• অ্যাশেজ ২০১৭-১৮
  • " />

     

    ওয়াকাতেই অ্যাশেজ ফিরে পেল অস্ট্রেলিয়া

    ওয়াকাতেই অ্যাশেজ ফিরে পেল অস্ট্রেলিয়া    

    ৩য় টেস্ট, পার্থ 
    টস- ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
    ইংল্যান্ড ৪০৩ অল-আউট (মালান ১৪০, বেইরস্টো ১১৯, স্টার্ক ৪/৯১, হ্যাজলউড ৩/৯২) ও ২১৮ অল-আউট (ভিনস ৫৫, মালান ৫৪, হ্যাজলউড ৫/৪৮, কামিন্স ২/৫৩)
    অস্ট্রেলিয়া ৬৬২/৯ ডিক্লে. (স্মিথ ২৩৯, মিচেল মার্শ ১৮১, অ্যান্ডারসন ৪/১১৬, ওভারটন ২/১১০)
    অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ৪১ রানে জয়ী, অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার তাদের


    ওয়াকা তার শেষ স্মৃতি হিসেবে এর চেয়ে ভাল কিছু ধরে রাখতে পারতো না। শেষবারের মতো অ্যাশেজ টেস্ট হলো তার বুকে, ম্যাচশেষে তার স্ক্রিনে ভেসে উঠলো, ‘অস্ট্রেলিয়া উইনস দ্য অ্যাশেজ’। বৃষ্টি-বিতর্কে ঘন্টা তিনেক পর শুরু হওয়া শেষদিনের খেলা চা-বিরতি পর্যন্ত যায়নি পার্থে, অস্ট্রেলিয়া তার আগেই ফিরে পেয়েছে ‘ভস্মাধার’। ইংল্যান্ডের মাটিতে যে অ্যাশেজ খুইয়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া, সেটা ফিরে পেতে তাদের লাগলো মোটে তিনটি টেস্টই। 

     

     

    বৃষ্টি ছিল সকাল থেকেই। তবে বৃষ্টি ছেড়ে যাওয়ার পরও শুরু হয়নি খেলা। পিচে ‘ফাটল’ ছিল, সেগুলো ছিল আবার ভেজা। আম্পায়ার আর দুই অধিনায়কের মাঝে দফায় দফায় চললো আলোচনা। পিচ শুকাতে আনা হলো ‘ব্লোয়ার’, খেলার উপযুক্ত হতে হতে পেরিয়ে গেল ঘন্টা তিনেক। তবে অস্ট্রেলিয়া সময় নিল না বেশি, প্রথম আঘাত এল শুরুতেই। হ্যাজলউডের নিচু হওয়া বলের কোনো জবাব ছিল না বেইরস্টোর কাছে, স্টাম্পের এলইডি বেইলসগুলোই শুধু জ্বলে উঠলো। 

    মইন আলির 'হলো কি হলো না' ধরনের ডিসমিসাল নিয়ে হলো আরেকদফা বিতর্ক। দ্বিতীয় স্লিপে ধরেছিলেন স্মিথ, তবে টিভি আম্পায়ার আলিম দার অনেক রিপ্লের পরও অন-ফিল্ড আম্পায়ারদের সফট সিগন্যাল নট-আউট নাকচ করার প্রমাণ পেলেন না। মইন এরপর কিছুক্ষণ টিকলেন, তবে ধরা দিলেন তার পুরোনো ঘাতক ন্যাথান লায়নের কাছেই। ভেতরের দিকে ঢোকা বলে সোজা এলবিডাব্লিউ, সিরিজে ৬ ইনিংসের মাঝে ৫ বারই তিনি আউট হলেন লায়নের বলে। 

    ডেভিড মালান পুল করতে গিয়ে পেইনকে দিলেন ক্যাচ। হ্যাজলউডের বল ছুঁয়েছিল তার গ্লাভস, সকালে ওয়াকার আকাশ যতটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল, হ্যাজলউড ছিলেন তার চেয়েও বেশি উজ্জ্বল। ফাটল ধরা পাঁজড় নিয়ে ব্যাট করছিলেন ক্রেইগ ওভারটন, তাকে ব্যাথা থেকে মুক্তি দিলেন ওই হ্যাজলউডই। আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন, বল পিচে ধরলো একটু বেশিক্ষণ, এরপর ওভারটনের কানায় লেগে গালিতে গেল ‘বার্থডে বয়’ উসমান খাওয়াজার কাছে। স্টুয়ার্ট ব্রডও এলেন আর গেলেন, শর্ট বলে লাফিয়ে উঠে খেলতে গিয়ে তার গ্লাভস ছুঁয়ে আরেকবার ক্যাচ গেল পেইনের কাছে, হ্যাজলউড পেলেন পাঁচ নাম্বার উইকেট। 

     

     

    চা-বিরতির তখনও বেশ কিছুক্ষণ বাকি, আর অস্ট্রেলিয়ার শুধু সময়ের অপেক্ষা। অ্যান্ডারসনের মাথায় আঘাত করলো কামিন্সের বাউন্সার, সেখানে গেল আরও কিছুক্ষণ। একটা সিঙ্গেল চুরি করতে গিয়ে রান-আউট হতেই বসেছিলেন অ্যান্ডারসন, পেছন থেকে পেইনের থ্রো করতে পারেনি লক্ষ্যভেদ। 

    তবে কামিন্সের শর্ট বলে আপার কাট করতে গিয়ে ক্রিস ওকস যে ক্যাচটা দিলেন পেইনকে, সেটা ধরতে ভুল হলো না তার। ছুটলেন এরপর দিগ্বিবিদিক। স্লিপ থেকে ছুটলেন স্মিথরা, অন্যপাশ থেকে ছুটে আসলেন অন্যরা। ওয়াকা তার স্ক্রিনে দেখালো সেই বার্তা, উদযাপনে মত্ত স্মিথদের সঙ্গে করমর্দনের অপেক্ষায় তখন ওকস-ব্রড আর আম্পায়াররা। 

    অস্ট্রেলিয়াই শুধু তিন টেস্টের বেশি অপেক্ষা করলো না অ্যাশেজ ফিরে পেতে। আর ওয়াকা তাদের কাছে হয়ে থাকলো সুখস্মৃতি।