• ইংল্যান্ডের শ্রীলঙ্কা সফর ২০১৮
  • " />

     

    রুট আর 'সুইপ' রোমাঞ্চের দিনে শ্রীলঙ্কার অস্বস্তি

    রুট আর 'সুইপ' রোমাঞ্চের দিনে শ্রীলঙ্কার অস্বস্তি    

    দ্বিতীয় টেস্ট, পাল্লেকেলে 
    ইংল্যান্ড ২৮৫ (কারান ৬৪, বাটলার ৬৩, পেরেরা ৪/৬১, পুস্পকুমারা ৩/৮৯) ও ২য় ইনিংস* ৩২৪/৯ (রুট ১২৪, বার্নস ৫৯, ফোকস ৫১*, দনঞ্জয়া ৬/১০৬) 
    শ্রীলঙ্কা ৩৩৬ (রোশেন ৮৫, করুনারত্নে ৬৩, ধনঞ্জয়া ৫৯, লিচ ৩/৭০, রশিদ ৩/৭৫)
    ইংল্যান্ড ২য় ইনিংসে ২৭৮ রানে এগিয়ে


    ৮৪.৯৩ স্ট্রাইক রেটের সেঞ্চুরি- দেখার মতো কিছু তো বটেই। আর যখন জো রুট এটা করবেন শ্রীলঙ্কার ঘূর্ণি উইকেটে, ব্যাপারটা হয়ে উঠবে আরও দারুণ। রুটের সেঞ্চুরির সঙ্গে দুই সারে ব্যাটসম্যান ররি বার্নস ও বেন ফোকসের ফিফটিতে দিনশেষে ২৭৮ রানে এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড, অবিচ্ছিন্ন আছে শেষ জুটি। পাল্লেকেলেতে শেষদিন অপেক্ষা করছে ক্ল্যাসিক এশিয়ান টেস্টের আরেক অধ্যায়। 

    রুটের সেঞ্চুরির দিনে ক্যারিয়ারসেরা ফিগার গড়েছেন শ্রীলঙ্কান স্পিনার আকিলা দনঞ্জয়া। সঙ্গে আলোচনায় ছিল সুইপ- ইংল্যান্ডের শীর্ষ সাত ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন চিরায়ত বা রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। এ তথ্যে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের অসহায়ত্বই ফুটে উঠতে পারে, তবে তারা বেশিরভাগ বাউন্ডারি মেরেছেন ওই সুইপেই, রানও অনেকাংশ এসেছে সেটাতেই। যেন ইংল্যান্ড মেনেই নিয়েছে, সুইপ রান যেমন আনবে, তেমন বাড়বে আউটের সম্ভাবনাও! সুইপে রানের গান, সুইপেই যায় প্রাণ! শ্রীলঙ্কান স্পিনাররা অবশ্য মাঝে মাঝেই ফুললেংথে স্টাম্প থেকে সরে বল করেছেন- ইংলিশদের সুইপের তাড়না যা বাড়িয়েছে আরও। 

    সুইপের প্রথম শিকার ছিলেন নাইটওয়াচম্যান ওপেনার জ্যাক লিচ। কিটন জেনিংস ও জস বাটলার রিভার্স করতে গিয়েছিলেন, প্রথমজন গ্লাভসে লেগে স্লিপে ক্যাচ বনেছেন, পরেরজন বল ডেকে এনেছেন স্টাম্পে। এই দুজন ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন ভাল, তবে আক্রমণাত্মক মানসিকতা কাল হয়েছে তাদের। বেন স্টোকস দ্বিতীয় বলেই হয়েছেন এলবিডব্লিউ। লাঞ্চের আগে ৪ উইকেট হারিয়েছে ইংল্যান্ড, লিড তখনও মাত্র ৮৫। সঙ্গে আবার বার্নস ও স্টোকস দুজনই অপচয় করেছেন রিভিউ, যেটা পরে ভুগিয়েছে মইন আলি ও রশিদ খানকে- রিভিউ থাকলে দুজনই বেঁচে যেতেন। 

    এসব অবশ্য বিচ্যুত করতে পারেনি রুটকে। সুইপে তিনিও ছিলেন অসাধারণ, সঙ্গে ড্রাইভেও। সব চারই মেরেছেন এইভাবে। সঙ্গে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মেরেছেন ছয়ও। ৬৬ বলে ফিফটি পূরণ করেছেন, ১২০ বলে করেছেন সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি হলেও দেশের বাইরে ইংল্যান্ড অধিনায়কের এটি মাত্র ৪র্থ সেঞ্চুরি। শেষ তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি করলেন তিনি, ফিফটি-সেঞ্চুরির রুপান্তরে তার ধীরগতির সমালোচনারও জবাব যেন দিলেন আরেকবার। 

    দনঞ্জয়ার আরেকটি শিকার, সুইপের আরেকজন শিকার হওয়ার আগে রুট করেছেন ১৪৬ বলে ১২৪, ১০ চারের সঙ্গে আছে দুইটি ছয়। ইংল্যান্ডের লিড ততক্ষণে ছাড়িয়েছে ২৫০। স্যাম কারান শেষবেলার আতশবাজি ধরনের কিছু করতে পারেননি, প্রথম বলেই দনঞ্জয়ার বলে হয়েছেন বোল্ড। রশিদও খানিক বাদে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। 

    তবে বৃষ্টির কারণে খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত ছিলেন ফোকস, অ্যান্ডারসনকে নিয়ে ৫১ রানে অপরাজিত। তার আগে সকালে বার্নস করেছেন দারুণ এক ফিফটি, সুইপের শিকার হওয়ার আগে এ শট খেলেছেন দারুণভাবে। ৬৬ বলে করেছেন ৫৯- ইংলিশ ওপেনারের দীর্ঘ এক খরা কাটানোর ইঙ্গিতই দিচ্ছেন তিনি।  

    আর পাল্লেকেলে ইঙ্গিত দিচ্ছে আরেকটি রোমাঞ্চকর দিনের। সেখানে রুট, দনঞ্জয়া, সুইপ, বার্নস, ফোকসের চরিত্রগুলো নেবে শুধু ভিন্ন রুপ।