• ইংল্যান্ডের শ্রীলঙ্কা সফর ২০১৮
  • " />

     

    ইংল্যান্ডের দরকার ৩ উইকেট, শ্রীলঙ্কার ৭৫ রান

    ইংল্যান্ডের দরকার ৩ উইকেট, শ্রীলঙ্কার ৭৫ রান    

    দ্বিতীয় টেস্ট, পাল্লেকেলে 
    ইংল্যান্ড ২৮৫ (কারান ৬৪, বাটলার ৬৩, পেরেরা ৪/৬১, পুস্পকুমারা ৩/৮৯) ও ২য় ইনিংস ৩৪৬ (রুট ১২৪, বার্নস ৫৯, ফোকস ৬৫*, দনঞ্জয়া ৬/১১৫) 
    শ্রীলঙ্কা ৩৩৬ (রোশেন ৮৫, করুনারত্নে ৬৩, ধনঞ্জয়া ৫৯, লিচ ৩/৭০, রশিদ ৩/৭৫) ও ২য় ইনিংস* ২২৬/৭ (ম্যাথিউস ৮৮, করুনারত্নে ৫৭, লিচ ৪/৭৩) 
    শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেটে ৭৫ রান প্রয়োজন 


    চা-বিরতির সময় শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ৮২ রান, ৫ উইকেটে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস অপরাজিত ৮৮ রানে, তবে ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে পারতো দুই-একটি উইকেট। তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউ ম্যাথিউস, ঘাতক মইন। এক ওভার বাদে জ্যাক লিচ আঘাত করলেন, এবার ফিরলেন দিলরুয়ান পেরেরা। শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৭৫ রান, বাকি ৩ উইকেট। লড়াইয়ে ফিরল ইংল্যান্ড। তবে পাল্লেকেলেতে পদে পদে বাড়তে থাকা রোমাঞ্চে বাগড়া বাধাল বৃষ্টি। চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হয়েছে আগেভাগেই, সব রোমাঞ্চ গিয়ে ঠেকেছে শেষদিনের অপেক্ষায়। 

    প্রথম দুই সেশনে কয়েকধাপে অদলবদল হয়েছে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। সকালে আগেরদিনের স্কোরের সঙ্গে ২২ রান যোগ করেছিল ফোকস-অ্যান্ডারসনের শেষ উইকেট জুটি, পেরেরার বলে অ্যান্ডারসন বোল্ড হওয়ার আগে। এরপর যা হলো, তাকে এক কথায় শুধু রোমাঞ্চই বলা যায়! 

    টানা তিন ওভারে জ্যাক লিচ ফিরিয়েছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, কুশাল মেন্ডিস ও কৌশল সিলভাকে। ২৬ রানে শ্রীলঙ্কা পরিণত হয়েছিল ৩ উইকেটে। শ্রীলঙ্কা আহত ছিল, তবে নিহত নয়। দিমুথ করুনারত্নে ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস যোগান দিলেন লড়াইয়ের রসদ। লাঞ্চের আগে দুজনের জুটিতে এলো ৬৭ রান, তার আগেই ফিফটি হয়ে গেছে করুনারত্নের। এমনকি ম্যাথিউসের চেয়েও বেশি দৃঢ় দেখাচ্ছিল তাকে। 

    সেই করুনারত্নেকে ফিরতে হলো ফিল্ডিং-ম্যাজিকে। আরেকবার ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দিল ফিল্ডিং। রশিদের বলে সুইপটা শুধু ঠিকঠাক না, করুনারত্নে বাউন্ডারির আশাই করেছিলেন বোধহয়। তবে তিনি আউট হলেন কিপারের হাতে ধরা পড়ে! করুনারত্নের সুইপের ভঙ্গি আগেই বুঝেছিলেন শর্ট লেগে দাঁড়ানো কিটন জেনিংস, সে অনুযায়ী সরে গিয়েই থামিয়ে দিয়েছেন বল। তবে থামালেও ধরতে পারেননি, ওদিকে সতর্ক ছিলেন ফোকস, যিনিই শেষ পর্যন্ত নিয়েছেন ক্যাচটা। ৭৭ রানের জুটি শেষ, করুনারত্নে ফিরলেন ৫৭ রানে। 

    ম্যাথিউস অবশ্য দমলেন না তাতে। রোশেন সিলভাকে পেলেন যোগ্য সহচর হিসেবে। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও রোশেন ছিলেন উইকেট সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল, খেলেছেনও সেভাবেই। ম্যাথিউসের সঙ্গে তার জুটি ৭৩ রানের, মইনের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ইনসাইড-এজের পর ব্যাট-প্যাডে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ। উইকেটটা অবশ্য ইংল্যান্ড পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। 

    রিভিউ নিলে রোশেন আউট হতে পারতেন আরও ৪ রান আগেই। মইনের বলে এলবিডব্লিউ হতে পারতেন, তবে খানি আগেই তার বিরুদ্ধে নেওয়া রিভিউটা ব্যর্থ হওয়ায় আর সে পথে এগোয়নি ইংল্যান্ড। রোশেনকে আউট করেও অবশ্য স্বস্তিতে থাকার উপায় ছিল না তাদের। উলটো নিরোশান ডিকওয়েলা এসে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলেন ইংলিশদের। চা-বিরতির আগে ২৩ বলে তিনি করেছিলেন ২৩ রান, তিন বাউন্ডারিতে। 

    আর এতকিছুর মাঝে একদিকে ম্যাথিউস ছিলেন ম্যাথিউস হয়েই। ২৬ রানে ৩ উইকেটের চাপের মাঝে নেমে যে ইনিংস খেললেন, সেটা মনে করিয়ে দিল পুরোনো ম্যাথিউসকেই। ক্রমাগত রান বের করে গেছেন, সিঙ্গেল নিয়েছেন ৫৭টি। সঙ্গে ৭টি চার, শর্ট-ওয়াইড বলগুলোকে নিস্তার দেননি। করুনারত্নে, রোশেন, ডিকওয়েলার পরও ইংল্যান্ডের প্রধান হুমকি হয়ে ছিলেন তিনিই। সেই হুমকিকে ফিরিয়ে শুধু লড়াইয়ে ফেরা নয়, কিছুটা এগিয়েই গিয়েছিল ইংল্যান্ড। 

    শ্রীলঙ্কার টেইল হয়তো সে অর্থে ভয়ঙ্কর নয়, তবে প্রথম ইনিংসে শেষ তিন উইকেটে তারা তুলেছিল ১২৫ রান। সঙ্গে আছেন ডিকওয়েলা। পাল্লেকেলের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য চতুর্থ দিনেও ছিল অবশ্য কঠিন, স্পিনাররা লেংথ বলে পেয়েছেন বাউন্স। ইংল্যান্ডের কাজ তবুও শেষ হয়নি। শেষের আঘাত পাওয়ার পরও শেষ হয়নি শ্রীলঙ্কার সিরিজে টিকে থাকার আশা!