বক্সিং ডে-তে অস্ট্রেলিয়ার কোন পাঞ্চ?
কবে, কখন
এমসিজি, মেলবোর্ন
২৬-৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭
বাংলাদেশ সময় ০৫.৩০
বক্সিং ডে টেস্ট থাকার অর্থ, বড়দিনটা অনুশীলন করেই কাটেই ক্রিকেটারদের। অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলনে এসেছিলেন ক্রিকেটারদের পরিবার, কিছু ইংলিশ ক্রিকেটারেরও তাই। ইংলিশরা সকালেই ফুটবল খেললেন, একটা গোলের পর তাদের মনোবিদের উদযাপনের ভিডিওটাও দেখার মতো। তবে বক্সিং ডে টেস্টের আগেরদিন কি দুইদলের জন্যই এমন আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে আদৌ?
অস্ট্রেলিয়া অ্যাশেজ ফিরে পেয়েছে পার্থেই, সিরিজের চতুর্থ টেস্ট তাই কার্যত ‘ডেড রাবার’ এখন। তবে অস্ট্রেলিয়ার আধিপত্যের পরের ধাপ হতে পারে এই টেস্ট, তাদের লক্ষ্য যে এখন হোয়াইটওয়াশ। অস্ট্রেলিয়ার মৌসুমটা কাটছে দারুণ, নির্বাচক থেকে শুরু করে স্টিভ স্মিথ, যেই যেটা করেছেন, সবই হয়েছে সোনায় সোহাগা।
ঠিক উলটো চিত্র ইংল্যান্ডের, সব পথই কাঁটা-বেছানো তাদের, হোঁচট খেতে হয়েছে সবদিক দিয়েই। বক্সিং ডে টেস্টে কোন প্রেরণাতে আরেকবার ‘লড়াই’-এর আশায় তারা নামবেন, সেখানেও এক বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। প্রশ্ন আছে ব্যাটিং নিয়ে, বোলিং নিয়ে, পেস নিয়ে, স্পিন নিয়ে। অধিনায়কত্ব নিয়েও।
এমসিজিতে ৯০ হাজারের ওপর দর্শক থাকবেন প্রথম দিন, সেটা থেকে একটা প্রেরণা নিতে পারেন তারা। অবশ্য এই প্রেরণাটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বাড়তি প্রণোদনা হয়ে কাজ করলে হতাশার সাগরে ইংল্যান্ড ডুববে আরেকবার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশের পথেও এগিয়ে যাবে আরেকটু। সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডকে নক-আউট করে দিতে সেটা হবে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া আরেকটা ‘পাঞ্চ’ উপহার, বড়দিন উপলক্ষ্যে! 'ডেথপাঞ্চ'টা তখন তোলা থাকবে সিডনির জন্যই, নতুন বছরে।
রঙ্গমঞ্চ
কদিন আগে মেলবোর্নের রাস্তায় পথচারিদের ওপর উঠে গিয়েছিল গাড়ি। সেটা তেমন কোনও প্রভাব ফেলেনি, তবে বাড়তি নিরাপত্তা যোগ করা হয়েছে বক্সিং ডে টেস্ট ঘিরে। সব মিলিয়ে মেলবোর্ন শান্ত এখন, এমসিজির ওপরও কড়া রোদ। প্রথম দুইদিন রোদই থাকবে, তবে শেষ তিনদিন আছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। তবে পার্থের মতোই রান-প্রসবা হবে মেলবোর্নের পিচ, প্রথমে ব্যাটিং করে বড় স্কোরের তাই বিকল্প নেই।
যাঁদের ওপর চোখ
অ্যালেস্টার কুক
আগের টেস্টের মতো এবারও চোখটা সরানো যাচ্ছে না তার ওপর থেকে। অবশ্য কুক চোখে লেগে থাকার মতো কিছু করছেন না, তার এই না করাটাই চোখে লাগছে বরং। জন্মদিনের পরদিনই শুরু হওয়া টেস্টে এই দুঃসময়টা ভুলতে পারবেন তিনি? নাকি শেষের শুরুটা হয়েই গেছে তার?
স্টিভেন স্মিথ
চোখ সরানো যাচ্ছে না তার ওপর থেকেও। অনুশীলনে বল এসে ডানহাতে লেগেছে তার, এ কারণে টেকনিকেও কিছু পরিবর্তন আনছেন। বটম হ্যান্ডের চেয়ে ওপরের হাত একটু বেশি ব্যবহার করতে হবে তাকে, তবে টেকনিকের এমন পরিবর্তনের সঙ্গে তার চেয়ে ভাল আর কেইবা মানিয়ে নিতে পারেন!
একাদশ
দুই দলেই আছে দুই পরিবর্তন। চোটের কারণে খেলা হচ্ছে না মিচেল স্টার্ক ও ক্রেইগ ওভারটনের। পাঁচ বছরের ক্যারিয়ারে নবম টেস্ট খেলতে নামবেন জ্যাকসন বার্ড, আর বক্সিং ডে টেস্ট দিয়েই অভিষেক হচ্ছে টম কারানের।
অস্ট্রেলিয়া
ডেভিড ওয়ার্নার, ক্যামেরন ব্যানক্রফট, উসমান খাওয়াজা, স্টিভেন স্মিথ(অধিনায়ক), শন মার্শ, টিম পেইন(উইকেটকিপার), মিচেল মার্শ, ন্যাথান লায়ন, জ্যাকসন বার্ড, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড।
ইংল্যান্ড
অ্যালেস্টার কুক, মার্ক স্টোনম্যান, জেমস ভিনস, জো রুট(অধিনায়ক), ডেভিড মালান, জনি বেইরস্টো(উইকেটকিপার), মইন আলি, ক্রিস ওকস, স্টুয়ার্ট ব্রড, জেমস অ্যান্ডারসন, টম কারান।
সংখ্যার খেলা
- অধিনায়ক হিসেবে বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম ইনিংসে স্মিথের রান ১৯২, ১৩৪* ও ১৬৫*। গড় ৪৯১।
- জেমস অ্যান্ডারসনের পর দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে ৪০০ উইকেট পেতে এখনও ৭ উইকেট প্রয়োজন স্টুয়ার্ট ব্রডের। গত টেস্ট তিনি ছিলেন উইকেটশূন্য।
- বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ হারিয়েছিল ইংল্যান্ডই। ২০১০-১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২৪ বছর পর অ্যাশেজ ফিরে পাওয়ার সিরিজে।