কিক অফের আগে: ফ্রান্সের আশা ফর্ম, উরুগুয়ের ইতিহাস
ফ্রান্সের ভরসা ফর্ম, উরুগুয়ের ইতিহাস
ফ্রান্স বনাম উরুগুয়ে; কোয়ার্টার ফাইনাল; ৬ জুলাই, রাত ৮টা; নিঝনি নভগর্দ; বিটিভি, মাছরাঙ্গা, টেন ২/৩
দুর্দান্ত কিলিয়ান এম্বাপ্পেতে সওয়ার হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছে ফ্রান্স। উরুগুয়েও কম যায়না। আরেক ‘গোট’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে বিদায় করে শেষ আটে এসেছে ১৫ বারের লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্বকাপে মেসি বনাম রোনালদো দ্বৈরথের আশায় থাকা ফুটবল অনুরাগীদের স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করা এই দুই দল আজ মাঠে নামছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে শেষ চারে জায়গা করে নিতে। একদিকে এম্বাপ্পে-গ্রিযমানদের আক্রমণ অন্যদিকে গডিন-হিমেনেজদের রক্ষণ- নিঝনি নভগর্দে আজ সমানে সমান এক দুর্দান্ত লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছে বিশ্ব।
তাহারা বলেন
প্রতিপক্ষের একাদশে ছাড়িয়ে বেঞ্চে- প্রতিভার ছড়াছড়ির নেই কোনো অভাব। ২০১০ সালের পর আবারও বিশ্বকাপের সেমিতে জায়গা করে নেওয়ার ম্যাচের আগে তাই ফ্রান্সকে যথার্থ সম্মানটাই দিচ্ছেন উরুগুয়ে কোচ অস্কার তাবারেজ, “আমার মনে হয় না স্কোয়াডের সামর্থ্যের বিচারে এই বিশ্বকাপে ফ্রান্সের চেয়ে শক্তিশালী কোনো দল আছে। অনেকেই বলেছিল তরুণরা চাপে ভেঙ্গে পড়বে। কিন্তু আর্জেন্টিনার মত দলের বিপক্ষে তারা পিছিয়ে পড়েও যেভাবে ফিরে এসেছে- তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ওদের আক্রমণভাগ এক কথায় অসাধারণ। কিন্তু আমাদের রক্ষণভাগও দারুণ। অহংবোধ থেকে বলছি না; তবে আমার মনে হয় এবারের সেরা রক্ষণ আমাদেরই।” পর্তুগালের বিপক্ষে জয়ের নায়ক এডিনসন কাভানি মাঠ ছেড়েছিলেন ইনজুরিতে। আগামীকাল তার খেলা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন তাবারেজ, “আগের চেয়ে বেশ ভাল অনুভব করছে সে। হালকা অনুশীলনও করেছে গত দু’দিন। তবে সত্যি বলতে আমি এখনও নিশ্চিত নই তার ব্যাপারে। আশা করি আজ চিকিৎসকদের থেকে ইতিবাচক কিছুই শুনব।”
আজকের ম্যাচে কাভানির থাকা না থাকা নিয়ে অবশ্য তেমন চিন্তিত নন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম, “উরুগুয়ে কেবল কাভানি বা লুইস (সুয়ারেজ)-এর উপর নির্ভরশীল নয়। ওদের একজনকে টার্গেট করে দল সাজানো হবে বোকামী। দলগত ঐক্যই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আর তাদের রক্ষণ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে আমাদের আক্রমণভাগও দারুণ। উরুগুয়ের বিপক্ষে অগ্নিপরীক্ষারই অপেক্ষায় আছি আমরা।”
দলের খবর
ইনজুরির কারণে ম্যাচটি মিস করার সম্ভাবনাই প্রবল কাভানির। ‘এল ম্যাটাডোর’-এর জায়গায় নামতে পারেন অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ান স্তুয়ানি। আর ফ্রান্সের হয়ে হলুদ কার্ডের নিষেধাজ্ঞার জন্য ম্যাচটি মিস করবেন ব্লেইজ মাতুইদি। তার জায়গায় দলে আসতে পারেন কোরেন্তিন তোলিসো।
সম্ভাব্য মূল একাদশ
ফ্রান্স (৪-৩-৩): লরিস; পাভার্ড, ভারান, উমতিতি, হার্নান্দেজ; কান্তে, তোলিসো, পগবা; গ্রিযমান, জিরু, এম্বাপ্পে
উরুগুয়ে (৪-৪-২): মুসলেরা; ভারেলা, গডিন, হিমেনেজ, লাক্সাত; নান্দেজ, তোরেইরা, ভেচিনো, বেন্টাঙ্কুর; সুয়ারেজ, স্তুয়ানি
ট্যাকটিক্সের টুকিটাকি
গ্রিযমান-এম্বাপ্পে-পগবাদের গতিতে যেকোনো রক্ষণভাগকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে যথেষ্ট। সেজন্য দুই ‘হোল্ডিং মিডফিল্ডার’ তোরেইরা এবং ভেচিনোর মূল দায়িত্ব হবে ফ্রান্সের প্রতি আক্রমণ রুখে দিতে গোডিনদের সাহায্য করা। কাভানিকে হারিয়ে বেন্টাকার-সুয়ারেজের দিকেই তাকিয়ে থাকবে উরুগুয়ে। ক্লাব সতীর্থকে আটকানোর দায়িত্বটা থাকবে স্যামুয়েল উমতিতির ওপর। সাথে থাকবেন এল ক্লাসিকোতে প্রতি মৌসুমে সুয়ারেজকে মোকাবেলা করা রাফায়েল ভারান। প্রতিপক্ষে অর্ধে সামান্য জায়গা পেলে সুয়ারেজ কী করতে পারেন, তা দেখিয়েছেন আগের ম্যাচেই। ফুলব্যাক থেকে ওভারল্যাপ করে গ্রিযমানদের বেশ সাহায্য করেছেন পাভার্ড-হার্নান্দেজ। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রমাণ মিলেছে তার। নিজেরা উপরে উঠে সুয়ারেজদের সাহায্য করার সাথে লাক্সাত-ভারেলার লক্ষ্য থাকবে প্রতিপক্ষ ফুলব্যাকদের রুখে দেওয়া। আর ‘ডেস্ট্রয়ার’ হিসেবে পল পগবাকে আটকানোর দায়িত্বটা থাকবে লুকাস তোরেইরার ওপর।
সংখ্যায় সংখ্যায়
- বিশ্বকাপে আজকের আগে ৩বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এই ৩ দেখায় অপরাজিত আছে উরুগুয়ে (২ ড্র, ১ জয়)
- লাতিন আমেরিকার দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের শেষ ৯ ম্যাচে অপরাজিত আছে ফ্রান্স (৫ জয়, ৪ ড্র)
- গ্রিযমান গোল করেছেন এমন কোনো ম্যাচে হারেনি ফ্রান্স (১৭ জয়, ২ ড্র)