• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    অবিশ্বাস্য আরিফুলের দারুণ আত্মবিশ্বাস

    অবিশ্বাস্য আরিফুলের দারুণ আত্মবিশ্বাস    

    ১১তম ম্যাচ, প্রতিপক্ষ চিটাগং ভাইকিংস। খুলনা টাইটানসের আগে ব্যাটিং করা ইনিংসে আরিফুল হক ছয়ে নেমে করলেন ২৫ বলে ৪০। কিন্তু ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা আবু জায়েদ চৌধুরি। 

    ১৬তম ম্যাচ। একই প্রতিপক্ষ। আবার আগে ব্যাটিং। সাতে নেমে আরিফুলের রান ২৪ বলে ৩৪। কিন্তু ম্যাচসেরা ওপেনার রাইলি রুশো, তার ২৬ বলে ৪৯ রানের ইনিংসের জন্য। 

    ২৩তম ম্যাচ। এবার রাজশাহী কিংস প্রতিপক্ষ। এবার পরে ব্যাটিং। এবার আরিফুল নামলেন আটে। ৩৪ বলে খুলনার দরকার ৫৩ রান। এবার আর আরিফুল পার্শ্বনায়ক নন। তিনি যে আগেই জানতেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল যে আমি শেষ পর্যন্ত টানতে পারলে আমরা জিতব। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল এটা!’ 

    সেই আত্মবিশ্বাসী আরিফুল শেষ ওভারের প্রথম বলেই পেলেন রসগোল্লা ধরনের ফুলটস। ছয়। এরপর নীচু হয়ে যাওয়া ফুলটসে সুইপ করলেন, আগের ওভারেই স্মিথের রসগোল্লা ধরনের ফুলটসটা মাঠের বাইরে পাঠিয়েছিলেন, এজ লেগে ফাইন লেগকে ছাড়িয়ে গেল সেটা। ফিল্ডারের নড়াচড়ারও সুযোগ নেই, আরিফুল রান নেওয়ার জন্য সোজা না দৌড়ে ছুটলেন ড্রেসিংরুমের দিকে। হেলমেটটা খুলে ফেলে দিলেন, ব্যাটটা ছাড়লেন, যে ভোঁ দৌড়টা দিলেন, তাতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে স্প্রিন্টে পদক জেতার মতো। সতীর্থদের ভিড়ে হারিয়ে গেলেন খানিক বাদেই। আরিফুল এবার ম্যাচসেরা। আরিফুল এবার নায়ক। 

    স্মিথের বলটাতে আরিফুল ছয়ই মারতে চেয়েছিলেন। আর নাহলে দুই। ‘আরেকটা ব্যাপার ছিল, ফিল্ডার যখন অনেক বাইরে থাকে, মিস হিট হলেও দুই রান হওয়ার সুযোগ থাকে।’ দুইয়ের অবশ্য দরকার পড়লো না। তবে স্মিথের ওভারের আগের ওভারেই আরিফুল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আজ নেমেছেন নায়ক হওয়ার জন্যই। হোসেন আলির সে ওভারের পরিকল্পনাও ছিল তেমনই। 

     

     

    ‘হোসেন আলির ওভারটিই লক্ষ্য বানিয়েছিলাম। জানতাম, এরপর বিদেশী বোলার আসবে। হোসেন চেষ্টা করছিল ব্লকহোলে বল করতে। আর আমার লক্ষ্য ছিল মারব। হয়ত বড় শট খেলব, নয়তো দুই নেব। এটাতে সফল হয়ে গেছি।’

    ‘ব্যাটিংয়ের সময় দু-একটি শট ব্যাটের মাঝখানে লাগলে এমনিই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। আমার একটু সময় লাগে। ৫-৬-৭ বল যদি থাকতে পারি, রান করি, তাহলে একটু নির্ভার হই। এর আগে একটু আলগা থাকি।’ আলগা ছিল আরিফুলের ব্যাটিং পজিশন। তবে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জুগিয়েছেন বিশ্বাস। আর আগে ‘ব্যালান্স’ নিয়ে সমস্যা ছিল। ‘বডি ট্রান্সফার’টা হতো না ঠিকঠাক। সেটা নিয়ে কাজ করেছেন কোচ মাহেল জয়াবর্ধনে। আর আরিফুল শিখছেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস থেকেও, ‘এভাবে মাচ জিতলে আসলে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। আবার এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে মনে পড়ে যে এভাবে ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। এসব অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’ 

    আরিফুল যে খুলনার কাছে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন, সেটা তিনি জানেন তো!