• বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    কয়টি ছয় মেরেছেন, নিজেও জানতেন না গেইল!

    কয়টি ছয় মেরেছেন, নিজেও জানতেন না গেইল!    

    ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে যখন মাঠ ছাড়ছেন, ক্রিস গেইলের নামের পাশে ১৮টি ছয়। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে নিজের এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয়ের রেকর্ডও ভেঙে ফেলেছেন। অথচ গেইল সংবাদ সম্মেলনে সবিস্ময়ে জানালেন, কয়টি ছয় মেরেছেন নিজেই জানেন না!

    ছয় এমনিতেই তাঁর জন্য একেবারেই ডালভাত। টি-টোয়েন্টিতেই শুধু ৮১৯ ছয় হয়ে গেছে, ধারেকাছেও নেই কেউ। আজ প্রথম ছয় পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেকটা সময়, কিন্তু একবার পাওয়ার পর সেই ছয় এসেছে বাঁধভাঙা নদীর মতো। সংবাদ সম্মেলনে যখন প্রশ্ন করা হলো ১৮টি ছয় মারার কথা, গেইল তখনই থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আট না আঠার? আমি তো আসলেই জানতাম না!’

    সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবেই এলো, ছয় মারার ক্ষেত্রে নিজের চেয়ে ভালো কি আর কাউকে দেখেছেন? গেইল এখানেও রসিকতা করে বললেন, ‘না না না, এরকম তো শুধু একজনই বিশ্বে আছে।’ সঙ্গে সঙ্গেই সংবাদ সম্মেলনে আবার হাসির ধুম।

     

    সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য একটু সিরিয়াস হলেন গেইল। নিজের উত্তরসূরির কথাও বলে গেলেন, ‘লুইস আসছে। ও তৈরি হচ্ছে আমার জায়গা নেওয়ার জন্য।’

    গেইলের ব্যাটিং মানেই বিনোদন, যেটির আশায় গ্যালারি ঠাসা হয়ে ছিল দর্শকে। সেই আশা ষোল আনাই মিটিয়েছেন গেইল। কিন্তু বয়সও হয়ে যাচ্ছে, শুনতে পাচ্ছেন বেলা শেষের ডাক। গেইলও সেটা জানেন, তবে নিজের সেই চিরায়ত দর্শনের কথাই মনে করিয়ে দিলেন, '১১ হাজার রান, অসাধারণ একটা অর্জন। সত্যি বলতে আমি এটা মানুষের জন্যই করি, তারা এটাই দেখতে চায়। আমি যতদিন সম্ভব মানুষকে বিনোদন দিয়ে যেতে চাই। যত বেশি সম্ভব শিরোপা জয় করতে চাই।’

    তবে গেইলের বিনোদন তো আজ শুধু মাঠে ছিল না, সংবাদ সম্মেলনেও ছিল আরও অনেক কিছু। নিজেকে টি-টোয়েন্টির ব্র্যাডম্যান মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবেও গেইল আবারও রসিকতা করে বললেন, ‘আমি তো নিজেকে সর্বকালের সেরা বলেই মনে করি!’

    কিন্তু নিজের এই ইনিংসকে কোথায় রাখবেন? টি-টোয়েন্টিতে তো এর আগেও ১৯টি সেঞ্চুরি পেয়েছেন, তবে ফাইনালে সেঞ্চুরি এটাই প্রথম। কিন্তু এর চেয়েও বড় ইনিংস খেলেছেন, এর চেয়ে বিস্ফোরকও ছিল সেগুলো। গেইল অবশ্য আজকের ইনিংসকে সেরা না বললেও প্রথম পাঁচের মধ্যেই রাখলেন, ‘১৭৫ তো অবশ্যই স্পেশাল। কারণ ওটা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসেই সেরা ইনিংস। তবে আজকেরটা আমি সেরা পাঁচের মধ্যেই রাখব।’

    আজকের ইনিংসটা অবশ্য একটা কারণে অবশ্যই আলাদা, এত সতর্ক হয়ে গেইল তো কমই শুরু করেন। বিশেষ করে নারাইনকে তো খুবই দেখেশুনে খেলেছেন। গেইলের কাছে সেটির ব্যাখ্যাও পাওয়া গেল, ‘টি-টোয়েন্টিতে একজন বোলারের সঙ্গে তো আপনি ইতিবাচক হতে চাইবেনই। আপনি খোলসে আটকে গেলে কাজটাও কঠিন হয়ে যাবে। নারাইন ওদের গুরুত্বপূর্ণ বোলার। চার্লস আউট হয়ে যাওয়ার পর আমি পরিস্থিতিটা বোঝার চেষ্টা করেছি, অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। বুঝতে হবে কখন রক্ষণ করবেন। স্ট্রাইক বদল করাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় আমি ও ম্যাককালাম অসাধারণ একটা কাজ করেছি। কাকে মারতে হবে, কাকে ঠেকাতে হবে, সেটাও ঠিকমতো করেছি।’

    কিছু দিন আসে, যেদিন সবকিছু ঠিকমতোই হয়। আজও ছিল তেমন এক দিন!