• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    রংপুরের ৯৭ রান তাড়া করতেই ঘাম ছুটে গেল কুমিল্লার

    রংপুরের ৯৭ রান তাড়া করতেই ঘাম ছুটে গেল কুমিল্লার    

    রংপুর রাইডার্স ১৭.১ ওভারে ৯৭

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৯.৩ ওভারে ১০০/৬

    ফলঃ কুমিল্লা ৪ উইকেটে জয়ী


    লক্ষ্য মাত্র ৯৭ রান। হেসেখেলেই তা জেতার কথা কুমিল্লার। অথচ সেই রান তাড়া করতেই রীতিমতো কালঘাম ছুটে গেল। শেষ ওভারে গিয়েই রংপুরের সেই রান টপকাল কুমিল্লা। একই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল, পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে থেকেই শেষ চারে যাচ্ছে।

     

    চট্টগ্রামের রানপ্রসবা উইকেটে বিপিএল যেন একটু টি-টোয়েন্টির আমেজটা ফিরে পেয়েছিল। সেখান থেকে ঢাকায় এসে আবারও বিপিএল যেন ভুগতে শুরু করল রানখরায়। এতোটাই যে, টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ১০০র নিচে স্কোরও দেখল। কে জানত, সেই রানটাই আরেকটু হলে যথেষ্ট হয়ে যাবে! শেষ দুই ওভারেও যখন দরকার ১০ রান, মাশরাফির বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন সাইফউদ্দিন। তখন চার উইকেট আছে কুমিল্লার, সমীকরণ দাঁড়াল আট বলে সাত। কিন্তু নেমেই মাশরাফির মুখোমুখি প্রথম বলেই ছয় মেরে জয়টা মুঠোয় নিয়ে এলেন হাসান আলী। পরের ওভারে স্যামুয়েলস চার মেরেই জয় নিশ্চিত করলেন কুমিল্লার।

    তার আগে ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন তামিম, কিন্তু সোহাগ গাজীর বলটা কীভাবে যেন মিস করেছে স্টাম্প। এর পরে বলে অবশ্য ছয় মারলেন তামিম। তবে আউট হতে পারতেন পরের ওভারেই, মাশরাফির বলে ডাউন দ্য উইকেটে বেরিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উইকেটের ঠিক পেছনে দাঁড়িয়েও মোহাম্মদ মিঠুনের বলটা ধরতে পারলেন না। কে জানে, ম্যাচের গল্পটা তখন অন্যরকমও হতে পারত।

    মাশরাফির পরের ওভারেই অবশ্য আউট হয়ে গেছেন লিটন দাশ। পাওয়ারপ্লেতে রান উঠল ৩১, তখনও অবশ্য কুমিল্লার জয়টা প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু পরের ওভারেই নাহিদুলের দারুণ এক ক্যাচে ফিরলেন তামিম, কুমিল্লার ৪৭ রানের মাথায় আউট হলেন বাটলারও। ইমরুল কায়েসের ২৬ বলে ১৪ রানের সংগ্রামী ইনিংসও শেষ হলো একটু পর। কিন্তু রংপুরের সত্যিকারের আশা পেল ৭৩ রানে শোয়েব মালিক ফিরে যাওয়ায়। হঠাৎ করেই যেন কঠিন হয়ে গেল জয়ের সমীকরণ। যে জয় পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত।

     প্রথম বল থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, আজকের উইকেটে রান করতে সংগ্রাম করতে হবে অনেক। কিন্তু একদম শুরুতেই যে ধাক্কা খেল, সেটাই যেন কাল হয়ে এলো রংপুরের জন্য। ক্রিস গেইল এখন পর্যন্ত খুব বড় কিছু করতে পারেননি, কিন্তু মোটামুটি একটা শুরু এনে দিয়েছেনই। আজ সেই সুযোগও পেলেন না, মেহেদী হাসানের প্রথম বলেই লাইন মিস করে হয়ে গেলেন বোল্ড। ওই ওভারেই আবার আঘাত মেহেদীর, এবারও লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেলেন জিয়াউর রহমান। অন্য পাশ থেকে তরুণ আফগান মুজিবুর রহমানও চেপে ধরেছেন।

    এর মধ্যে মোহাম্মদ মিঠুনই যা একটু স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। তারপরও পাওয়ারপ্লেতে রান ৩২ এর বেশি হলো না। কিন্তু সাইফ উদ্দিনের বলে দারুণ এক ক্যাচে সেই মিঠুনও ফিরে গেলেন ১৪ বলে ১৭ রান করে।

    ব্রেন্ডন ম্যাককালামের জন্য এবারের বিপিএলটা বেশ হতাশারই যাচ্ছে। আজও উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য অনেকটা সময় নিয়েছেন, কিন্তু আগের ম্যাচের মতো এবারও মেহেদীর শিকার। ৩১ বলে ২৪ রানের একেবারেই অ-ম্যাককুলামীয় ইনিংস খেলে যখন ফিরে গেছেন, ৫৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে। তার আগেই রান আউট হয়ে গেছেন বোপারা, ক্রিজে ঢোকার মুহূর্তে হঠাৎ ব্যাট আটকে যাওয়াতেই শিকার হতে হয়েছে দুর্ভাগ্যের।

    এরপর রংপুরের গল্পটা শুধু একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ার। নাহিদুল সুযোগ পেয়ে এখন পর্যন্ত ভালোই করেছেন, কিন্তু আজ ৯ বলে ৬ রান করে বোল্ড হয়ে গেলেন মেহেদীর বলে। মাশরাফি বিন মুর্তজার কাঁধেই তখন গুরুদায়িত্ব, কিন্তু প্রতিদিন কি আর মাশরাফি আর বৈতরণি পার করাবেন? ৯ রান করে সাইফের দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে গেলেন রংপুর অধিনায়কও। ৭৪ রানেই তখন রংপুর হারিয়ে ফেলেছে ৮ উইকেট।

    শেষ পর্যন্ত সোহাগ গাজীর ১০ বলে ১২ রানে ১০০রত কাছাকাছি যেতে পেরেছে রংপুর। ৪ উইকেট নিয়ে মেহেদী সফলতম বোলার, ৩ উইকেট নিয়ে সাইফও ছিলেন দোসরের ভূমিকায়।