• ইংল্যান্ডের শ্রীলঙ্কা সফর ২০১৮
  • " />

     

    গলে শ্রীলঙ্কার সামনে মহাসাগর কিংবা মহাকাল

    গলে শ্রীলঙ্কার সামনে মহাসাগর কিংবা মহাকাল    

    গল টেস্ট
    তৃতীয় দিনশেষে
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৪২ (ফোকস ১০৭, কারান ৪৮, জেনিংস ৪৬, পেরেরা ৫/৭৫, লাকমাল ৩/৭৩) ও ২য় ইনিংস ৩২২/৬ (জেনিংস ১৪৬, স্টোকস ৬২, ফোকস ৩৭, হেরাথ ২/৫৯, পেরেরার ২/৯৪) 
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২০৩ (ম্যাথিউস ৫২, চান্ডিমাল ৩৩, মইন ৪/৬৬, লিচ ২/৪১) ও ২য় ইনিংস* ১৫/০


    গলে ৯৯ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি কখনও কোনও দল। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করতে পারেনি ১১৪ ওভারের বেশি। আর রান তাড়া করে জেতার বিশ্ব রেকর্ডটা ৪১৮ রানের। আবহাওয়া বাগড়া না বাধালে সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে পড়া থেকে রক্ষা পেতে শ্রীলঙ্কাকে ভাঙতে হবে এসব রেকর্ড, তাও বিশাল ব্যবধানে। কিটন জেনিংসের ১৪৬, বেন স্টোকসের ফিফটি, জস বাটলার ও বেন ফোকসের সময়ের চাহিদা মেটানো ইনিংসের পর শ্রীলঙ্কার সামনে এখন মহাসাগর-সমান ৪৬২ রানের লক্ষ্য। আর ড্র করে শুধু ভেসে থাকতে হলেও সময়টা মহাকাল-সমান। তাও আবার এমন এক পিচে, যা ‘বিখ্যাত’ চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে স্পিন-সহায়তার জন্য। এমন পিচে, যেখানে প্রথম তিন দিনে ২৬ উইকেটের ২১টিই নিয়েছেন স্পিনাররা। 

    শ্রীলঙ্কাকে এমন অবস্থায় ফেলে দেওয়ার মূল দায়টা জেনিংসের। টেস্টে দুইটি সেঞ্চুরি হলো তার, আগেরটি করেছিলেন মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে। উপমহাদেশ স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারেই অনেক বেশি প্রিয় হয়ে উঠেছে তার। শ্রীলঙ্কানদের পরিকল্পনা কাজে আসেনি আজ তার বিরুদ্ধে। একবার অবশ্য আউট হতে পারতেন ৫৮ রানে, তবে এলবিডব্লিউর রিভিউটা নেয়নি শ্রীলঙ্কা। জেনিংস সবচেয়ে ভাল সামলেছেন স্টাম্প করে করা বল। আর রান করতে প্রয়োজনে সাহায্য নিয়েছেন রিভার্স সুইপেরও। প্রথম ইনিংসে শুরুটা ভাল করেও ফিফটি করা হয়নি, এবার মেটালেন সে আক্ষেপ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৪৬ রানে, ২৮০ বলে, মেরেছেন ৯টি চার। 

    প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কা পেয়েছিল তিন উইকেট, শুরুটা ভালই হয়েছিল তাই। সিঙ্গেল চুরি করতে সম্ভাবনাময় ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটেছে ররি বার্নসের, বোলিংয়ে দারুণ সময় কাটানো মইন আলি ব্যাটিংয়ে কাটিয়েছেন অল্পের মধ্যে অনেক বাজে সময়- এখন পর্যন্ত এই টেস্টে শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার দিলরুয়ান পেরেরাকে এগেইন্সট দ্য টার্নে তুলে মারতে গিয়ে মিড-অনে দিয়েছেন ক্যাচ। আর রঙ্গনা হেরাথের টার্ন করা বলে খোঁচা মেরেছেন রুট, ক্যাচটা দারুণভাবে নিয়েছেন নিরোশান ডিকওয়েলা। শ্রীলঙ্কার আপাত ভাল সময়ের শেষটাও হয়ে গেছে মোটামুটি ওখানেই।

    স্টোকস ছিলেন আক্রমণাত্মক, ৯৩ বলে তিনি করেছেন ৬২, তিনটি ছয়সহ। জেনিংসের সঙ্গে তার জুটিতে এসেছে ১০৭ রান। পেরেরার বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। বাটলার অবশ্য ছিলেন একটু ধীরগতির, জেনিংসের  সঙ্গে তার জুটি ৭৭ রানের। বাটলার হয়ে থেকেছেন হেরাথের ক্যারিয়ারের শেষ উইকেট, আগবাড়িয়ে খেলতে গিয়ে সিলি পয়েন্টে পরিণত হয়েছেন কৌশল সিলভার দারুন ক্যাচে। এরপর পালা ফোকসের। আকিলা দনঞ্জয়াকে এক ওভারে দুই ছয়সহ ৩৪ বলে ৩৭ রানের ক্যামিও খেলেছেন, তার বলেই ক্যাচ দেওয়ার আগে। রুট অবশ্য স্যাম কারান নামা পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন, খানিক বাদেই করেছেন ইনিংস ঘোষণা। 

    ৭ ওভারে শ্রীলঙ্কা উইকেট হারায়নি, দুই ওপেনার তুলেছেন ১৫ রান। এখনও প্রয়োজন ৪৪৭ রান। বাকি দুই দিন। অন্য কথায়- সামনে রানের হিসেবে মহাসাগর, আর সময়ের হিসেবে মহাকাল!