• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    বল 'দেখভালের' এমন অস্ট্রেলিয়ান পদ্ধতিতে বিস্মিত ব্রড

    বল 'দেখভালের' এমন অস্ট্রেলিয়ান পদ্ধতিতে বিস্মিত ব্রড    

    কেপটাউন থেকে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার দূরে অকল্যান্ডে হচ্ছে আরেকটি টেস্ট, যেখানে প্রথম ইনিংসের বিভীষিকা ভুলে ম্যাচ বাঁচাতে লড়ছে ইংল্যান্ড। তবে সে টেস্টেও দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো কেপটাউনের বল টেম্পারিং প্রসঙ্গ। অবশ্য এর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া জড়িত বলে ইংল্যান্ডের কারও মতামতের দাম আছে অবশ্যই! আর মতটা যখন স্টুয়ার্ট ব্রডের, তখন সেটার মূল্য তো আরও বেশি। ইংলিশ এই পেসারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ানদের সম্পর্কটা যে বেশ ‘সাপে-নেউলে’! ব্রড অবশ্য বিস্মিতই হয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া কেন বলের ‘দেখভাল’ করতে এমন একটা পদ্ধতি বেছে নিল- সেটাই বুঝতে পারছেন না তিনি। 

    ‘স্মিথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, এরকম কিছু তারা প্রথম করলো এবারই। তবে এটা সত্যিই বিস্ময়কর, বলের দেখভালের জন্য তারা নিজেদের পদ্ধতিটা বদলে ফেললো কেন, যেটা তাদের জন্য বেশ ভাল কাজে দিয়েছে এতোদিন’, বলেছেন ব্রড। 

    ‘আমরা যে অ্যাশেজটা খেললাম মাত্রই, সেটার সব টেস্টের দিকে খেয়াল করুন, তারা রিভার্স সুইং করিয়েছে। কিছু কন্ডিশনে বল রিভার্স করবে না, এটা মেনে নিতে হবে। আমি এটাই বুঝতে পারছি না, তারা শুধু একটা ম্যাচের জন্য পদ্ধতিটা বদলে ফেলল কেন?’ 

    তবে অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া বল টেম্পারিং করেছে বলে মনে করেন না ৪০০ উইকেট নেওয়া এই পেসার, ‘না, আমার মনে হয় না। অ্যাশেজে এমন কিছুর প্রমাণ মেলেনি, আর আমি যা দেখেছি, তাতে মনে হয়নি তারা এমন কিছু করেছে।’ 

    এই সিরিজটা মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে যে বেশি আলোচনায়, ব্রডকে বিস্মিত করছে সেটাও, ‘সত্যি বলতে কী, এতোদূর থেকে তো অত কিছু বোঝা যায় না। তবে দুইটা দারুণ দল একটা সিরিজ খেলছে, আর সব ছাপিয়ে যাচ্ছে মাঠের বাইরের বিষয়গুলোতে। প্রথমে রাবাদার কান্ড, এখন আবার বল টেম্পারিং।’ 

    বল টেম্পারিংয়ের ঠিক আগেই কেপটাউনের দর্শক নিয়ে বেশ উচ্চকিত ছিল অস্ট্রেলিয়ান ম্যানেজমেন্ট। কোচ ড্যারেন লেম্যান বলেছিলেন, এসব আচরণ ‘লজ্জাজনক’। সেই লেম্যানই আবার ২০১৩ অ্যাশেজের আগে অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের বলেছিলেন এমন কিছু করতে, যাতে ব্রড ‘কেঁদে বাড়ি ফেরেন’। তার আগের অ্যাশেজে ট্রেন্টব্রিজ টেস্টে ব্রড ‘ওয়াক’ করেননি বলেই এমন মন্তব্য করেছিলেন লেম্যান। 

    ঠিক উল্টোটা যখন হচ্ছে, তখন অস্ট্রেলিয়ানদের এমন আচরণও বিস্মিত করছে ব্রডকে, ‘২০১৩ সালে তিনি বলেছিলেন, আমাকে যাতে কাঁদিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অ্যাশেজ হেরেছিলাম, তবে কেঁদেছিলাম বলে মনে পড়ে না। আর যে যেমন করবে, তার জবাব সেভাবেই দিতে হবে। সেটা কঠোর নজর হোক, মুখের কথায় হোক, আচরণে হোক- যে শুরু করবে, তাকে সেটা ফিরিয়ে দিলেই হয়।’ 

    ‘যে কোনও ইংলিশ ক্রিকেটার, এমনকি সংবাদমাধ্যমককর্মীও, যারা অস্ট্রেলিয়াতে গেছেন- অস্ট্রেলিয়ানদের এসব মন্তব্য শুনলে হাসবেন। আমরা মাঠে অস্ট্রেলিয়ান সমর্থকদের কাছ থেকে যেসব শুনি, যেগুলো ‘ঠাট্টা’ বলে পরিচিত, আমি জানি সেগুলো দক্ষিণ আফ্রিকায় যেসব হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ।’ 

    কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন দ্বিতীয় সেশনে বল টেম্পারিং করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফট। আপাতত এই টেস্টে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্মিথ ও তার সহকারি ওয়ার্নার, দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উইকেটকিপার টিম পেইনকে। আর আইসিসির দেওয়া শাস্তিতে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন স্মিথ, জরিমানা করা হয়েছে ব্যানক্রফটকে।