• কিক অফের আগে
  • " />

     

    কিক অফের আগে: ব্রাজিলের সামনে বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্ম

    কিক অফের আগে: ব্রাজিলের সামনে বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্ম    

    ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম; কোয়ার্টার ফাইনাল; ৬(৭) জুলাই, রাত ১২টা; কাজান; বিটিভি, মাছরাঙ্গা, টেন ২/৩


    গত ৪৮ বছরে বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে কোনো দল ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে যেতে পারেনি পরের রাউন্ডে। তাকাশি ইনুইয়ের গোলে যখন একই ব্যবধানে পিছিয়ে বেলজিয়াম, তখন অনিশ্চয়তা এবং বিস্ময়ে ঠাসা এই বিশ্বকাপের আরেকটি অধ্যায়ের অপেক্ষায় ফুটবলবিশ্ব। কিন্তু এই বেলজিয়াম যে আগের দশটা বেলজিয়াম দলের মত নয়! আক্ষরিক অর্থেই ম্যাচের শেষ কিকে জয় ছিনিয়ে আনলেন লুকাকু-হ্যাজার্ডরা, নিশ্চিত করলেন শুক্রবারের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গাটা। বেলজিয়ামের ঘণ্টা দুয়েক আগেই মেক্সিকোকে হারিয়ে তাদের অপেক্ষায় ছিল ব্রাজিল। নেইমার-কৌতিনহোতে সওয়ার হয়ে ‘হেক্সা’ মিশনে এবারের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখী হতে যাচ্ছে তিতের দল। কাজানে একদিকে থাকবে বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্মের নিজেদের প্রমাণের জেদ। আর অন্যদিকে থাকবে ‘সেলেসাও’রা, ‘হেক্সা’ মিশনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা ব্রাজিল। 

    তাহারা বলেন

    বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ফেভারিট ধরা হচ্ছিল তাদের। তবে বেলজিয়ামের ফিরে আসার এবং লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকেরই। জাপানের বিপক্ষে শেষ ষোলর ম্যাচে সেসব প্রশ্নের জবাবটা দারুণভাবেই দিয়েছে বেলজিয়াম; এমনটাই মনে করেন ব্রাজিল কোচ তিতে, “ওরা (বেলজিয়াম) এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল। মূল একাদশ বা বেঞ্চের প্রত্যেকটি ফুটবলারই অসাধারণ সামর্থ্যের অধিকারী। তারুণ্যে ভরপুর হওয়ায় অনেকেই তাদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু তারা সেসব প্রশ্নের জবাবাটা মাঠেই দিয়েছে। তবে আমরা ব্রাজিল। বড় মঞ্চে খেলাটা তাদের জন্য নতুন হলেও আমাদের জন্য বেশ নিয়মিতই বলা চলে। প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত হলেও আমরা আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছি না। বেলজিয়ামের বিপক্ষে লড়াইটা বেশ কষ্টসাধ্য হবে, তবে শেষ চারে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টাই করব আমরা।”

    তিতের বলে যাওয়া সেই অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে ব্রাজিলকেই ফেভারিট মানছেন বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্টিনেজ, “সত্যি বলতে গেলে, বিশ্বকাপে ব্রাজিলের তুলনা কেবল তারাই। সবচেয়ে বেশিবার শিরোপা ঘরে তুলেছে, এবারও দুর্দান্ত খেলে শেষ আটে চলে এসেছে। আক্রমণ নিয়ে কথা হলেও তাদের রক্ষণও অসাধারণ। বিশ্বকাপে সব শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৪ ম্যাচে মাত্র ১ গোল খাওয়া অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আর সবচেয়ে বড় কথা, তাদের ‘বিগ ম্যাচ’ খেলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আজকের ম্যাচে ফেভারিট তারাই (ব্রাজিল)। তবে নিজেদের সেরাটা আমরা ঠিকই দিব।”



     

     

