• অ্যাশেজ ২০১৭-১৮
  • " />

     

    ভিনসদের লড়াইয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রতি-আক্রমণ

    ভিনসদের লড়াইয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রতি-আক্রমণ    

    প্রথম টেস্ট, গ্যাবা, প্রথম দিনশেষে
    টস- ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ১৯৬/৪ (ভিনস ৮৩, স্টোনম্যান ৫৩, কামিন্স ২/৫৯)


    অ্যাশেজের প্রথম দিনের রোমাঞ্চে দুইটা বিস্ময় আছে। এক, ন্যাথান লায়নের উইকেট না পাওয়া। দুই, ন্যাথান লায়নের একটা ফিল্ডিং। সারাদিনই টার্ন পেয়ে গেছেন লায়ন, পাননি শুধু উইকেট। আর পয়েন্ট থেকে ছুটে এসে কাভার হয়ে করা তার থ্রোতে রান-আউট হয়েছেন দিনে ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যান জেমস ভিনস। ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ড অতি সতর্ক ছিল কিনা, সেটা একটা ব্যাপার, অস্ট্রেলিয়ার পেস কতোটা ভীতি সঞ্চার করতে পারলো, সেটা আরেকটা ব্যাপার। তার চেয়েও বড় ব্যাপার, শুরু হয়ে গেছে অ্যাশেজ! 

    পুরো দিনই উইকেট পাওয়া সম্ভাবনা জাগিয়ে গেছেন ন্যাথান লায়ন। ১৮তম ওভারে তাকে এনেছিলেন স্মিথ, টার্ন পাওয়া শুরু করেছেন তখন থেকেই। উইকেটের সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন ভিনসের বিপক্ষে। টার্ন, সোজা, টার্নের ফাঁদে পড়ে ভিনসের ব্যাট এজ দিয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ার আলোচিত উইকেটকিপার টিম পেইন সেটা রাখতে পারেননি। ভিনসের রান তখন ৬৮, যিনি পরে রান-আউট হলেন ৮৩ রান করে। 

    রানটা ছিল, দুই ব্যাটসম্যানের এ নিয়ে কোনও সন্দেহই ছিল না! কাভারে খেলে ভিনস ছুটলেন, প্রথম ফিফটি পাওয়ার দিনেই প্রথম সেঞ্চুরি ভিনসকে ডাকছিল তখন। পয়েন্ট থেকে ছুটে এসে লায়ন দেখালেন দারুণ এক ফিল্ডিং। ধরলেন, বন্দুকের মতো নিজেকে তাক করলেন স্টাম্প বরাবর, গুলির মতো ছুড়লেন বল। এ অ্যাশেজে এলইডি স্টাম্পের আলো জ্বলে উঠলো, টিভি আম্পায়ারের কাছে সঙ্কেত পাঠাতে পাঠাতে আম্পায়ার আলিম দারের হাসিটাই বলে দিচ্ছিল, লায়ন ছিলেন কতোটা বিস্ময়কর! ক্যারিয়ারের ৮ম ইনিংসে এসে প্রথম ফিফটি পেয়েছেন ভিনস, উঁকি দিচ্ছিল প্রথম সেঞ্চুরিটাও। 

    দিনের শুরুতেই অ্যালেস্টার কুকের উইকেটে নড়বড়ে ইংল্যান্ডকে ধাতস্থ করেছেন এই ভিনস, সঙ্গে ছিলেন মার্ক স্টোনম্যান। ঝুলিতে হাজার দশেক রান থাকতে পারে, কিন্তু অ্যাশেজের প্রথম সকালে কুকও ভুল করতে পারেন। মিচেল স্টার্কের সোজা লাইনের বলে শরীর থেকে অনেক আগ বাড়িয়ে খেলতে গেলেন, না হলো ‘চেক’, না হলো ‘আক্রমণ’। পিটার হ্যান্ডসকম্বের স্লিপের সকালটা দারুণ হলো কুকের ক্যাচ পেয়ে। আর ‘মভেম্বর’ পালনে গোঁফ রাখা স্টার্ক দিলেন প্রথম আভাস, অ্যাশেজটা সহজ হচ্ছে না ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের। 

     

     

    রক্ষণাত্মক থেকেও কাজটা সহজ বানিয়ে ফেলেছিলেন ভিনস-স্টোনম্যান। ভিনস ছিলেন দারুণ ছন্দে, আগের ৭ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১ রানের রেকর্ডের ব্যাটসম্যান যেন এদিন হাজির নতুন রুপে। বাউন্সার সামলিয়েছেন দারুণ ভাবে, সিম মুভমেন্টে ছিলেন দারুণ সচেতন। প্রথম সেশনটাও তাই ইংল্যান্ড ছিল অনড়।

    বৃষ্টি নেমেছিল লাঞ্চের সময়েই, দ্বিতীয় সেশনের কিছু গেছে তারই ভাগে। শেষদিকে প্যাট কামিন্সের সিম মুভমেন্টে ভেঙ্গে গেছে স্টোনম্যানের পাথরসমান রক্ষণ, তার আগেই পেয়েছেন দারুণ এক ফিফটি। স্টার্ক বা হ্যাজলউডের চেয়েও সিম মুভমেন্টে বেসি কার্যকর ছিলেন প্যাট কামিন্স। স্টোনম্যানকে বোল্ড করেছেন সিমে পড়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে। আর জো রুট এলবিডাব্লিউ হয়েছেন ফুললেংথের বলে। স্টার্ককে শুরুতে দারুণ টাইমিংয়ে এমন বলেই একটা চার মেরেছিলেন, তবে কামিন্সের রিভার্স সুইংয়ের আভাযুক্ত বলে আর পারেননি। দিনের প্রথম রিভিউ ছিল সেটাই, যেটা নিয়ে সফল স্মিথ-কামিন্সরা। 

    উঠে যাওয়ার সময় মইন আলিকে কী যেন বুঝাচ্ছিলেন রুট, লায়নকে ছয় মেরে মইন সেটারই অনুবাদ করলেন কিনা, কে জানে! নড়বড়ে মনে হলেও বেশ কিছু শট খেলেছেন ডেভিড মালান, লায়নকে কাট করে মারা চারের মতো। 

    দ্বিতীয় নতুন বল নিতে দেরি হয়নি স্মিথের, স্টার্ক যেন কপি করলেন কামিন্সের রুট-উইকেটের বলটাই। লেগস্টাম্পের একটু বাইরে পড়ায় রিভিউটা নষ্ট হলো অস্ট্রেলিয়ার, দিনের খেলারও শেষ ওখানেই।