রাজশাহীকে গুঁড়িয়ে শেষ চারে ঢাকা
ঢাকা ২০৫/৫, ২০ ওভার (নারাইন ৬৯, ডেনলি ৫৩, সামি ১/২৯)
রাজশাহী ১০৬ অল-আউট, ১৮.৩ ওভার (প্যাটেল ১৮, মুমিনুল ১৯, সাকিব ৪/৮, মোসাদ্দেক ২/৯)
ফল : ঢাকা ৯৯ রানে জয়ী
বিপিএলে সবচেয়ে বেশি রানে জয়ের রেকর্ডের তালিকায় ঢাকা এখন দুইয়ে। অবশ্যই রাজশাহীর সঙ্গে ম্যাচের পর অদলবদল হয়েছে সে তালিকায়। এই পরিসংখ্যানটাইই বলে দেয়, ঢাকার কাছে রীতিমতো উড়ে গেছে রাজশাহী। এ জয়ে শেষ চারও নিশ্চিত করেছে সাকিব আল হাসানের দল।
২০৬ রানের লক্ষ্য, রাজশাহীর কাছে এর চেয়ে প্রমত্তা পদ্মা সাঁতরে পার হওয়াও হয়তো বেশি সহজ মনে হচ্ছিল! প্রথম ওভারে এলেন মোসাদ্দেক, রাজশাহী নিল এক রান। সাকিবের পরের ওভারটা মেইডেন, সঙ্গে আবার দুইটি উইকেট! লেন্ডল সিমন্স ও লুক রাইট, বোল্ড দুইজনই।
সেই যে খেই হারালো রাজশাহী, রান-তাড়ায় তারা ফিরতে পারেনি আর। স্যামিট প্যাটেল বা একেবারে শেষে গিয়ে মুস্তাফিজের ‘বিনোদনমূলক’ ছয়, যথেষ্ট হয়নি কিছুই।
দ্বিতীয় ওভারে এসে রাজশাহীর আজকের অধিনায়ক মুশফিককে এলবিডাব্লিউ করেছেন সাকিব, প্যাটেলও ক্যাচ দিয়েছেন তার বলেই। সাকিবকে পঞ্চম উইকেট থেকে বঞ্চিত করেছেন কাজী অনিক ও মুস্তাফিজ। তবে ৪-১-৮-৪, বোলিং ফিগারটা সাকিবকে দারুণ তৃপ্তিই দেবে! টেইল-এন্ডারে মিরাজ ও সামি, দুজনের উইকেট একই ওভারে নিয়েছেন সাদমান ইসলাম। জাকির হাসান ও শেষে গিয়ে মুস্তাফিজের উইকেট গেছে মোসাদ্দেকের ভাগে।
ঢাকার ফিল্ডিংয়ে খুঁত বলতে, মুমিনুলের একটা ক্যাচ ঠিকমতো পড়তে না পেরে ছয় করে দিয়েছিলেন মোসাদ্দেক। তবে সেই মিস অবশ্য রাজশাহীর অদ্ভুতূড়ে ফিল্ডিংয়ের তুলনায় কিছুই না!
রাজশাহীর ফিল্ডিং দেখলে এ প্রশ্নও জাগতে পারে, আসলে কোনটি বেশি অদ্ভুত? মিরপুরের উইকেট, নাকি রাজশাহীর ফিল্ডিং?
৪র্থ ওভারে মুমিনুলকে দিয়ে শুরু। সুনীল নারাইন ক্যাচ তুলে দেন, রাজশাহীর ফিল্ডাররা সেসব ফেলে দেন। সহজ, খুব সহজ, অতি সহজ বা একটু কঠিন, মুমিনুল-উসামা-প্যাটেল-মিরাজরা ছেড়েছেন সব ধরনের ক্যাচই। শুধু ফিল্ডার কেন, উইকেটের পেছনে জাকিরও হাতছাড়া করেছেন স্টাম্পিংয়ের সুযোগ। নারাইন সেসবের জবাব দিয়েছেন ছয় মেরে, মিরাজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ৩৪ বলে ৬৯ রান। স্কোরকার্ডে শুধু লেখা থাকবে না, পাঁচবার পরিষ্কার জীবন পেয়েছেন এই ক্যারিবীয় বাঁহাতি!
এই জীবনদানের মহড়ার আগেই শুরু হয়েছে মিরপুরের উইকেটের অদ্ভুত আচরণ। প্রথম ম্যাচে রানের দেখাই পাওয়া যায়নি এখানে, পরের ম্যাচে শুরু হয়েছে অসমান বাউন্স। কোনও বল হঠাৎ লাফিয়ে উঠে বাই চার হয়েছে, কোনওটা আবার নেমেছে পায়ের পাতাসমান উচ্চতায়!
নারাইনের জীবন পাওয়া ও স্ট্রোকপ্লেতে মুগ্ধ হয়েই যেন একটু নিরব ছিলেন জো ডেনলি। ফিফটি করেছেন তিনিও। তবে ৫৩ রান করতে তার লেগেছে ৫৪ বল।
এরপর শুরু হয়েছে পোলার্ডের ঝড়। ১৪ বলে ৩৪ করেছেন ৪ ছয়ে, তার ক্যাচটা ধরে দায়মোচনের চেষ্টা করেছেন উসামা। তার আগে ৭ বলে ১৪ রান করা আফ্রিদির ক্যাচ ধরেছেন মুমিনুল, সেটাও দুইবারের চেষ্টায়। এতকিছুর পর যে ঢাকার স্কোর, ২০৫-এ আটকে গেছে, কিছুটা অদ্ভুত বোধহয় সেটাই!