    দলের খবর

    নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্রাজিলের হয়ে ম্যাচটি মিস করবেন মিডফিল্ডার কাসেমিরো। তার জায়গায় খেলবেন ফার্নান্দিনহো। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরছেন মার্সেলো এবং ডগলাস কস্তা। মূল একাদশে খেলার সম্ভাবনা দারুণ দু’জনের।
    আদনান ইয়ানুজাইয়ের খেলা নিয়ে আছে সংশয়। এছাড়া পূর্ণশক্তির দলই পাচ্ছেন মার্টিনেজ।

    সম্ভাব্য মূল একাদশ

    ব্রাজিল (৪-৩-৩): অ্যালিসন; দানিলো, সিলভা, মিরান্ডা, মার্সেলো; ফার্নান্দিনহো, পাউলিনহো, কৌতিনহো; উইলিয়ান, হেসুস, নেইমার

    বেলজিয়াম (৩-৪-৩): কর্তোয়া; কম্পানি, ভার্টনহেন, অল্ডারউইয়ারেল্ড; মুনিয়ের, ডি ব্রুইন, উইটসেল, কারাস্কো; মার্টেনস, লুকাকু, হ্যাজার্ড

     

    ট্যাকটিক্সের টুকিটাকি

    নেইমারের চেয়েও ব্রাজিলের আক্রমণভাগকে রুখতে ফিলিপ কৌতিনহোর দিকে কড়া নজর রাখতে হবে বেলজিয়ামকে। সুযোগ পেলেই পাস বাড়িয়ে বা দূরপাল্লার আগুনে শটে বেলজিয়ানদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিতে পারেন তিনি। এছাড়া ফুলব্যাক থমাস মুনিয়েরের ওপর দায়িত্ব থাকবে ক্লাব সতীর্থ নেইমারকে আটকানোর। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা উইলিয়ানকে আটকানোর দায়িত্বটা থাকবে ইয়ানিক-ফেরেইরা কারাস্কোর ওপর। আর বেলজিয়ামের আক্রমণভাগে লুকাকু-হ্যাজার্ডের চেয়েও কেভিন ডি ব্রুইনকে আটকানোটা বেশি জরুরি ব্রাজিলের জন্য। এডেন হ্যাজার্ডের বিপক্ষে দানিলোর পারফরম্যান্সের ওপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু। ৩-৪-৩ ফর্মেশনে খেলায় ব্রাজিলের প্রতি-আক্রমণে বেলজিয়ান মিডফিল্ডে প্রায়ই একা থাকতে হতে পারে অ্যাক্সেল উইটসেলকে। দু’পাশের ফাঁকা জায়গার সু্যোগটা নিতে হয়ত পিছপা হবেন না নেইমাররা। এখনও জ্বলে উঠতে না পারা গ্যাব্রিয়েল হেসুসকেও রাখতে হবে কড়া মার্কিংয়ে। আর লুকাকু বনাম সিলভার লড়াইটাও হবে জমজমাট। সেটপিসে ফেলাইনি-ভার্টনহেন-লুকাকুরা কতটা ভয়ঙ্কর, তার প্রমাণ মিলেছে আগের ম্যাচেই। সুইসদের বিপক্ষে সেই সেটপিস থেকেই গোল খাওয়া ব্রাজিলেরও সতর্ক থাকতে হবে ডি ব্রুইনদের নেওয়া সেটপিসগুলোতে।

     

    সংখ্যায় সংখ্যায়

    • ২০০২ সালের বিশ্বকাপে দেখা হয়েছিল দু’দলের। ২-০ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল
    • বিশ্বকাপে টানা ৭বার শেষ আটে খেলছে ‘সেলেসাও’রা
    • নিজেদের শেষ ৯ ম্যাচের ৮টিতেই ক্লিনশিট রেখেছে তিতের দল
    • বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকার দলগুলোর বিপক্ষে খেলা শেষ ২ ম্যাচের ২ টিতেই হেরেছে বেলজিয়াম। সেই ২ বার টুর্নামেন্ট থেকেও বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের (২০০২ বনাম ব্রাজিল, ২০১৪ বনাম আর্জেন্টিনা)