্যো ম্যাচটা ছিল রানখরা কাটানোর মোক্ষম একটা উপলক্ষ। এবারের বিপিএলে একদমই হাসেনি ব্যাট, সিলেটের সঙ্গে ২৫ রান ছিল সর্বোচ্চ। আজ প্রথম বলেই চার মেরে সেই খরা কাটানোর আভাস দিলেন। ওপাশ থেকে স্মিথও সঙ্গে যোগ দেওয়ায় পাওয়ারপ্লেতে ৫৬ রান এসে গেল রাজশাহীর । এর মধ্যে ব্রাথওয়েটের এক ওভার থেকে স্মিথ একাই নিলেন ১৭ রান।

     

     

    সেই ঝড় চলল আরও বেশ কিছুক্ষণ। প্রসন্নর এক ওভারে দুই ছয় মারলেন স্মিথ, ২৯ বলে ওই ওভারেই এলো ফিফটি। ১০ ওভার শেষে রাজশাহীর রান ৯৭, ২০০-ও তখন মনে হচ্ছিল সম্ভব।

    সেখান থেকে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে খুলনা। এই মৌসুমের প্রথম ম্যাচের প্রথম বলেই বাজিমাত আফিফ হোসেনের, স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন বিপজ্জনক হতে থাকা স্মিথ। ৩৬ বলে ৬২ রানে তখন দিয়ে গেছেন বড় কিছুর ভিত। মুশফিকও ছিলেন দারুণ, শফিউল ও আফিফের বলে দুইটি ছয়ও মারলেন। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে পেয়ে গেলেন বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি।

    কিন্তু মুশফিকের আউটের পর আবার পথ হারিয়ে ফেলল রাজশাহী। স্যামি, মিরাজ, সামিরা শুধু উইকেটে এলেন গেলেন। শেষ ৫ ওভারে তাই ৩২ রানের বেশি হলো না।