আশা-নিরাশার সুইপ, আর রাব্বির 'দেজা ভু'
আশা-নিরাশার সুইপ
মেহেদি মিরাজকে রিভার্স সুইপ করতে উদ্যত টেইলর, মুশফিক সেটা বুঝে আগেভাগেই সরে গেলেন ডানদিকে। টেইলর বলে ব্যাট লাগাতেই পারলেন না, কিন্তু অতি-সতর্কতা কাল হলো মুশফিকের। গুণলেন চারটি বাই রান। দুই বল পর টেইলর বের করলেন চিরায়ত সুইপই, স্লগে মারলেন ছয়। ১৯তম ওভারে আবার মিরাজের মুখোমুখি টেইলর, ফুললেংথের বলটা পড়তে ভুল করে খেলতে গেলেন সুইপ। এলবিডব্লিউ হলেন, তবে রিভিউয়ে হক-আই দেখালো বল মিস করে যেতো লেগস্টাম্প। শেষ পর্যন্ত সুইপই কাল হলো তার। মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স করতে গিয়েছিলেন, মিস করলেন আবারও, হলেন এলবিডব্লিউ। এবার আর রিভিউয়ের চিন্তা করলেন না টেইলর, জিম্বাবুয়েও হারালো বড় স্কোরের মোমেন্টামটা।
ধর্মসেনার গোলমাল
মাভুতার স্কুপটা প্রথমে হলোনা ঠিকঠাক। ডিপ ফাইন লেগে সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিলেন মোস্তাফিজ, সাইফ উদ্দিনের চতুর্থ উইকেট। ওহ না, দাঁড়ান। আম্পায়াররা শরণাপণ্ণ হলেন টিভি আম্পায়ারের। সফট সিগন্যাল- আউট। টিভি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। প্রথম দেখায় সন্দেহ হলো তার, জুম করে দেখলেন। বল মাটিতে লেগেছে বলে নিশ্চিত তিনি। তবে ভজকট বাঁধলো এরপরই। একবার সিদ্ধান্ত “ওভারটার্ন” করতে বলেন, একবার “আপহোল্ড”। একবার নট-আউট দেখাতে বলেন, একবার আউট। প্লেয়ারস রিভিউয়ের সঙ্গে আম্পায়ারস রিভিউয়ের পার্থক্য, এই সিদ্ধান্ত দেখানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিনে। ধর্মসেনার সঙ্গে গড়বড় হয়ে গেল টিভি ডিরেক্টরেরও, তিনি ক্যামেরা নিয়ে গেলেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার মাসুদুর রহমানের দিকে। ওদিকে ধর্মসেনা তখন বলেই যাচ্ছেন, “নট-আউট, নট-আউট, অন জায়ান্ট স্ক্রিন…..”। শেষ পর্যন্ত দেখানো হয়েছে সেটাই। ইনিংস শেষে অবশ্য অন-ফিল্ড দুই আম্পায়ারকে এসে মোস্তাফিজ বলার চেষ্টা করছিলেন, ক্যাচটা ঠিকঠাকই নিয়েছিলেন তিনি। ভাগ্যিস ধর্মসেনা শোনেননি সেটা, নইলে হয়তো গোলমাল পাকাতেন আরেকবার!
রাব্বির শুন্যের 'দেজা ভু'
লিস্ট ‘এ’ প্রথম ইনিংস- শুন্য। লিস্ট ‘এ’ দ্বিতীয় ইনিংস- শুন্য। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেও রাব্বির প্রথম তিন ইনিংসে ছিল দুইটি শুন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেও যে সেই শুন্যের ভূত তাকে তাড়া করবে, সেটা কে জানতো! প্রথম ওয়ানডেতে শুন্য রানে আউট হলেন, দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও তাই। ওয়ানডেতে জোড়া শুন্যে শুরু করা ব্যাটসম্যানের সংখ্যা তাকে দিয়ে দাঁড়াল ২৩-এ। রাব্বির আগে শেষ এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল নেপালের কারান কেসির। লিস্ট ‘এ’-তে বাজে শুরুর পরও ৩০ পেরুনো বয়সে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন রাব্বি, আবার সুযোগ পাবেন তো? সুযোগ না পেলে তার জন্য দুঃখিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই যেন করার নেই!
পেসে ম্যাচসেরা
আগের ম্যাচে ব্যাটিং, এবার বোলিং। সাইফ উদ্দিনকে অলরাউন্ডার হিসেবে দলে নেওয়া হয়েছে, সেটার প্রতিদান দিলেন দুই ম্যাচ জুড়ে। এবার শুরুর দিকেই তাকে বোলিং এনেছিলেন মাশরাফি, বোলিং করেছেন তিনি ডেথ ওভারেও। ম্যাচসেরাও হয়েছেন। ১২তম পেসার হয়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচসেরা হলেন তিনি। পেসার হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচসেরা হয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, ১১ বার। সব মিলিয়েও বাংলাদেশীদের মাঝে ম্যাচসেরার তালিকায় তিনে মাশরাফি, সাকিব আল হাসান (১৮) ও তামিম ইকবালের (১৪) পর। পেস বোলিংয়ে অবদান রেখে দুইবার ম্যাচসেরা হয়েছিলেন স্লো মিডিয়াম পেসার আফতাব আহমেদ। ঢাকায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন, আর বগুড়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ে বোলিংয়ে নিয়েছিলেন ২৪ রানে ১ উইকেট, ২১ বলে ৩২ রান করার আগে। বাকিরা ছিলেন স্বীকৃতি পেসারই।