শেষের ঝড়েই খুলনার কাছে হারল কুমিল্লা
খুলনা টাইটান্স ২০ ওভারে ১৭৪ /৬ ( শান্ত ৩৭, আরিফুল ৩৫; আল আমিন ৩/৫২)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ২০ ওভারে ১৬০/৭ (তামিম ৩৬, মালিক ৩৬; জায়েদ ২/৩৫)
ফলঃ খুলনা ১৪ রানে জয়ী
প্লে অফে কোন চারটি দল খেলবে, নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। কুমিল্লাও শীর্ষে থাকাটা নিশ্চিত করে ফেলেছে, খুলনার জন্য শীর্ষ দুইয়ে থাকতে অবশ্য জয়ের বিকল্প ছিল না। আপাত অগুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচে মিরপুরের গ্যালারিও অনেকটাই ফাঁকা। তারপরও সেই ম্যাচই শেষ দিকে এসে ছড়াল রোমাঞ্চ, খুলনার ১৭৪ রান তাড়া করে শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা ম্যাচটা হেরে গেছে ২০ রানে।
মিরপুরের এই উইকেটে ১৪০-১৫০ রানই জয়ের জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিত। দুই দিন আগে তো ৯৭ রান নিয়েই জিতে যাচ্ছিল রংপুর। আজও বল মাঝে মাঝেই নিচু হয়ে যাচ্ছিল, মাহমুদউল্লাহর একটা বল তো উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে চারই হয়ে গেছে। খুলনার ১৭৪ রানটা তাই ব্যাটিং উইকেটে ২২০-২৩০ এর চেয়ে কম নয়।
সেই রান তাড়া করে কুমিল্লার শুরুটা হয়েছিল দারুণ। লিটন দাশ না থাকায় সলোমন মিরে সুযোগ পেয়েছিলেন ওপেনিংয়ে। মাহমুদউল্লাহ যে বলে আউট হলেন, তাতে তাঁর করার কিছু ছিল না অবশ্য। অনেকটাই নিচু হয়ে আসা বলটা স্টাম্পের পাশ দিয়ে যাওয়ার আলতো টোকায় ফেলে দিয়েছে বল। কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ১ রান, মিরের রান শুন্য।
একটু পরেই আউট হয়ে যেতে পারতেন ইমরুল কায়েস, কিন্তু সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। সেই সুযোগ নিয়ে তামিমকে ভালোই সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন ইমরুল। এই উইকেটেও চোখের জন্য সুখকর দারুণ সব শট খেলেছেন তামিম, দুজন মিলে আট ওভারের মধ্যে ৬৩ রানও যোগ করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এরপরেই হাওয়েলের বলে আউট হয়ে গেলেন ইমরুল, দুই ওভার পর ৩৩ বলে ৩৬ রান করে ব্রাথওয়েটের বলে ফিরলেন তামিমও।
তখনও ১০ ওভারে ১০০-এরও বেশি রান দরকার। কিন্তু শোয়েব মালিক ও জস বাটলার ছিলেন, কুমিল্লার আশাটাও বেঁচে ছিল। কিন্তু বাটলার আজ আরও একবার ব্যর্থ, আউট হয়ে গেছেন ১৬ বলে ১১ রান করে। মালিক ছিলেন, বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে একাই চেষ্টা করেছেন বৈঠা বাইবার। ২৩ বলে ৩৬ রানের ইনিংসে আশাও দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু মোহাম্মদ ইরফানের বলে মালিকের আউটের সঙ্গে শেষ হয়ে যায় কুমিল্লার আশাও। শেষ ওভারের আগেই খুলনার জয় নিশ্চিত প্রায়, জয়ের জন্য তখন দরকার আরও ৩১ রান। কুমিল্লা ৮ রানের বেশি নিতে পারেনি।
তবে খুলনার ১৭৪ রানে মিরপুরের ‘পাহাড়ে’ উঠেছে আসলে শেষ তিন ওভারেই। ১৭ ওভার শেষেও খুলনার রান ১২৪, শেষ তিন ওভারে ১০ করে নিলেও হয় ১২৪। ১৮তম ওভারে আল আমিনের প্রথম দুই বলে আরিফুল মারলেন দুই চার। তার চেয়েও বড় কথা, ওই ওভারেই ব্রাথওয়েটের ক্যাচ ছাড়লেন আল আমিন। সুযোগটা ভালোভাবেই নিলেন ব্রাথওয়েট, পরের দুই বলে মারলেন চার-ছয়। ওই ওভার থেকেই এলো ১৯ রান। মেহেদী হাসান রানার পরের ওভারে ব্রাথওয়েট রান আউট হলেন বটে, কিন্তু রান এলো ১২। খুলনার রান তখন পেরিয়ে গেছে ১৫০। শেষ ওভারে আবারও আল আমিনের বলে ঝড় আরিফুলের, বেনি হাওয়েলও যোগ দিলেন তাঁর সঙ্গে। ওই ওভার থেকে আবারও এলো ১৯ রান। এর মধ্যে আবার হাওয়েলেরও ক্যাচ ছেড়েছে কুমিল্লা। শেষ পর্যন্ত সেটাই ব্যবধান হয়ে দাঁড়াল ম্যাচের শেষে।
তার আগে অবশ্য শান্ত দারুণ শুরু করলেও মাহমুদউল্লাহ-ক্লিঙ্গাররা ঠিক সেই দ্রুত রান করতে পারেনি। শান্তর ২১ ওভার ৩৭ রানের পরও তাই রানের গতি খুব সচল ছিল না। কিন্তু কে জানত, শেষ তিন ওভারের ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যাবে সবকিছু!