• অ্যাশেজ ২০১৭-১৮
  • " />

     

    ওয়ার্নার, স্মিথে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই

    ওয়ার্নার, স্মিথে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই    

    চতুর্থ টেস্ট, মেলবোর্ন
    টস- অস্ট্রেলিয়া (ব্যাটিং)
    ১ম দিনশেষে 
    অস্ট্রেলিয়া ২৪৪/৩ (ওয়ার্নার ১০৩, স্মিথ ৬৫*, অ্যান্ডারসন ১/৪৩, ব্রড ১/৪১) 


    এমসিজির কিউরেটর যেন এসেছিলেন সান্তা ক্লজ হয়ে। যতোখানি ফ্ল্যাট ভাবতে পারেন, যতখানি ব্যাটিং সহায়ক ভাবতে পারেন একটা বিগব্যাশ ম্যাচের জন্য, এমসিজির উইকেট বক্সিং ডে টেস্টের জন্য যেন তেমনই। সান্তা ক্লজের সেই উপহারটা পেলেন স্টিভ স্মিথ, টস জিতে। ওয়ার্নার লাঞ্চে গেলেন ৮১ রানে অপরাজিত থেকে, অস্ট্রেলিয়া গেল ১০২ রানে ০ উইকেট নিয়ে। পরের সেশনে যেন দাওয়াতের ভারী খাওয়া-দাওয়ার পর ঝিমুনি এলো অস্ট্রেলিয়ার, ২৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তুললো ৪৩ রান। সেই ঝিমুনি কাটলো শেষ সেশনে, আরেকটি উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তুললো ২৪৪ রান। স্মিথ আরেকটা ফিফটি করেছেন, সঙ্গে অপরাজিত আছেন শন মার্শ। 

    প্রথম সেশনে ইংলিশ বোলাররা বলতে গেলে কিছুই করতে পারেননি। ওয়ার্নারের শুরুর দিকের মিসহিট ফিল্ডারের একটু দূরে পড়েছে, তবে সেটাও ক্ষণিকের জন্যই। এমসিজিতে নিজের ফর্মটা ফিরে পেয়েছেন তিনি, ওপেনিং জুটির ১২২ রানের মধ্যে প্রায় ১০০ রানই তার। তিনি যতখানি আয়েশভরে ব্যাটিং করেছেন, ততখানিই অস্বস্তিতে ছিলেন ব্যানক্রফট। যেন বড়দিনের উপহারটা তার উপযুক্ত হয়নি। 

     

     

    দিনের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্ত এসেছে ওয়ার্নারকের ঘিরেই। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে অভিষিক্ত টম কারানের শর্ট বলে পুল করতে লিডিং-এজ হয়ে মিড-অনে ক্যাচ দিয়েছিলেন ওয়ার্নার, এরপর তার হতাশাটাই যেন অনূদিত হলো এমসিজির ৮৮ হাজার দর্শকের মাঝে। তবে এরপরই তৃতীয় আম্পায়ার ডাকলেন নো-বল, হতাশা উল্লাসে পরিণত হলো পরের বলেই সিঙ্গেল নিয়ে ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিপূরণে। সে উদযাপন চললো বেশ কিছুক্ষণ, আর কারান দিনশেষেও থাকলেন উইকেটশূন্যই। মার্ক উড ও বেন স্টোকসের পর সাম্প্রতিক সময়ে তিনিই আরেক ইংলিশ বোলার, প্রথম টেস্ট উইকেট থেকে যিনি বঞ্চিত হলেন নো বলের কারণে। 

    ওয়ার্নার এরপর অ্যান্ডারসনের সিমিং বলের শিকার, পিচে পড়ার পর হালকা মুভমেন্টই কাল হয়ে দাঁড়াল তার, উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন বেইরস্টোকে। দিনশেষে অ্যান্ডারসন স্বীকারও করে নিয়েছেন, এমন পিচে এর বেশি কিছু করার ছিলও না আসলে তার। তবে এ উইকেট দিয়েই কোর্টনি ওয়ালশের ৫১৯ উইকেটের ট্যালি ছুঁয়েছেন তিনি। আর ওয়ার্নার পূরণ করেছেন ৬ হাজার রান। ব্যানক্রফট ওকসের ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডাব্লিউ, হয়তো আজ রাতে গিয়ে আফসোসটা আরেকবার বেড়ে যাবে তার। দাওয়াতে গিয়ে ঠিকমতো খেতে না পেরে হুট করে খাবারের কথা মনে পড়ে গেলে যা হয় আরকি! 

    ৬৯ ওভারের উইকেটখরা এরপর কাটালেন স্টুয়ার্ট ব্রড। উসমান খাওয়াজাও ঠিক স্বস্তিতে ছিলেন না, ৬৫ বলে ১৬ রান করে তিনিও বেইরস্টোকে ক্যাচ দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের লড়াইয়ের ফল পাওয়াও দিনের মতো শেষ সেখানেই। বোলারদের জন্য কঠিন দিনে মইন আলির চেয়ে খন্ডকালিন ডেভিড মালানও করেছেন এক ওভার বেশি। ৮৬তম ওভারে গিয়ে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছে ইংল্যান্ড, তবে বাকি সময়ে টলাতে পারেনি স্মিথ বা মার্শকে। 

    তবে এই টেস্ট সিরিজ বলছে, স্মিথ উপহারের জন্য কোনও সান্তা ক্লজের অপেক্ষা করেন না সবসময়ই, বানিয়ে নেন নিজের মতোই। এবার নিজের জন্য স্মিথ এবার কী উপহার রেখেছেন, দিনশেষে ইংল্যান্ড হয়তো ভাবছে সেটাই!