দুই দিনের টি-টোয়েন্টি জিতে ফাইনালে রংপুর
রংপুর ১৯২/৩, ২০ ওভার (চার্লস ১০৫*, ম্যাককালাম ৭৮, হাসান ১/২৩)
কুমিল্লা ১৫৬ অল-আউট, ২০ ওভার (লিটন ৩৯, তামিম ৩৬, রুবেল ৩/৩৬, উদানা ২/২৪)
ফল : রংপুর ৩৬ রানে জয়ী
শেষটা হলো মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দিয়েই। পেছন ফিরে আল-আমিনের ক্যাচটা নিলেন, এক আসর বাদে আবার বিপিএলের ফাইনালে গেল তার দল। ২০১৫ সালে কুমিল্লার চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি, আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে সেই কুমিল্লাই হারলো মাশরাফির বর্তমান দল রংপুরের কাছে! আক্ষরিক অর্থেই দুইদিন ধরে চললো এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। কাল বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হতে পারতো এই ম্যাচ, সেক্ষেত্রে ফাইনালে যেত কুমিল্লা। অতিরিক্ত দিনে হারতে হলো তাদেরকেই। জনসন চার্লসের সেঞ্চুরি, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর বোলাররা মিলে ফাইনালে নিয়ে গেছেন রংপুরকে।
এলিমিনেটর ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্রিস গেইল। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে করলেন জনসন চার্লস। আগেরদিন অপরাজিত ছিলেন ৪৬ রানে, এদিন শেষ ওভারে পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে পূর্ণ করলেন সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারে প্রথমবার। ৭ ছয়, ৯ চারে ৬৫ বলে অপরাজিত ছিলেন ১০৫ রানে। বিপিএলে এটি ১১তম সেঞ্চুরি, এ আসরের দ্বিতীয়।
প্রথম দুই ওভারে এসেছিল মাত্র ৬ রান। গ্রায়েম ক্রেমারকে ছয় মেরে রানের গতি বদলানোর শুরুটা করলেন ম্যাককালাম। বিপিএলে জ্বলে ওঠার উপলক্ষ্য এ ম্যাচকেই বানালেন ‘বি ম্যাক’। পরের দুই ওভারে এলো ৯ রান, যেন আরেকবার বিশ্রাম নিলেন ম্যাককালাম-চার্লস। এরপর অবশ্য কুমিল্লা বোলারদের স্বস্তিতে থাকতে দেননি দুইজন। শেষ ৮ ওভারে রংপুর তুলেছে ১০৫ রান।
আল-আমিনের এক ওভারে ম্যাককালামের তিন ছয়ে এসেছে ১৯ রান। ১৯তম ওভারে হাসান আলির শেষ বলে বোল্ড হয়েছেন ম্যাককালাম, ৪৬ বলে ৭৮ রানের ইনিংসে আছে ৯টি ছয়। শেষ ওভারে নেমে শূন্যতেই ফিরেছেন রবি বোপারা, আর চার্লসের সেঞ্চুরির জন্য স্ট্রাইকেই যাননি মাশরাফি।
রান-তাড়ায় রংপুরের ফিল্ডারদের কাছ থেকে শুরুতে সহায়তাই পেয়েছিলেন তামিম-লিটনরা, দুজনই জীবন পেলেন একাধিকবার। রান-আউট, ক্যাচের সুযোগ নিতে পারেননি রংপুরের ফিল্ডাররা। এক বলেই তো একই সঙ্গে জীবন পেলেন দুইজন, তামিম পেলেন দুইবার! তামিম এলবিডাব্লিউ হতে পারতেন, থ্রো ঠিক প্রান্তে হলে আউট হতে পারতেন দুইজনই। সেটা হয়নি, আউট হওয়ার আগে তামিম করেছেন ১৯ বলে ৩৬। মাশরাফিকে তেঁড়েফুঁড়ে মারতে এসে লং-অনে দিয়েছেন ক্যাচ।
এরপরই থিতিয়ে গেছে কুমিল্লা। ইমরুল কায়েস অধৈর্য্য হয়ে স্টাম্পড হয়েছেন গাজীর বলে। প্রথম ৫ ওভারে ৫৫ রান তোলা কুমিল্লা পরের ৯ ওভারে তুলেছে ৫১ রান। নাজমুল ইসলামের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়েছেন শোয়েব মালিক, আইসুরু উদানার ব্যাক অব আ লেংথ থেকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিঠুনকে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। সে ওভারেই স্যামুয়েলসের ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি উদানা।
৪২ বলে ৯৪ রান, কুমিল্লার তখন অসম্ভব এক যাত্রা। সেটি নেমে এল ২৪ বলে ৬০ রানের সমীকরণে, এর মাঝেই স্যামুয়েলস ক্যাচ দিয়েও ফিরে আসতে পেরেছেন নো-বল হওয়াতে। বাটলার বা স্যামুয়েলস বড় শটের চেষ্টা করে গেলেন, তবে উদানার অফস্টাম্পের বেশ বাইরের লাইনে বল করে যাওয়া ১৭তম ওভারে এলো মাত্র ৪ রান। স্যামুয়েলস অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন, উদানার তিনটি ওয়াইড অন্তত দেননি আম্পায়ার!
পরের ওভারের প্রথম বলেই লেংথ থেকে নিয়ে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন বাটলার, একটা ছয় মারার পর হুক করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়েছেন স্যামুয়েলসও। আল-আমিনের আগে সাইফউদ্দিন, হাসান, মেহেদি- বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন সবাই। ছয় বোলার ব্যবহার করেছেন মাশরাফি, উইকেট পেয়েছেন প্রত্যেকেই।